আড়াই হাজারের বেশি রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।
মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) সচিবালয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এ কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, দেশের ২৫টি জেলায় আড়াই হাজার রাজনৈতিক হয়রানিমূলক বা গায়েবি মামলা চিহ্নিত করা হয়েছে। এসব মামলায় লাখ লাখ মানুষ আসামি। আগামী ফেব্রুয়ারির মধ্যে এসব মামলা প্রত্যাহার করা হবে।
আইন উপদেষ্টা বলেন, গায়েবি মামলা চিহ্নিত করতে আমরা চারটি ভাগে ভাগ করেছি। মামলাগুলো পুলিশ করেছি কি না সেটা আমলে নেওয়া হয়েছে। দ্বিতীয়ত, এসব মামলার বেশিরভাগের প্রবণতা ছিল- বিস্ফোরক আইনে মামলা, অস্ত্র আইনে মামলা, পুলিশের ওপর হামলার মামলা। তৃতীয় প্রবণতা হলো- এসব মামলায় অনেক আসামি থাকে অর্থাৎ অজ্ঞাতনামা আসামি থাকে। সবশেষ যে প্রবণতাকে আমলে নেওয়া হয়েছে, বিরোধী দলীদের কোনো বড় সমাবেশের আগে-পরে এবং গত তিন ভুয়া নির্বাচনের আগে-পরে করা মামলা। এসব প্রবণতাকে আমলে নিয়ে আমরা আড়াই হাজারের বেশি মামলা চিহ্নিত করেছি। আশা করছি ফেব্রুয়ারির মধ্যে এসব মামলা প্রত্যাহার হয়ে যাবে বলে আশা করছি।
এ সময় উপদেষ্টা বলেন, দেওয়ানি ফৌজদারি আইনের সংস্কার হবে। ছয় মাসের মধ্যে সংশোধনযোগ্য সব আইন সংস্কারের কাজ শেষ করবে আইন মন্ত্রণালয়।
উচ্চ আদালতে এর আগে রাজনৈতিক বিবেচনায় বিচারক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে আসিফ নজরুল বলেন, এখন থেকে বিচারক নিয়োগ হবে দক্ষতার ভিত্তিতে এবং দল নিরপেক্ষতার ভিত্তিতে। বিচারক নিয়োগের জন্য সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগ অধ্যাদেশ করা হচ্ছে।
এদিকে সাইবার সিকিউরিটি আইনের অধীনে সারা দেশে যত মামলা রয়েছে সব প্রত্যাহার করা হবে বলে জানিয়েছেন আইন উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, আগামী ৭ দিনের মধ্যে এসব মামলা প্রত্যাহারের উদ্যোগ নেওয়া হবে। একইসঙ্গে সাইবার সিকিউরিটি আইন সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এ নিয়ে কাজ করছে।
এদিকে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেছেন, গুম, খুন ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকারীরা আবার ক্ষমতায় আসুক, দেশের অধিকাংশ জনগণ তা চায় না। মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) নির্বাচন কমিশন ভবনের মিডিয়া সেন্টারে আরএফইডি টক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।
বদিউল আলম মজুমদার বলেন, গণহত্যাকারীরা যাতে নির্বাচনে অংশ নিতে না পারে সে সুপারিশ করেছে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন। পাশাপাশি বিগত ৩টি নির্বাচন দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ তিন নির্বাচন কমিশনকে বিচারের আওতায় আনতে তদন্ত কমিশন গঠনেরও সুপারিশের কথা জানান তিনি।
তিনি বলেন, কাউকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখা আমাদের উদ্দেশ্য নয়। আমরা চাই- যে অন্যায় করেছে তাদের বিচারের আওতায় আনা হোক।
এ সময় এক প্রশ্নের জবাবে বদিউল আলম বলেন, একটি তদন্ত কমিশন গঠন করার মাধ্যমে ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের নির্বাচনে কারচুপিতে সহায়তাকারীদের বিচার করা হোক। তখনকার কমিশন অন্যায় করলে তাদেরও বিচার হবে। কেউ চায় না অতীতের জায়গায় ফিরে যাক। অতীতের কারচুপি এবারের নির্বাচনে পুনরাবৃত্তি চাই না।
মন্তব্য করুন