কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:০৬ পিএম
আপডেট : ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৩:১৩ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

খাবারের মেন্যু দেখে দিন-রাত বুঝতেন গুমের শিকার বন্দিরা

খাবারের মেন্যু দেখে দিন-রাত বুঝতেন গুমের শিকার বন্দিরা
নূর খান লিটন। ছবি: সংগৃহীত

আমরা যে পরিমাণ সিক্রেট সেল দেখেছি, যে পরিমাণ বন্দিরা ফেরত এসেছে, তাদের বয়ান থেকে আমরা যা জেনেছি তা, ভয়াবহ। বন্দিদেরকে রাখা হতো ৪ ফিট লম্ব আর ৩ ফিট চওড়া ছোট্টো ঘরে। সেখানে রাতদিনের তফাৎ বোঝা যেত না। বন্দিরা তাদের খাবার দেখে দিনরাতের হিসাব মেলাতেন। বন্দি ঘরের দেয়ালে গুহামানবদের মতো আঁচড় দিয়ে বিভিন্ন কথা লিখে রাখতেন বন্দিরা।

পতীত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে গুমের তদন্ত শেষে এমন ভয়াবহ বর্ণনা দিয়েছেন গুমসংক্রান্ত তদন্ত কমিশনের সদস্য নূর খান লিটন। সম্প্রতি তিনি একটি বেসরকারি টেলিভিশনে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এসব তথ্য জানান।

নূর খান লিটন বলেন, বাথরুমের চেয়েও ছোট সেসব বন্দি ঘর। সেখানে আলো-বাতাস সীমিত পরিমাণে প্রবেশ করানো হতো, যাতে সেখানকার বন্দিরা রাতদিনের পার্থক্য না বোঝে। যখন খাবার দেওয়া হতো, বন্দিরা খাবার দেখে শনাক্ত করতে পারতেন এখন দিন না রাত। সকালের নাস্তায় সাধারণত রুটি বা খিচুড়ি দেওয়া হতো, যা দেখে বুঝতো তারা একটি দিন পার করেছে। আমরা গুহামানবের কথা শুনেছি, যেখানে তারা দেয়ালে চিত্র আঁকতো, সংকেত লিখে রাখতো। আমরা এখানে দেখেছি বন্দিরা থালা দিয়ে বা ইটের টুকরা দিয়ে দেয়াল আঁচড় কেটে দিনের হিসাব রাখতো। এভাবে আমরা ১৮২ দিন থেকে ৩০০ দিনের মতো ডেট পেয়েছি। অস্পষ্ট কয়েকটি মোবাইল নম্বর এবং দু’একটি নামও পেয়েছি।

তিনি আরও বলেন, মানুষ মৃত্যুর আগে যে আকুতি জানাই- সেসব মর্মস্পর্শী বার্তাও পেয়েছি। যেমন- কেউ লিখেছেন ‘আই লাভ মাই ফ্যামিলি’। কেউ লিখেছেন- ‘বিজয় সুনিশ্চিত’। কেউ লিখেছেন- ‘হে আল্লাহ তুমি আমাকে রক্ষা করো’ আবার কেউ কুরাআনের আয়াত লিখে রেখেছেন।

নির্যাতনের বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, পাশাপাশি মানুষকে কিভাবে নির্যাতন করা হতো তার কিছু সিনড্রোম (নমুনা) আমরা পেয়েছি। কাউকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে যখন হত্যা করা হয়; তখন তাকে ইনজেকশন পুশ করা হয় অথবা কাউকে পলিথিন দিয়ে মুখ মুড়িয়ে শ্বাস রোধ করে হত্যা করা হয়। সেসব মরদেহ পেট কেটে সিমেন্টের বস্তা দিয়ে বেঁধে নদীর মাঝখানে ফেলে দেওয়া হতো।

নূর খান লিটন বলেন, লাশ ফেলে দেওয়ার কিছু কিছু জায়গা আমরা দেখেছি। যেমন পোস্তগোলায় একটা নৌকা রাখা ছিলো, যেটা সুন্দরবনের দস্যুদের কাছ থেকে উদ্ধার করা। পরে সে নৌকাটি ঢাকায় নিয়ে এসে গুমের হত্যাকাণ্ডে ব্যবহার করা হতো।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ফিলিস্তিনি গণমাধ্যমের খবর প্রচারে বাধা সৃষ্টি করছে ফেসবুক

বালিকা বিদ্যালয়ে ‘ভর্তির সুযোগ’ পেল ছেলে!

নিজস্ব পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষাসহ ইবি ছাত্রদলের ১০ দাবি

৯৭তম অস্কারের সংক্ষিপ্ত তালিকা প্রকাশ

আবারও কড়াইল বস্তিতে আগুন

নরসিংদীতে বিএনপির দুপক্ষের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধসহ আহত ১০

সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটি ও এম্পোরিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটির সমঝোতা স্মারক সই

তাবলিগ জামাতের ঘটনা নিয়ে আজহারীর স্ট্যাটাস

‘দাদাগিরির কারণে ভারত এখন বন্ধুশূন্য’

ব্রিটিশ আমেরিকান সেন্টারে চাকরির সুযোগ

১০

জিয়া পরিবারই বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতীক : টুকু

১১

কায়রোতে পৌঁছেছেন প্রধান উপদেষ্টা 

১২

‘গুমে ভারতীয় সম্পৃক্ততা মিলেছে’

১৩

ইজতেমা ময়দানে ১৪৪ ধারা জারি

১৪

জামায়াতের লক্ষ্য একটি মানবিক সমাজ গঠন করা : নূরুল ইসলাম বুলবুল

১৫

সময় মাত্র ১৫ মিনিট: শাকিব খান

১৬

আরেক মামলা থেকে অব্যাহতি পেলেন তারেক রহমান

১৭

তাবলিগ জামাতের ঘটনা নিয়ে সারজিসের ভিডিও বার্তা

১৮

‘ইনজেকশন পুশ করে হত্যা করা হতো গুমের শিকার ব্যক্তিদের’

১৯

আমাদের বিজয় কারো দেওয়া উপঢৌকন নয়, ত‍্যাগের বিনিময়ে অর্জন : রাষ্ট্রদূত মুশফিক 

২০
X