জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্রের মতো এমন একটি মূল্যবান দলিল তৈরিতে কোনো অস্থিরতা, অসংগতি ও সমন্বয়হীনতা থাকা উচিত নয় বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার।
বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সর্বদলীয় বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান তিনি।
সাংবাদিকদের গোলাম পরওয়ার বলেন, জুলাই ঘোষণাপত্র রচনার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে রাজনৈতিক দলগুলোকে মতবিনিময়ের জন্য আহ্বান জানানো হয়েছিল। সর্বদলীয় বৈঠকে আমরা আমাদের মতামত পেশ করেছি। মোটা দাগে আলোচনার বিষয়ে বলতে গেলে, প্রথমত জামায়াতে ইসলামীসহ সব রাজনৈতিক দল জাতীয় ঐক্য ধারণ করার জন্য জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র প্রণয়ন করা হোক, এ বিষয়ে একমত।
তবে ঘোষণাপত্র চূড়ান্ত করতে দুদিন আগে থেকে সরকারের পক্ষ থেকে দেওয়া খসড়াগুলো অনেকেই সময়মতো পায়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, সরকারের এমন একটি মূল্যবান দলিল তৈরির পেছনে কোনো অস্থিরতা, অসংগতি বা সমন্বয়হীনতার প্রয়োজন নেই। ধীরস্থিরভাবে এ ঘোষণাপত্র প্রণয়নের জন্য প্রতিটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে মতবিনিময় হওয়া দরকার।
তিনি আরও বলেন, আমরা পরামর্শ দিয়েছি, সরকারের এমন মূল্যবান ঘোষণাপত্রের জন্য আরও মতবিনিময় হওয়া দরকার। তবে ঘোষণাপত্রের খসড়ায় অনেক মৌলিক জিনিস বাদ পড়েছে। বাংলাদেশে ইসলামী শক্তি বড় একটি ইসলামী শক্তি, ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে তাদের অসাধারণ ত্যাগ, বহু মানুষকে শহীদ করা হয়েছে, নিরীহ-নিরপরাধ নেতাদের ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যা করা হয়েছে, গুম করা হয়েছে, ক্রসফায়ার নেওয়া হয়েছে- এই সত্য ইতিহাসগুলো ঘোষণাপত্রের কাঠামোয় স্থান পায়নি। ইতিহাস থেকে এমন মৌলিক বিষয়গুলো যেন বাদ না পড়ে আমরা সেগুলো সরকারের দৃষ্টিতে এনেছি। আমরা বলেছি- প্রক্রিয়াটা এমন হওয়া দরকার যাতে সব দলসহ স্টেকহোল্ডাররা মতামত দিতে পারে।
এর আগে, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র চূড়ান্ত করার লক্ষ্যে রাজনৈতিক দল ও অন্যান্য অংশীজনের সঙ্গে সর্বদলীয় বৈঠকে বসেছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ওই বৈঠক শুরু হয়ে সন্ধ্যা ৬টার কিছু আগে শেষ হয়। এই বৈঠকে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে অংশ নেন চার সদস্যের একটি দল। তারা হলেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার ছাড়াও অন্যদের মধ্যে জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হাবিবুর রহমান আজাদ, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন হেলাল, এহসানুল মাহবুব জুবায়ের উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন