কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ০৭ জানুয়ারি ২০২৫, ১০:৫৪ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

কুমিল্লাবাসীর উদ্দেশে হাসনাতের বার্তা

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ। ছবি : সংগৃহীত
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ। ছবি : সংগৃহীত

‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ বিষয়ে কুমিল্লাবাসীর উদ্দেশে বিশেষ বার্তা দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ।

মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে এ বার্তা দেন তিনি।

স্ট্যাটাসে হাসনাত লেখেন, ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’-বিষয়ক লিফলেট বিতরণে আগামীকাল সারাদিন কুমিল্লার সহযোদ্ধা এবং ছাত্র-জনতার সঙ্গে দেখা হবে ইনশাআল্লাহ।

এর আগে সোমবার (৬ জানুয়ারি) জুলাই ঘোষণাপত্রে ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং ২০২৪ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ধারাবাহিকতা পরিষ্কার করাসহ ৭টি বিষয় অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি।

সোমবার রাতে রাজধানীর বাংলামোটরে সংগঠন দুটির কার্যালয়ের সামনে লিফলেট বিতরণ কর্মসূচিতে এসব দাবি জানানো হয়।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দাবিগুলো হলো-

১. জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি এবং দ্রুত সময়ের মধ্যে আহতদের বিনামূল্যে রাষ্ট্রীয়ভাবে সুচিকিৎসা প্রদানের প্রতিশ্রুতি স্পষ্ট করতে হবে।

২. ঘোষণাপত্রে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’-এর নেতৃত্ব পরিষ্কারভাবে উল্লেখ থাকতে হবে।

৩. অভ্যুত্থানে আওয়ামী খুনি ও দোসরদের বিচার নিশ্চিত করার স্পষ্ট অঙ্গীকার ব্যক্ত করতে হবে।

৪. ১৯৪৭ সালের পাকিস্তান আন্দোলন, ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং ২০২৪ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ধারাবাহিকতা পরিষ্কার করতে হবে।

৫. ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রব্যবস্থার মূল ভিত্তি সংবিধান বাতিল করে নির্বাচিত গণপরিষদ গঠনের মাধ্যমে সম্পূর্ণ নতুন গণতান্ত্রিক সংবিধান প্রণয়নের অঙ্গীকার ব্যক্ত করতে হবে।

৬. নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তে সব ধরনের বৈষম্য নিরসনের মধ্য দিয়ে নাগরিক পরিচয় প্রধান করে রাষ্ট্রকাঠামো গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি থাকতে হবে।

৭. জুলাই অভ্যুত্থানের একমাত্র প্রধান লক্ষ্য আওয়ামী ফ্যাসিবাদী সরকারকে উৎখাত করা ছিল না; বরং গত ৫৩ বছরের বৈষম্য, শোষণ ও ফ্যাসিবাদি রাজনৈতিক ব্যবস্থা বিলোপ করার লক্ষ্যে এ অভ্যুত্থান সংঘটিত হয়েছে। সুতরাং বিদ্যমান ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রকাঠামো বিলোপ করতে সব ধরনের সংস্কারের ওয়াদা দিতে হবে।

বিতরণ করা লিফলেটে উল্লেখ করা হয়, এই অভূতপূর্ব অভ্যুত্থানকে টিকিয়ে রাখতে এবং বৈশ্বিক স্বীকৃতি আদায়ের লক্ষ্যে শুরু থেকেই আমরা একটি প্রোক্লেমেশন তথা ঘোষণাপত্র জারির দাবি জানিয়ে এসেছি। এ ঘোষণাপত্রই হবে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের বৈধতার উৎস এবং পরবর্তী সংবিধানের ভিত্তিমূল। জনগণের বিপুল সাড়া ও চাপের মুখে সরকার নিজে এ ঘোষণাপত্র জারির ব্যাপারে সম্মতি প্রদান করতে বাধ্য হয়। আমরা অনতিবিলম্বে এ ঘোষণাপত্র জারির দৃশ্যমান উদ্যোগ দেখতে চাই।

এতে বলা হয়, ইতোমধ্যে আমরা ছাত্র-জনতার পক্ষ থেকে সরকারকে ১৫ দিনের মধ্যে ঘোষণাপত্র জনগণের সামনে তুলে ধরার সময় বেঁধে দিয়েছি। আমরা ছাত্র-জনতার পক্ষ থেকে সুনির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ঘোষণাপত্রটি প্রকাশ করার জন্য জোরাল দাবি জানাচ্ছি। ওই ঘোষণাপত্রে এ জনগোষ্ঠীর বিগত দুইশত বছরের লড়াই-সংগ্রামের স্বীকৃতি থাকতে হবে। বিগত ১৬ বছরের জুলুম-নিপীড়ন, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করাসহ অর্থপাচারের খতিয়ান থাকতে হবে।

