সুচিকিৎসা, পুনর্বাসন, ক্ষতিপূরণের দাবিতে রাজধানীর জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের সামনের সড়ক অবরোধ করেছেন জুলাই ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানে আহতরা। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।
শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) রাত ১০টা ৩০ মিনিটে এ সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন আহতরা। এতে আগারগাঁও থেকে শিশু মেলা লিংক রোডে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন আগারগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম আজম। তিনি কালবেলাকে বলেন, সুচিকিৎসা, পুনর্বাসন ও ক্ষতিপূরণের দাবিতে রাত সাড়ে ১০টায় জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের সামনে আহতরা সড়ক অবরোধ করে।
বিক্ষোভকারীরা বলেন, সিঙ্গাপুর থেকে যে চিকিৎসক দল এসেছেন, তারা অল্প সময়ে অনেক রোগী দেখেছেন। এতে সঠিকভাবে চোখ পরীক্ষা করা হয়নি। এটা অনেকটা লোক দেখানো। আমরা যারা বিক্ষোভ করছি আমাদের অনেকের এক চোখ কিংবা দুই চোখে আঘাত লেগেছে। আমরা অনেকে সুচিকিৎসা পাইনি। সুচিকিৎসার দাবিতে আমাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন।
গত ৫ আগস্ট কুষ্টিয়ায় চোখে গুলিবিদ্ধ হন কোরবান শেখ। তিনি আগারগাঁওয়ের জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন। শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) রাতের বিক্ষোভে তিনিও নেমে এসেছেন। অভিযোগ করে তিনি বলেন, আহতদের পুনর্বাসনে সরকার গুরুত্ব দিচ্ছে না। আহত সবাই এখনো আর্থিক সহায়তা পাননি। যাদের প্রয়োজন, তাদেরকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠাতে হবে। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাব।
এর আগে শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীনরা প্রতিষ্ঠানটির আঙ্গিনায় অবস্থান নিয়ে উন্নত চিকিৎসকায় ইতালি যাওয়ার দাবি জানান। এসময় তারা এই দাবিতে থেকে থেকে স্লোগান দিতে থাকে। শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) সকালে ওই হাসপাতালে আহত রোগীদের চিকিৎসা শুরু করেন সিঙ্গাপুরের পাঁচ সদস্যের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দল। ওই চিকিৎসকরা ১৩০ জন আহত রোগীকে বর্তমান পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেন।
বিদেশি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা জানান, এই রোগীদের চোখের আলো আর কখনো ফিরে পাবে না। তবে দেশে তাদের যথাযথ চিকিৎসা হয়েছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশ যাওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই। এই খবর শুনে শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) বিকেল থেকে জড়ো হতে থাকেন ওইসব রোগীরা। এরপর সন্ধ্যায় ইতালি যাওয়ার দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন।
পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ইতালিতে চোখের উন্নত চিকিৎসা হয় এম কোন তথ্য আমার জানা নেই। সরকারের অর্জন ম্লান করতে তারা এ ধরনের কার্যক্রম নিয়েছে। অথচ তাদের সর্বোচ্চ চিকিৎসায় সরকার সব চেষ্টা করেছে।
মন্তব্য করুন