হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, পতিত ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর সাদপন্থিদের হত্যাযজ্ঞের বিচারের দাবিতে মিছিল করায় বিএনপির নাম ভাঙিয়ে মঈনুদ্দিন গং ঢাকার শ্যামলীতে অবস্থিত মাদরাসাতুল কাউসার আল ইসলামিয়া বন্ধ করার হুমকি দেওয়ার ঘটনায় আমরা যারপরনাই বিস্মিত ও হতবাক হয়েছি। আমরা এই ন্যক্কারজনক ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
রোববার (২২ ডিসেম্বর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এ প্রতিবাদ জানান।
উদ্বেগ জানিয়ে তিনি বলেন, গত শনিবার শেরেবাংলা নগর থানা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মঈন উদ্দিন তার দলবল নিয়ে মাদ্রাসায় উপস্থিত হন। ইজতেমা ময়দানে হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবিতে আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নেওয়া ছাত্র এবং সাদপন্থিদের সব কার্যক্রম বন্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে মাদ্রাসার ছাত্র-শিক্ষকদের প্রতি জবাবদিহিতা তলব করে। একপর্যায়ে তারা মাদ্রাসার আসাতিযায়ে কেরামের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়ায় এবং মারমুখী ভঙ্গিতে নানা ধরনের হুমকি-ধমকি দিতে থাকে। এমনকি তারা মাদ্রাসা বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দেয়।
আজিজুল হক আরও বলেন, এই ন্যক্কারজনক ঘটনায় প্রশ্ন ওঠে, কেন স্থানীয় রাজনৈতিক নেতার কাছে ধর্মীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে জবাবদিহি করতে হবে? মাদ্রাসা একটি স্বতন্ত্র ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, যেখানে ছাত্রদের পারিবারিক, সামাজিক, নৈতিক শিষ্টাচার ও নাগরিক হিসেবে রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব, কর্তব্য এবং দ্বীনি শিক্ষা দেওয়া হয়। এরপরও মঈন উদ্দিন প্রভাবশালী একটি রাজনৈতিক দলের নাম ভাঙিয়ে নিজের ক্ষমতার জোর খাটিয়ে হুমকি দেওয়ার দুঃসাহস দেখায়, যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক।
তিনি বলেন, এই ঘটনার মাধ্যমে মাদ্রাসার শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ও ছাত্রদের মনোবল ভেঙে দেওয়ার অপপ্রয়াস চালানো হয়েছে। এটি শুধু মাদ্রাসার জন্য নয়, বরং ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের জন্যও গভীর উদ্বেগের বিষয়। হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করছে এবং দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারের প্রতি জোরালো আহ্বান জানাচ্ছে। একই সঙ্গে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের প্রতিও আহ্বান জানাচ্ছে, যেন তারা এ ঘটনার বিরুদ্ধে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে এবং ভবিষ্যতে এমন ন্যক্কারজনক ঘটনা যেন আর না ঘটে, সে বিষয়ে সুস্পষ্ট পদক্ষেপ নেয়।
আজিজুল হক আরও বলেন, স্পষ্টভাবে বলতে চাই, মাদ্রাসা ও আলেম সমাজের ওপর কোনো ধরনের রাজনৈতিক প্রভাব বা হুমকির মাধ্যমে পতিত ফ্যাসিস্ট আমলের মতো কোণঠাসা করে রাখা যাবে না। তদুপরি, মাওলানা সাদের অনুসারীরা প্রশাসনের আইন ভঙ্গ করে বিভিন্ন সহিংস কার্যক্রম পরিচালনার মধ্য দিয়ে স্পষ্টভাবে রাষ্ট্রবিরোধী অবস্থান নিয়েছে এবং তাদের কার্যক্রম দেশের শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
পরিশেষে, আমরা দেশের সর্বস্তরের নাগরিক ও রাজনৈতিক দলকে আহ্বান জানাই, মাদ্রাসা এবং ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানকে অহেতুক রাজনৈতিক প্রভাব থেকে দূরে রেখে ঐক্য ও সহমর্মিতার পরিবেশ বজায় রাখুন।
মন্তব্য করুন