জাতীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বাংলাদেশের প্রশাসনের কেন্দ্রবিন্দু সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সংগঠন ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইউট্যাব)।
শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) ইউট্যাবের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম ও মহাসচিব অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খান এক বিবৃতিতে বলেন, গত ৫ আগস্ট স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলেও তাদের দোসররা কিন্তু থেমে নেই।
তারা শুরু থেকেই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এবং দেশের বিরুদ্ধে বিভিন্ন রকম ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে। যার সর্বশেষ উদাহরণ বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) রাতে বাংলাদেশের হৃৎপিণ্ড সচিবালয়ের গুরুত্বপূর্ণ ভবনে আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। আগুনের চিত্র ও বর্ণনায় প্রমাণিত হয় যে, সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ড পরিকল্পিত ঘটনা এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে ব্যর্থ করার হীন চক্রান্ত। এর পেছনে ফ্যাসিবাদের দোসরদের ইন্ধন রয়েছে।
ইউট্যাবের শীর্ষ দুই নেতা বলেন, পরাজিত স্বৈরাচারের দোসরদের বিষয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন দেশপ্রেমিক প্রায় সব রাজনৈতিক দল এবং ব্যক্তি। কিন্তু অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যেন উদাসীন। পরাজিত স্বৈরাচারের দোসরদের বিষয়ে তাদের কোনো পদক্ষেপ চোখে পড়ার মতো নয়। যার ফলে সুযোগ বুঝে ফ্যাসিবাদের দোসররা সচিবালয়ে আগুন দিয়েছে। তারা বলেন, সচিবালয়ের মতো একটি সুরক্ষিত জায়গায় রাতের বেলা অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা নিছক দুর্ঘটনা নয়। এটি দেশের জাতীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থাকেও প্রশ্নবিদ্ধ করে। কেননা, সচিবালয় একটি সুরক্ষিত জায়গা। ফ্যাসিবাদের দোসরার সেই সচিবালয়ে আগুন লাগিয়ে নিজেদের অপকর্মের তথ্য পুড়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছে। তবে তাদের অপকর্মের বিষয়ে এ দেশের ১৮ কোটি মানুষ সাক্ষী আছে।
এ ছাড়া তারা বলেন, কাগজ পুড়িয়ে আলামত হয়তো নিশ্চিহ্ন করা যাবে কিন্তু হৃদয়ে যে দাগ কেটেছে সেটা মোছা যাবে না। সুতরাং আওয়ামী ফ্যাসিবাদের দোসরদের প্রতি কোনো দয়া প্রদর্শন না করে দেশ ও জাতির স্বার্থে কাজ করতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই। একইসঙ্গে তদন্তের মাধ্যমে অপরাধীদের চিহ্নিত করে দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
ইউট্যাবের নেতারা আরও বলেন, আমরা বিশ্বাস করি শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মতো দক্ষ ও যোগ্য ব্যক্তির নেতৃত্বে গঠিত নতুন সরকার যথাযথ পরিকল্পনা নিয়ে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে সব সমস্যা মোকাবিলায় সময়োপযোগী পদক্ষেপ নেবে। একইসঙ্গে বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার, মানুষের ভোটাধিকার এবং জনগণের সার্বিক প্রত্যাশা পূরণে সক্ষম হবে বলে আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি। তবে প্রয়োজনীয় সংস্কার দ্রুত শেষ করে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানায় ইউট্যাব।
মন্তব্য করুন