বরিশালের বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিস, যশোরে বিআরটিএ, চট্টগ্রামে উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ও রাজধানীর ভূমি সংস্কার বোর্ডে দুর্নীতিবাজদের খুঁজতে অভিযান চালিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) দুদকের সহকারী পরিচালক (জনসংযোগ) তানজির আহমেদ কালবেলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, কমিশনের সিদ্ধান্ত মোতাবক দুর্নীতিবাজদের খুঁজতে দুদকের এই অভিযানের ধারা অব্যাহত থাকবে।
বরিশালে পাসপোর্ট অফিসে অভিযান :
বরিশালের পাসপোর্ট অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে পাসপোর্ট সেবা প্রদানে গ্রাহক হয়রানি ও অনিয়মের অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুদকের বরিশাল জেলা কার্যালয়ের একটি টিম বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা অফিসে অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানকালীন ছদ্মবেশ ধারণকারী দুদক টিমের সদস্যদের কাছে দালালরা প্রতিটি পাসপোর্ট ১৫ দিনের মধ্যে সম্পন্ন করে দেওয়ার বিনিময়ে ১২ হাজার টাকা দাবি করেন। এ সময় দুইজন দালালকে ছদ্মবেশে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ও পুলিশ সদস্যদের উপস্থিতিতে আটক করা হয়। পরবর্তীতে আটককৃত দালালদেরকে কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়। এই অনিয়মের সঙ্গে বরিশাল বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা অফিসের অফিস সহায়ক ও নিরাপত্তা প্রহরীর (আউটসোর্সিং) যোগসাজশ রয়েছে বলে আটককৃত দালালরা জানিয়েছেন। তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা অফিস, বরিশালের উপপরিচালকে অনুরোধ করেছে দুদক। যশোরে বিআরটিএতে অভিযান :
যশোরের পাসপোর্ট অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারিদের বিরুদ্ধে রেজিস্ট্রেশন, ফিটনেস, মালিকানা পরিবর্তন এবং রুট পারমিট বাবদ ঘুষ দাবির অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুদকের যশোর জেলা কার্যালয় থেকে একটি অভিযান পরিচালনা করা হয়। এনফোর্সমেন্ট টিম ছদ্মবেশে অভিযোগ সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে তথ্য সংগ্রহ করে। গোপনে তথ্য সংগ্রহকালে রেজিস্ট্রেশন, লাইসেন্স, ফিটনেস এবং মালিকানা পরিবর্তনসহ অন্যান্য সকল ক্ষেত্রেই দালালদের দৌরাত্ম্য দেখা যায়। এ সময় হাতেনাতে ৫ জন দালালকে আটক করে দুদকের আভিযানিক দল। পরে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পরিচালিত মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে দালালদের অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়।
চট্টগ্রাম পরিবেশ অধিদপ্তরে অভিযান :
ঐতিহ্যবাহী হেমসেন লেন, চট্টগ্রামে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ছাড়াই যথাযথ প্ল্যান না নিয়েই অবৈধভাবে বহুতল ভবন নির্মাণ করার অভিযোগের প্রেক্ষিতে হতে সমন্বিত জেলা কার্যালয়, চট্টগ্রাম-১ থেকে একটি অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানকালে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ থেকে অভিযোগ সংশ্লিষ্ট প্রয়োজনীয় রেকর্ডপত্র সংগ্রহ করা হয়। পর্যালোচনায় দেখা যায়, আবেদনকারীর আবেদনের উপর ভিত্তি করে ঘটনাস্থল পরিদর্শন ছাড়াই সিডিএ’র সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা Land utilization clearance certificate (LUC) প্রদান করেন। এরই ধারাবাহিকতায় নকশা অনুমোদনকারী বিভাগ নিয়মের তোয়াক্কা না করে নকশা অনুমোদন প্রদান করেন বলে টিমের নিকট প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হয়। প্রাপ্ত তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে এনফোর্সমেন্ট টিম কমিশন বরাবর বিস্তারিত প্রতিবেদন দাখিল করবে।
রাজধানীতে ভূমি সংস্কার বোর্ডে অভিযান :
ভূমি সংস্কার বোর্ডের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বৈধ লিজি সদস্যদের বাদ দিয়ে বিপুল অর্থের বিনিময়ে ভূমি দস্যুদের প্লট বিক্রি বাণিজ্যের অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রধান কার্যালয় থেকে একটি এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানকালে টিম ছদ্মবেশে অফিসের সার্বিক সেবাদান পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে এবং আউকপাড়া, আশুলিয়ায় ন্যাশনাল প্লাজা লিমিটেড কর্তৃক গৃহীত লিজ সম্পত্তি সরেজমিনে পরিদর্শন করে। সরেজমিনে পরিদর্শনকালে নিয়মের ব্যত্যয়ের প্রাথমিক তথ্য পাওয়া যায়। পরবর্তীতে সমবায় সমিতির সদস্যদের নিকট থেকে লিজ বিষয়ক তথ্য এবং ভূমি সংস্কার বোর্ডের সংশ্লিষ্ট নবাব এস্টেটের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নিকট থেকে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস সংগ্রহ করা হয়। রেকর্ডপত্র যাচাইসাপেক্ষে এনফোর্সমেন্ট টিম কমিশন বরাবর বিস্তারিত প্রতিবেদন দাখিল করবে।
মন্তব্য করুন