ক্যাডার বৈষম্য নিয়ে ফেসবুকে প্রতিবাদ করাই কাল হলো শুল্ক কর্মকর্তা একে এম মাহবুবুর রহমানের। মূলত ন্যাশনাল ডিফেন্স কোর্স (এনডিসি) কোর্সের অন্তর্ভুক্তি নিয়ে শুরু হয়েছে এই জটিলতা। সিভিল প্রশাসনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ কোর্স এনডিসি কোর্সে গোপালগঞ্জের সাবেক জেলা প্রশাসকের প্রশাসন ক্যাডারের ২১ ব্যাচের এক কর্মকর্তার বিষয়ে প্রতিবাদ জানান। আর এর জন্য সাময়িক বরখাস্ত হয়ে চরম মূল্য দিতে হচ্ছে একই ব্যাচের শুল্ক ক্যাডারের কর্মকর্তা মাহবুবকে। প্রথমে তাকে ওএসডি করা হয়।
সোমবার (০৩ ফেব্রুয়ারি) তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, গত ২৬ ডিসেম্বর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ প্রশিক্ষণ-১ শাখা থেকে ০৫.০০.০০০০.২০০.২৫.০০৪.২৪.২২১ স্মারকের মাধ্যমে ন্যাশনাল ডিফেন্স কোর্সের জন্য মনোনয়ন পান ১১ জন কর্মকর্তা। এই তালিকার নয় নম্বরে ছিল কাস্টম হাউস মোংলার কমিশনার একেএম মাহবুবুর রহমানের নাম। গত ১২ জানুয়ারি শুরু হওয়া বছর মেয়াদি এই কোর্সের জন্য তাকে ওএসডিও করা হয়। আচমকা একই স্মারকের আরেকটি প্রজ্ঞাপনে বাদ পড়ে তার নাম। যদিও অভিযোগ রয়েছে, ৮ জানুয়ারি গোপালগঞ্জের সাবেক এক জেলা প্রশাসক এবং পরবর্তীতে পতিত সরকারের প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের মহাপরিচালক ২১ ব্যাচের প্রশাসন ক্যাডারের এই কর্মকর্তাসহ ৫ জন এই কোর্সের জন্য মনোনীত হয়েছেন।
আর ৯ জানুয়ারি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন নিয়োগ-১ শাখা থেকে বগুড়ার স্থায়ী বাসিন্দা কাস্টম কমিশনার একেএম মাহবুবুর রহমানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জামিলা শবনম স্বাক্ষরিত একটি চিঠি ইস্যু করা হয়। এই চিঠিতে মাহবুবুর রহমানের ক্যাডার বৈষম্য নিয়ে ফেসবুকে করা প্রতিবাদ এবং সচিবালয়ের আগুন নিয়ে করা ফেসবুক মন্তব্যের কপি সংযুক্ত করা হয়েছে। একইসঙ্গে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া কথা বলেছে। সর্বশেষ সোমবার তার বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগে সরকারি চাকরি বিধিমালা, ২০১৮ এর বিধি ৩ (খ) অনুযায়ী বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। আর তাকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মোংলা কাস্টম হাউসের সাবেক কমিশনার একেএম মাহবুবুর রহমান কোনো কথা বলতে রাজি হননি। তবে শুল্ক কর্মকর্তারা বলছেন, শুধু ফেসবুকে স্ট্যাটাসের জন্য উচ্চ পর্যায়ের একজন কর্মকর্তাকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে শুনে অবাক। ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই প্রজ্ঞাপনের কপি শেয়ার করে অনেকে মন্তব্য করছেন। ফেসবুকে ক্যাডার বৈষম্য নিয়ে কথা বলার কারণে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করারও সমালোচনা করেন তারা।
মন্তব্য করুন