তিনদিনের রাষ্ট্রীয় সফরে চীনের বেইজিংয়ের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।
সোমবার (২০ জানুয়ারি) বিকেলে মো. তৌহিদ হোসেনের ঢাকা ত্যাগ করার তথ্য জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই’র আমন্ত্রণে এ সফরে গিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা। ৩ দিনের সফর শেষে আগামী ২৪ জানুয়ারি (শুক্রবার) দেশে ফেরার কথা রয়েছে পররাষ্ট্র উপদেষ্টার।
এর আগে সফরের বিষয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেছেন, চীন সফরে অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক অনেক বিষয়ে আলোচনা হবে। সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পাবে বাণিজ্যিক ও অর্থনৈতিক ইস্যুগুলো। আমাদের অনেক প্রকল্পে চীনের বিনিয়োগ আছে। বিনিয়োগ মূলত ঋণ আকারে। তার মধ্যে কিছু প্রকল্প চলমান। এ ছাড়া আরও অর্থনৈতিক আলোচনা আছে- যেমন আমরা ঋণের শর্তাদি নিয়ে কথা বলব। এর মধ্যে রয়েছে সুদহার কমানো বা ঋণ পরিশোধের সময়সীমা বাড়ানো।
উপদেষ্টা বলেন, এখনো চীন আমাদের অধিকাংশ পণ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধা দিচ্ছে। কিন্তু এলডিসি থেকে গ্র্যাজুয়েশনের পরে এটা পরিবর্তন হতে পারে। তাই এটি আমাদের আলোচনার মাধ্যমে আগেই ঠিক করে নিতে হবে। চীনের সঙ্গে সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্ণ হচ্ছে। এ উপলক্ষে দুই দেশেই কিছু উৎসব আছে। সেগুলো নিয়েও আমরা কথাবার্তা বলব।
সফরসূচি প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, ২১ জানুয়ারি রাজধানী বেইজিংয়ে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আনুষ্ঠানিক বৈঠক হবে। তারপর সাংহাইয়ে একটি অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে হবে। এর বাইরে বিদ্যুৎচালিত গাড়ির (ইভি) কারখানা এবং ফ্রুটস প্রিজারভেশন-সংক্রান্ত দুটি শিল্পকারখানা আমাদের দেখানো হবে। তাদের নতুন এসব টেকনোলজি আমাদের দেশে কাজে আসতে পারে।
গতকাল রোববার পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন। ওই সাক্ষাতের কথা উল্লেখ করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বাংলাদেশিদের উন্নত চিকিৎসা প্রদানের জন্য কুনমিংয়ে কমপক্ষে তিন থেকে ৪টি শীর্ষস্থানীয় হাসপাতাল মনোনীত করার জন্য চীনকে অনুরোধ করা হয়েছে।
তৌহিদ হোসেন বলেন, ঢাকার উপকণ্ঠ পূর্বাচলে একটি পূর্ণাঙ্গ তৃতীয় স্তরের চীনা হাসপাতাল স্থাপনের জন্য বাংলাদেশ জমি এবং অন্যান্য সুবিধা প্রদান করতেও প্রস্তুত। এ সময় চীনা রাষ্ট্রদূত বলেছেন, চীন বাংলাদেশের জনগণের কল্যাণের জন্য সবকিছু করবে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, চীনের রাষ্ট্রদূত পররাষ্ট্র উপদেষ্টাকে অবহিত করেছেন, চীন বাংলাদেশের জন্য সুদের হার কমানোর বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করছে। এ ছাড়া বেইজিং ঢাকার পূর্ববর্তী অনুরোধের সাথে সামঞ্জস্য রেখে বাংলাদেশের সঙ্গে পানিপ্রবাহসংক্রান্ত তথ্য বিনিময়ের একটি বাস্তবায়ন পরিকল্পনা স্বাক্ষর করতে প্রস্তুত।
মন্তব্য করুন