সৈকত শহর কক্সবাজারে জাতিসংঘ শিল্প উন্নয়ন সংস্থা (ইউনিডো) ও পরিবেশ অধিদপ্তরের যৌথ উদ্যোগে পরিবেশ বিষয়ক একটি সেমিনার এবং সমুদ্রসৈকত পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) ইউনিডোর কান্ট্রি রিপ্রেজেনটেটিভ ড. জাকি উজ জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ পরিবেশ বিষয়ক সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন ইউনিডোর হেড অফিস অস্ট্রিয়ার ভিয়েনা থেকে আসা সংস্থাটির ইউনিট চিফ, সার্কুলার ইকোনমি অ্যান্ড রিসোর্স এফিসিয়েন্সি জেরোম স্টাকি।
প্রধান অতিথি ছিলেন কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. সালাহ্ উদ্দিন, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. কামরুজ্জামান এবং কক্সবাজারের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ইকো-ক্লাবগুলোর প্রতিনিধিরা, পরিবেশ কর্মী, শিক্ষক এবং বিডি-ক্লিন কক্সবাজারের প্রতিনিধি।
১৫টি স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার ২৩০ জনের অধিক স্বেচ্ছাসেবক ছাত্র-ছাত্রীরা সেমিনারে অংশগ্রহণ করেন এবং সমুদ্রসৈকত এলাকা থেকে ৫৫৪ কেজি অপচনশীল প্লাস্টিক বর্জ্য সামগ্রী সংগ্রহ করেন।
সফররত ইউনিট চিফ, সার্কুলার ইকোনমি অ্যান্ড রিসোর্স এফিসিয়েন্সি জেরোম স্টাকি ছাত্র-ছাত্রীদের এ উদ্যোগের প্রশংসা করে বলেন, বাংলাদেশের তরুণদের কাছ থেকে বিশ্বের অনেক কিছু শেখার আছে।
পরিবেশ অধিদপ্তরের জাতীয় প্রকল্প পরিচালক ড. আব্দুল্লাহ আল মামুন এ অভিমত দেন যে, বর্জ্য সামগ্রীও সার্কুলার অর্থনীতিতে মূল্যবান সম্পদ হতে পারে, যাতে টেকসই প্লাস্টিক ব্যবহার নিশ্চিত হবে।
সপ্তম শ্রেণীর ছাত্রী ওয়ারা করিম তার ভাষণে তরুণ সমাজের মধ্যে পরিবেশ সচেতনতা বাড়ছে বলে অভিমত দিয়ে বলেন, কক্সবাজারের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ইকো-ক্লাবের সংখ্যা ও তৎপরতা বৃদ্ধি তারই প্রমাণ।
মো. সোলায়মান পানিদূষণের বিরুদ্ধে ব্যাপক সচেতনতা বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন। বিশেষ অতিথি মো. সালাহ্ উদ্দিন তরুণ সমাজের স্বেচ্ছাশ্রমের ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, আজকের কিশোর-তরুণরা পরিবেশ সুরক্ষায় তাদের সুদৃঢ় অঙ্গীকারের কথা ইতোমধ্যেই প্রমাণ করেছে। নিরাপদ বর্জ্য পদার্থ নিয়ে একটি সার্কুলার ইকোনমি গড়ে উঠলে তাতে আমাদের সুস্থ ভবিষ্যৎ সুনিশ্চিত হবে।
ড. মো. কামরুজ্জামান প্লাস্টিক দূষণের ভয়াবহতার কথা তুলে ধরে বলেন, প্লাস্টিকের কারণে আমাদের দেহ নানা বিষক্রিয়ার শিকারে পরিণত হচ্ছে। এমনকি মাতৃদুগ্ধেও এ বিষক্রিয়ার উপস্থিতি দেখা যাচ্ছে। আমাদের পরিবেশ সুরক্ষার তৎপরতা নিজ গৃহ ও নিজ এলাকা থেকেই শুরু করতে হবে।
ইউনিডো, নেপাল থেকে আগত ড. রানা প্রতাপ সিং বাংলাদেশের নব প্রজন্মের তরুণদের উদ্ভাবনী মেধা, বিশেষ করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মতো ক্ষেত্রে তাদের অভিনব অর্জনের প্রশংসা করেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতির ভাষণে ইউনিডোর ড. জাকি উজ্জামান বাংলাদেশে প্লাস্টিক রিসাইকেল শিল্পের বিশাল সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করে বলেন, সঠিকভাবে বিকাশ ঘটাতে পারলে প্লাস্টিক বর্জ্য থেকেও ২.৫% পর্যন্ত জিডিপি বৃদ্ধি নিশ্চিত করা সম্ভব।
ধন্যবাদ জ্ঞাপন পর্বে কক্সবাজার পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক জমির উদ্দিন তরুণ প্রজন্মের ছাত্র-ছাত্রীদের উদ্যোগে উচ্চ প্রশংসা করে বলেন, তোমরাই আমাদের অনুপ্রেরণা।
মন্তব্য করুন