দেশের প্রশাসনিক কেন্দ্র রাজধানীর সেগুনবাগিচায় অবস্থিত সচিবালয়ের একটি ভবনে আগুন লেগেছে। বুধবার (২৬ ডিসেম্বর) দিবাগত মধ্যরাত ১টা ৫২ মিনিটে আগুন লাগার সংবাদ পায় ফায়ার সার্ভিস। আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ১৯টি ইউনিট কাজ করছে।
ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা গেছে, বুধবার দিবাগত রাত ১টা ৫২ মিনিটে আগুন লাগার খবর পাওয়ার পর ঘটনাস্থলে পৌঁছায় ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। প্রথমে আগুন নিয়ন্ত্রণের জন্য আটটি ইউনিট কাজ করলেও, পরে বাড়িয়ে ১৯টি করা হয়।
আগুনের ধোঁয়ায় ঢেকে গেছে পুরো সচিবালয় এলাকা। ঘটনাস্থলে ফায়ার সার্ভিসের পাশাপাশি সেনাবাহিনী, পুলিশ, দুই প্লাটুন বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়নের (বিজিবি) সদস্য ও আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) সদস্যরা রয়েছেন। তারা ফায়ার সার্ভিসকে সহায়তা করছেন। এ ছাড়া সাধারণ মানুষকেও ঘটনাস্থলের আশপাশে দেখা গেছে।
মন্ত্রীপরিষদ বিভাগের ওয়েবসাইটের তথ্যমতে, সচিবালয়ের ৭ নম্বর ভবনে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়, ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, অর্থ মন্ত্রণালয়, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন বিভাগ রয়েছে।
সচিবালয়ে আগুন নেভাতে গিয়ে ট্রাকের চাপায় নিহত হয়েছেন ফায়ার সার্ভিসের এক কর্মী। তার নাম সোহানুর। সচিবালয়ের দক্ষিণ দিকের ১ নম্বর ফটকের সামনের রাস্তায় একটি ট্রাক তাকে চাপা দেয়। ট্রাক ও ট্রাকের চালককে আটক করেছে ঘটনাস্থলে থাকা লোকজন।
এ দিকে সচিবালয়ের ৭ নম্বর ভবনে লাগা আগুনের ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) সকালে তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেছেন, এই আগুন নাশকতা কি না, তা তদন্ত ছাড়া বলা যাবে না। আগুন লাগার কারণসহ সব বিষয়ে তদন্তে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিটি হচ্ছে। এই কমিটির তদন্তের পর সবকিছু বলা যাবে।
সচিবালয়ের মতো সুরক্ষিত জায়গায় আগুনের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, দুর্ঘটনা যে কোনো জায়গাতেই হতে পারে। প্রথমে ভবনের ৬ তলায় আগুনের সূত্রপাত। পরে তা উপর দিকে উঠে। আগুনের উৎস অনুসন্ধানেও তদন্ত কমিটি হবে।
এ ছাড়া সকাল পৌনে ৭টার দিকে সচিবালয়ের সামনে বিফ্রিংয়ে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহাম্মদ জাহেদ কামাল বলেন, রাত ১টা ৫২মিনিটে আমরা মেসেজ পাই সচিবালয়ের ৭ নম্বর ভবনে আগুন লেগেছে। ১টা ৫৪ মিনিটের মধ্যে আমাদের ইউনিট পৌঁছে যায়। এখানে ১৯টি ইউনিট কাজ করেছে। এর মধ্যে ১০টি ইউনিট সরাসরি কাজ করেছে। এখানে গাড়ি প্রবেশে কিছুটা সীমাবদ্ধতা আছে। বিশেষ করে বড় গাড়িগুলো ঢোকানো কঠিন ছিল।
জাহেদ কামাল বলেন, কী কারণে আগুনের সূত্রপাত তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
তিনি আরও বলেন, একটা দুঃখজনক ঘটনা ঘটেছে। প্রথমধাপে এসে একজন ফায়ার ফাইটার পানির পাম্প থেকে পাইপে লাইন সংযোগ দিচ্ছিল। এ সময় রাস্তা পার হওয়ার সময় দ্রুতগামী ট্রাক তাকে আঘাত করে। তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর মৃত ঘোষণা করা হয়।
মন্তব্য করুন