স্বাধীন বাংলাদেশের ইতিহাসে ছাত্র-জনতার জুলাই অভ্যুত্থান এক অবিস্মরণীয় ঘটনা উল্লেখ করে এতে আরও বলা হয়েছে, এর মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে আওয়ামী লীগের চেতনা ব্যবসার অবসান ঘটে। ফলে একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধ ও লাখও শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা আপামর জনগণের অর্জন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পথ সুগম হয়। তাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে বাংলাদেশের জনগণ কীভাবে ভয়াবহ এই ফ্যাসিবাদী জিঞ্জির ছিন্ন করেছে ঘোষণাপত্রে তার উল্লেখ থাকতে হবে। আমরা চাই অধিকার, ইনসাফ ও মর্যাদাভিত্তিক সমাজ ও রাষ্ট্র। ব্যক্তি ও সমাজের সহাবস্থানে বৈষম্যহীন ও গণতান্ত্রিক এক রাষ্ট্রকল্প যেখানে ভোটাধিকারসহ সকল মৌলিক অধিকার সুরক্ষিত থাকবে। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানসমূহ হবে স্বাধীন ও নিরপেক্ষ।

১৯৭২ থেকে ১৯৭৫ সালের একদলীয় শাসন এবং এক-এগারোর বিরাজনৈতিক বন্দোবস্তের পরিবর্তে বাংলাদেশকে গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র হিসেবে গঠন করার সংকল্প ব্যক্ত করবে এই ঘোষণাপত্র- এমনটা বলছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।

উল্লেখ্য, গত ২৮ ডিসেম্বর রাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র দেওয়ার কথা বলেন। এজন্য ৩১ ডিসেম্বর বিকেল ৩টায় শহীদ মিনারে ছাত্র-জনতাকে জড়ো হওয়ার আহ্বান জানান। এর মধ্যে ৩০ ডিসেম্বর রাতে অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে ঘোষণা দেওয়া হয়, জাতীয় ঐক্যমতের ভিত্তিতে তারা ঘোষণাপত্র তৈরি করবেন। পরে ছাত্ররা নির্ধারিত দিনে ঘোষণাপত্র দেননি, সেদিন তারা শহীদ মিনারে ‘মার্চ ফর ইউনিটি’ কর্মসূচি পালন করেন। তাতে তারা ১৫ জানুয়ারির মধ্যে ঘোষণাপত্র দিতে সরকারেকে আলটিমেটাম দেন।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

সীমান্তে গুলি, বাংলাদেশি যুবক নিহত

‘একটি দলের কথায় প্রশাসন কাজ করে, এটা প্রত্যাশিত নয়’

হাড়কাঁপানো শীত থাকবে ২ দিন

‘তদবির-বাণিজ্য’ নিয়ে মুখ খুললেন তালাত মাহমুদ রাফি

হিজাব পরতে বলায় ধর্মীয় নেতার পাগড়ি খুলে মাথায় পরলেন নারী

ব্র্যাক ব্যাংকের ‘উদ্যোক্তারা ডিজিটাল ওয়ার্কশপে’ ৮০ নারীর প্রশিক্ষণ

প্রাথমিকের নতুন সচিব মাসুদ

নেতানিয়াহুর মূর্তি ধ্বংস করে প্রতিবাদ

মোহাম্মদপুর জামায়াতে ইসলামীর শীতবস্ত্র বিতরণ

১৭৩ কোটি টাকা খেলাপি ঋণ / প্রভিটা গ্রুপের চেয়ারম্যানের স্ত্রী-সন্তানসহ দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

১০

‘নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে সরকার’

১১

অবৈধ অস্ত্র জমা দিলে টাকা দেবে মেক্সিকো সরকার

১২

মেহেরপুরে বাস-মোটরসাইকেল সংঘর্ষে নিহত ২

১৩

বগুড়ায় ২০ মামলায় যুবলীগ নেতা আলহাজ শেখ গ্রেপ্তার

১৪

রাতে তাপমাত্রা কত কমবে, জানাল আবহাওয়া অধিদপ্তর

১৫

বিসিএস গেজেট থেকে বাদ পড়া শিক্ষার্থীদের অন্তর্ভুক্তির দাবিতে মানববন্ধন

১৬

বিডিআর বিদ্রোহের বিচার কাজ শুরু বৃহস্পতিবার

১৭

লেজিসলেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি হাফিজ, সম্পাদক শাফায়েত

১৮

জামিন নিতে গিয়ে আ.লীগের ৩ নেতা কারাগারে

১৯

সেই আফগানিস্তানের কাছেই নতি স্বীকার করল যুক্তরাষ্ট্র

২০
X