গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তিনটি মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের নিয়োগ, বদলি ও শৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিষয়ে পরামর্শ প্রদানে গঠিত কমিটি বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারকে সাধুবাদ জানিয়েছে ‘বৈষম্যবিরোধী কর্মচারী ঐক্য ফোরাম’।
রোববার (১২ জানুয়ারি) সমন্বয়ক এবিএম আবদুস সাত্তারের পাঠানো এক বিবৃতিতে এ কথা জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তিনটি মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব ও তদোর্ধ্ব পদের কর্মকর্তা এবং মাঠপর্যায়ের বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক, ডিআইজি, পুলিশ সুপার পদে নিয়োগ, বদলি ও শৃঙ্খলা বিষয়ে পরামর্শ প্রদানের লক্ষ্যে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে তিনটি কমিটি গঠন পূর্বক গত ৯ জানুয়ারি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
ইতোমধ্যে ওই প্রজ্ঞাপন আমাদের গোচরীভূত হয়েছে। প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তাদের নির্বিঘ্নে, নির্ভয়ে ও আইনানুগভাবে নিজ নিজ দায়িত্ব পালনে এ সিদ্ধান্তটি খুবই সময়োপযোগী হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারকে এমন একটি সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য ফোরামের পক্ষ থেকে ‘সাধুবাদ’ জানাই।
পাশাপাশি গঠিত কমিটিগুলোর সদস্যরা (প্রত্যেক কমিটিতে ৫ থেকে ৭ জন) সবাই একমত হয়ে পরামর্শ প্রদান করার ক্ষেত্রে প্রশাসনে সিদ্ধান্ত গ্রহণে বিলম্ব ঘটিয়ে সরকারের কর্মকাণ্ডে স্থবিরতা দেখা দেয় কিনা সে বিষয়ে সরকারের সদা সতর্ক দৃষ্টি কামনা করছি।
উল্লেখ্য, এরশাদ সরকারের সময়েও কমিটির মাধ্যমে প্রশাসন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু, তা ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়। আশু-শঙ্কার কারণ জনপ্রশাসনে ঘাপটি মেরে থাকা স্বৈরাচারী সরকারের ৪০/৪২ জন সচিব, শতাধিক অতিরিক্ত সচিব, কয়েকশ যুগ্ম সচিব ও সমপর্যায়ের কর্মকর্তাকে এখনো অপসারণ/প্রত্যাহার করা হয়নি।
এসব কর্মকর্তা এখনো বিগত স্বৈরাচারী সরকারের মন্ত্রী/এমপিদের সঙ্গে গোপনে যোগাযোগ রক্ষা করে বিভিন্ন অন্তর্ঘাতমূলক কাজ করার পাঁয়তারা করছে। আত্মীয়তাসহ সামাজিক/পারিবারিক বিভিন্ন কারণে কোনো সদস্যের দ্বিমতের কারণে স্বৈরাচারের দোসর কোনো কর্মকর্তার বদলি/প্রত্যাহার/অপসারণ ইত্যাদি কোনো পদক্ষেপ বাধাগ্রস্ত হওয়ার সংশয় আছে। এমন কোনো ঘটনা ঘটলে তা ছাত্র-জনতা আন্দোলনের চেতনার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করা হবে।
তবে প্রত্যেক মন্ত্রণালয়ে ছাত্র-জনতার বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের চেতনায় উদ্বুদ্ধ দক্ষ, কর্মঠ, সৎ, কর্মোদ্যগী কর্মকর্তাদের মন্ত্রণালয়ের সচিব/অতিরিক্ত সচিব/ যুগ্মসচিব পদে এবং মাঠপর্যায়ে বিভাগীয় কমিশনার/ডিআইজি ইত্যাদি পদে পদায়ন করার মাধ্যমে একটি দক্ষ কর্মক্ষম প্রশাসন গড়ে তুলে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব।
এমতাবস্থায়, বিগত স্বৈরাচারী সরকারের দোসরদের অবিলম্বে প্রশাসন থেকে প্রত্যাহার/অপসারণ পূর্বক সুবিবেচনা প্রয়োগ করে রাষ্ট্রে সুশাসন প্রতিষ্ঠাকল্পে উপযুক্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্যে প্রধান উপদেষ্টার প্রতি সবিনয় আহ্বান জানাচ্ছি।
মন্তব্য করুন