বাসস
প্রকাশ : ২৩ জানুয়ারি ২০২৫, ০৩:২৪ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে চোখ হারান সোহান, অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ

মো. সোহান। ছবি : বাসস
মো. সোহান। ছবি : বাসস

গত ১৯ জুলাই ছাত্র-জনতার আন্দোলনে মাদারীপুর শহর ছিল উত্তাল। প্রতিবাদমুখর ছাত্র-জনতা শহরের পুরান বাজারের করাচিবিড়ি রোডে মিছিল নিয়ে যায়। সেই মিছিলে অংশ নেয় সোহান। মিছিল ছত্রভঙ্গ করতে ছাত্রলীগ বোমা-হামলা ও পুলিশ রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। এতে ছত্রভঙ্গ হয়ে যায় মিছিল। বোমার স্প্লিন্টার ও রাবার বুলেটে আহত হন মো. সোহান (২১)।

তার বাম চোখে অন্ধকার নেমে আসে। বুলেট মুখে পিঠে লেগে ক্ষত হয়ে যায় শরীর। শরীরে বুলেটের ক্ষত নিয়ে পালিয়ে বেড়ায় এখান থেকে ওখানে। আতঙ্কিত হয়ে ওঠে কে দেখে ফেলে আবার কেউবা পুলিশ কিংবা ছাত্রলীগকে খবর দেয়। গ্রেপ্তারের ভয়ে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে না গিয়ে সোহান লুকিয়ে বাড়িতে চিকিৎসা নেন।

সোহানের বাবা সবজি বিক্রেতা শাজাহান বেপারি (৫৫)। ভয়ে কাউকে কিছু বলতে পারেননি। কারণ পুলিশ বিভিন্ন বাড়িতে সার্চ করে যারা আন্দোলনে গিয়েছিল তাদের ধরে নিয়ে যাচ্ছিল।

সোহান তিন বোন ও দুই ভাইয়ের মধ্যে সবার ছোট। সামান্য বেতনে একটি প্যাথলজি সেন্টারে কাজ করতেন সোহান। মা হালিমা খাতুন (৫০) গৃহিণী। গরিব পরিবার। ভাইবোনদের বিয়ে হয়েছে। আলাদা সংসার। মাদারীপুর পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের নতুন মাদারীপুর এলাকায় বসবাস করেন তারা। আদরের ধন সোহানের এক চোখ ক্ষত হওয়ায় তার জীবনে অন্ধকার নেমে এসেছে। তাই উদ্বিগ্ন সোহানের পরিবার।

সোহানের বাবা শাজাহান বেপারি বলেন, চোখে গুলি লাগার পর সোহানকে লুকিয়ে বাড়িতে চিকিৎসা করাই। ৫ আগস্টের পর মাদারীপুর সদর হাসপাতালে গেলে ডাক্তাররা ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে পাঠায়। সোহানকে নিয়ে ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসার জন্য গেলে তারা সোহানকে জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে নিতে বলেন। তারপর থেকে সেখানেই তার চিকিৎসা চলছে।

সোহানের বাম চোখ পুরো নষ্ট হয়ে গেছে। সেখানকার চিকিৎসকরা সোহানকে দুই মাস পর আবার যেতে বলেছে। তারা সোহানের চোখে অপারেশন করে আর্টিফিশিয়াল চোখ প্রতিস্থাপন করবেন বলে জানিয়েছেন। সে আশায় সোহান দিন গুনছেন।

আহত সোহান বলেন, আমরা এখন অসহায় হয়ে পড়েছি। বাম চোখে কখন দেখতে পাবো জানি না। তাছাড়া শুনেছি জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট থেকে নাকি আমাদের আহতদের তালিকা সরকারের কাছে গেছে। দেখি কি সাহায্য সহযোগিতা করে? এখন পর্যন্ত আমি কোনো সরকারি সাহায্য পাইনি। আব্দুল মান্নান ফাউন্ডেশন থেকে সামান্য আর্থিক সহযোগিতা পেয়েছি।

মাদারীপুর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য শিবলী মাহমুদ বলেন, আমরা চেষ্টা করেছি আন্দোলনে যারা আহত হয়েছেন তাদের সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে। সরকারি সহায়তার পাশাপাশি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে আহতদের পাশে থাকার অঙ্গীকার করেন তিনি।

মাদারীপুর জেলা প্রশাসক মোসা. ইয়াসমিন আক্তার বলেন, আহত এবং নিহতদের তালিকা করে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। এদের জন্য সরকারি সহযোগিতার চেষ্টা করে যাচ্ছি।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

জিয়াউলের দেশ-বিদেশে শত কোটির সম্পদ, আছে ভিনদেশের নাগরিকত্ব

কর্মশালায় উদ্বেগ / প্রতি বছর ৪ শতাংশ হারে বাড়ছে ভূমিধস

টাকা দিলে নেন না ভিক্ষা, চান ডলার-পাউন্ড

পরীক্ষা না দিয়েও উত্তীর্ণ ছাত্রলীগ নেত্রী!

যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধ ভারতীয়দের দেশে ফেরানো নিয়ে মুখ খুললেন জয়শঙ্কর

রিজার্ভ নামল ২০ বিলিয়ন ডলারের নিচে

কারাগারে বিনামূল্যে চক্ষু ক্যাম্প অনুষ্ঠিত

কালবেলায় সংবাদ প্রকাশের পর যুবদল নেতা বহিষ্কার

২৪ জানুয়ারিকে স্মরণ করলেন তারেক রহমান

হাইমচরে বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি গঠন

১০

কেয়া কসমেটিকস লিমিটেড বন্ধ হচ্ছে

১১

পাঁচতলা বাড়ির মালিক ওয়াসার সাবেক গাড়ি চালকের স্ত্রী

১২

দ্রুত ছাত্র সংসদ নির্বাচনের আহ্বান ছাত্রশিবির সেক্রেটারির

১৩

বিএনপি কর্মীর দুই চোখ উপড়ে ফেলার চেষ্টা

১৪

ব্যস্ত সড়কে ইসলামিক স্মৃতিস্তম্ভ, নজর কাড়ছে সবার

১৫

মাছ ধরতে গিয়ে পাওয়া গেল চায়না রাইফেল

১৬

মামলা করলেন সারজিস

১৭

আইসিসিবিতে দেশের সর্ববৃহৎ বাণিজ্যিক এক্সপো ভিলেজের যাত্রা শুরু

১৮

সালমান এফ রহমানের ২৫০ কোটি টাকার সম্পত্তি ক্রোক

১৯

সৌদিতে বজ্র-বৃষ্টির পূর্বাভাস, নাগরিকদের সতর্কবার্তা

২০
X