রাজেকুজ্জামান রতন বলেছেন, কোনো পেশাই অসম্মানের না। রাষ্ট্র কাজ দিতে না পারলেও আমি নিজেই নিজের জীবিকা খুঁজে নিয়েছি, এটা আরও মর্যাদার।
রোববার (৫ জানুয়ারি) শ্রম ভবনে শ্রম সংস্কার কমিশনের সঙ্গে বাংলাদেশ হকার সংগ্রাম পরিষদের প্রতিনিধিদের মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।
শ্রম সংস্কার কমিশনের এক্সিকিউটিভ সেক্রেটারি নুর জাহান আমিনা মুন স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, রাজেকুজ্জামান বলেন, বাংলাদেশের যত পেশা আছে, আমরা সব পেশার নাম আমরা আমাদের রিপোর্টে রাখতে চাই। যাতে মানুষ বলতে পারে, শ্রম সংস্কার কমিশনের রিপোর্টে তাদের কথা কমিশন উল্লেখ করেছে। যাদের চাকরির ব্যবস্থা সরকার করতে পারেনি, যারা নিজের চেষ্টায় করেছে কর্মসংস্থান, সরকারকে নিয়মিত ভ্যাট-ট্যাক্স দিচ্ছে, কেন তাদের কোনো পরিচয়পত্র থাকবে না, এ নিয়ে অবশ্যই কমিশন সুপারিশ করবে।
তিনি আরও বলেন, আমরা সুপারিশের শুরুতে একই সঙ্গে প্রস্তাবনা দিব, কেন এ পেশা প্রয়োজন এবং কেন সবার আইনি সুরক্ষার প্রয়োজন।
১৮টি সংগঠন নিয়ে সংগঠিত বাংলাদেশ হকার সংগ্রাম পরিষদের লিখিত বক্তব্য পেশ করেন আবুল হোসেন। তিনি বলেন, হকার, পথবিক্রেতা ও ফুটপাত ব্যবসায়ীরা সেবা দিতে গিয়ে নানা ধরনের হয়রানির শিকার হন। স্বাধীনতার ৫৪ বছরেও হকার, পথবিক্রেতা ও ফুটপাত ব্যবসায়ীদের মৌলিক মানবাধিকার ও কল্যাণ নিশ্চিতকল্পে কোনো আইন কিংবা কোনো নীতিমালা প্রণীত হয়নি। হকাররা স্বাধীন দেশের নাগরিক হলেও অধিকার ও মর্যাদাহীনতার কারণে নিজ দেশে পরাধীন।
হকার ও পথবিক্রেতা সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার বিভিন্ন সুপারিশের মধ্যে অন্যতম সুপারিশ- জরিপ পরিচালনা, নিবন্ধন ও পেশার স্বীকৃতি, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে হকার বোর্ড গঠন করে হকার, পথবিক্রেতা ও ফুটপাত ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসনের নীতিমালা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করা। নগর পরিকল্পনা- হকারীর জন্য নগরের বিশেষ স্থান নির্ধারণ, অবৈধ চাঁদাবাজি, হয়রানি-নির্যাতন বন্ধ, হকারদের আইনের আওতাভুক্ত করা প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। কমিশন প্রধান সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহম্মদ সবার স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের জন্য সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, সমস্যা সম্পর্কে আমরা অবগত, তবে এই সমস্যা নিরসনে কী কী করা যেতে পারে এজন্যই আজ আপনাদের সঙ্গে বসা। আমরা কাজ করি এই কাজের স্বীকৃতি চাই, সব শ্রমিকের এটা অধিকার।
তিনি আরও বলেন, আমাদের কষ্টগুলোকে একত্র করা দরকার এবং মূল লক্ষ্য হচ্ছে কষ্টগুলোকে একত্র করে লিপিবদ্ধ করে সুপারিশ আকারে দেওয়া এবং তা যাতে কার্যকর হয় তার জন্য একসঙ্গে কাজ করা। আমাদের সন্তানেরা যাতে অহংকারের সঙ্গে বলতে পারে আমার বাবা হকার, দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠে যাতে শ্রমের যাথাযথ মর্যাদা সম্পর্কে সবাইকে অবগত করা হয়।
শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রধান সুলতান উদ্দিন আহম্মদের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন সাকিল আখতার চৌধুরী, জাকির হোসেন, রাজেকুজ্জামান রতন, আনোয়ার হোসেন, তাসলিমা আখতার, আরিফুল ইসলামসহ অন্যরা।
মন্তব্য করুন