শীত যেন তার চিরচেনা চরিত্র হারিয়েছে। চলতি বছরে শীত তার নিজের বৈশিষ্ট্য প্রকৃতির মাঝে তুলে ধরার আগে বিদায় নিচ্ছে। কথায় আছে, মাঘের শীতে নাকি বাঘও কাঁপে। কিছু এ মাঘে শীতের অনুভূতিও পেল না ঢাকাবাসী।
ঢাকার বাইরে বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের মানুষই টের পাচ্ছে এ শীত। তবে এসব অঞ্চলের শীতের কারণ শৈত্যপ্রবাহ নয়। আবহাওয়াবিদরা এ শীতের কারণ হিসেবে দেখছে কুয়াশাকে। কুয়াশার কারণেই বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে শীতের তীব্রতা বেশি অনুভূত হয়। বিবিসির এক প্রতিবেদনে শৈত্যপ্রবাহ কমে যাওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করা হয়েছে।
শীত বেশি অনুভূত হওয়ার অন্যতম কারণ দিন ও রাতের তাপমাত্রার পার্থক্য কমে যাওয়া। এ বিষয়ে আবহাওয়াবিদ বজলুর রশিদ বলেন,
গত কয়েক বছর ধরে দেখা যাচ্ছে, রাতের তাপমাত্রা কমতে পারছে না। গতবারও ঘনকুয়াশার কারণে দুই সপ্তাহের মতো দিনের তাপমাত্রা কমে গেছে।
শৈত্যপ্রবাহ কমে গেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন,
চলতি বছরের এ সময়ে ওপর থেকে যে হিমেল হাওয়া নিচে নেমে আসার কথা। তার জন্য পশ্চিমা লঘুচাপ থাকতে হয়। পশ্চিমা লঘুচাপ তৈরি হয় ভূমধ্যসাগরে। ওখান থেকে কাশ্মীর হয়ে দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। কিন্তু ওদিক থেকে এবার বাতাস ঢুকতে পারেনি।
শৈত্যপ্রবাহ কম হওয়ার আরেকটি কারণ, বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপের বিচরণ।
আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুক বলেন,
এবার ডিসেম্বরের পুরোটা সময়জুড়েই দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপের বিচরণ ছিল। দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপ থাকার কারণে এই পুরো অঞ্চলটায় তাপ বেশি ছিল। সে কারণে শীতের মাত্রা জোরালোভাবে আসতে পারেনি।
শৈত্যপ্রবাহ কমে যাওয়ার পেছনে জলবায়ুর ভূমিকা কতটুকু? জানতে চাইলে ওমর ফারুক বলেন,
কোনোকিছু দীর্ঘমেয়াদে হলে জলবায়ু পরিবর্তন বলা যায়। এক দুই বছরের পরিবর্তন জলবায়ু পরিবর্তন না। আমাদের আরও অপেক্ষা করতে হবে।
চলতি বছর ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মিলিয়ে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ ৩টি শৈত্যপ্রবাহ দেখেছে। যার সবকটি ছিল মৃদু ও মাঝারি মাত্রার শৈত্যপ্রবাহ এবং তার প্রভাব পড়েছে শুধু উত্তর-পূর্বাঞ্চলে।
মন্তব্য করুন