রাজধানীর বাংলামোটরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কার্যালয় অভিমুখে মিছিলের ঘোষণা দিয়েছেন মারামারির ঘটনায় আহতদের পক্ষের শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল প্রাঙ্গণ থেকে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে এ ঘোষণা দেন তারা।
ব্রিফিংয়ে ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস এগ্রিকালচার অ্যান্ড টেকনোলজির শিক্ষার্থী তানজিম মো. সোহরাব রেজা বলেন, মেরে-ধরে চুপ করিয়ে দেওয়ার যে রাজনৈতিক চর্চা, সেটি ফ্যাসিবাদ গড়ে তুলতে সহায়ক। এর বিরুদ্ধে দাঁড়ানোটাই জুলাই বিপ্লবের স্পিরিট। জুলাইয়ে যখন আমরা দলীয়, ধর্মীয় পরিচয় ফেলে রাজপথে নেমেছিলাম, তখন আমাদের মনে আশার সঞ্চার হয়েছিল। আমরা মনে করেছিলাম, জুলাইয়ের পর অন্তত ছাত্র সংগঠনগুলো পারস্পরিক সহাবস্থান বজায় রেখে দেশের অগ্রগতিতে চেষ্টা করে যাবে। একই সঙ্গে চেষ্টা করবে, ছাত্রলীগের মতো কোনো সন্ত্রাসী সংগঠনের হাতে যেন জিম্মি হয়ে না পড়ে। অথচ জুলাইয়ে নেতৃত্ব দেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কার্যক্রম দেখে মনে হয়, তারা ছাত্রলীগ হতে চায় এবং সে পথেই এগোচ্ছে।
তিনি বলেন, গতকাল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উদ্যোগে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় অংশগ্রহণ করে ফেরার পথে গণপরিবহনের গতি রোধ করে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করা হয়। ঘটনার পরে আমরা জানতে পারি, এ হামলার পেছনে ছিল আশিকুর রহমান হৃদয় নামের একজন। ইতোমধ্যে তার বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নাম ভাঙিয়ে নানা অপকর্ম করার অভিযোগ এসেছে। কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক রিফাত রশিদ, আসাদ বিন রনি ও জাহিদদের সামনে হামলার এ ঘটনা ঘটে। চিহ্নিত হামলাকারীদের বিরুদ্ধে যথাযথ সাংগঠনিক ব্যবস্থার আশায় আজ দুপুরে আমরা অফিসে গিয়েছিলাম।
তানজিম মো. সোহরাব রেজা বলেন, হামলায় জড়িতদের বহিষ্কৃত না করলে আমরা ধরে নেব বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনও ক্ষমতার কাছাকাছি গিয়ে ছাত্রলীগের পদাঙ্ক অনুসরণ করছে। দিনে দিনে তারই রূপ ধারণ করছে। আজ যখন হামলা হয়, তখন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের জুলাইয়ের যোদ্ধা ইমরান বলে, ভাই আমার মাথায় বুলেট আছে, মাথায় আঘাত করবেন না। এরপর তার মাথা দেয়ালের সাথে ধাক্কা দেওয়া হয়। এই হলো তাদের মুখে মুখে জুলাইয়ের স্পিরিট। আর এই হলো শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তাদের আচরণ। রাজনীতির এই ধারা যদি অব্যাহত থাকে, তাহলে আরও ছোট ছোট শেখ হাসিনা গড়ে উঠবে।
তিনি আরও বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সম্মিলিত প্ল্যাটফর্ম ছিল। এটিকে টিকিয়ে রেখে সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করার অধিকার কারও নেই। এমন কার্যক্রম অব্যাহত রাখলে ছাত্র-জনতা তাদের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নাম ব্যবহারের অধিকার থেকে বঞ্চিত করবেন।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার বিকেল ৪টায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দুপক্ষের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে নারীসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। আহতদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়েছে। সেখানে তারা চিকিৎসা নিচ্ছেন।
মন্তব্য করুন