রাজধানী ঢাকার প্রাণকেন্দ্র পল্টনের ‘ঐতিহাসিক মুক্তাঙ্গন’-কে রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য সভা-সমাবেশ অথবা জনসাধারণের চলাচলের জন্য দখলমুক্ত করতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনসহ সংশ্লিষ্ট সব প্রতিষ্ঠানের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে এশিয়া মানবাধিকার সংস্থা।
মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) এক বিবৃতিতে সংস্থাটির মহাসচিব নজরুল ইসলাম বাবলু এ আহ্বান জানান।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, পতিত ফ্যাসিবাদী হাসিনা সরকারের আমলে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার ছবক হিসেবে আওয়ামী লীগ ঢাকার মুক্তাঙ্গন ও ঐতিহাসিক পল্টন ময়দানকে বিনোদন পার্ক করার ঘোষণা দিয়েছিল। কিন্তু পরবর্তীতে মুক্তাঙ্গন ও ঐতিহাসিক পল্টন ময়দানে রাজনৈতিক দলগুলোর কথিত কিছু দখলবাজ, চাঁদাবাজ ও টেন্ডারবাজদের ছত্রছায়ায় গড়ে ওঠে পার্কিং বাণিজ্য। মুক্তাঙ্গনের ভিতরে এবং সচিবালয়ের পথঘেঁষে দুই পাশজুড়ে গড়ে তোলে অবৈধ গাড়ি পার্কিং। বর্তমানে বিএনপি এবং পতিত আওয়ামী লীগ মিলে প্রতিটি গাড়ি থেকে দৈনিক পনেরশ টাকা এবং নতুন করে এককালীন ভাড়া বাবদ পনের হাজার টাকা করে চাঁদা নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। তবে এসব চাঁদা নেওয়ার ক্ষেত্রে বিএনপি এবং আওয়ামী লীগের যৌথ সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। শুধু তাই নয়, সন্ধ্যার পর মুক্তাঙ্গনজুড়ে চলে মাদক বেচাকেনা ও সেবন।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, জুলাই-আগস্টের আন্দোলনের সময় মুক্তাঙ্গন থেকে আওয়ামী চাঁদাবাজ, দখলবাজরা ছাত্র-জনতার ওপর সশস্ত্র হামলা চালায়। ৫ আগস্টের পর বিএনপিপন্থি চাঁদাবাজ-দখলবাজরা তড়িঘড়ি করে একটি কথিত কমিটি করে চাঁদাবাজি করছে। বর্তমানে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের যৌথ সিন্ডিকেট মুক্তাঙ্গন নিয়ন্ত্রণ করছে।
এশিয়া মানবাধিকার সংস্থার বিবৃতিতে বলা হয়েছে, অবৈধ গাড়ি পার্কিংয়ের কারণে প্রতিদিন পল্টন থেকে গুলিস্তান-ফুলবাড়িয়া বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত তীব্র যানজট দেখা যায়। অন্যদিকে গাড়ি পার্কিংয়ের কারণে মুক্তাঙ্গন ও পল্টন যাত্রী ছাউনির নাম-নিশানা প্রায় মুছে যাওয়ার মতো অবস্থা। এখানকার দখলবাজ-চাঁদাবাজদের হাতে বিভিন্ন সময় সাধারণ মানুষের লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনাও ঘটছে। এমন অবস্থায় অবিলম্বে মুক্তাঙ্গনকে রাজনৈতিক দলগুলোর সভা-সমাবেশ অথবা জনসাধারণের চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দিতে এবং অবৈধ গাড়ি পার্কিং বন্ধ করার জন্য ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রশাসন, পল্টন থানাসহ সংশ্লিষ্ট সব প্রতিষ্ঠানের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।
মন্তব্য করুন