মহান বিজয় দিবসে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ১৩তম জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২০২৫ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে অনুষ্ঠিত হতে পারে।
তিনি বলেন, মোটাদাগে বলা যায়, ২০২৫ সালের শেষ দিক থেকে ২০২৬ সালের প্রথমার্ধের মধ্যে নির্বাচনের সময় নির্ধারণ করা যায়।
বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ইতিহাস ঘাটলে দেখা যায়, সাধারণত শীতকালে জাতীয় সংসদের নির্বাচন আয়োজিত হয়েছে। ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর এরশাদের শাসনের পতনের মধ্য দিয়ে সামরিক শাসনের অবসান ঘটে। গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার পর প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ১৯৯১ সালের ফেব্রুয়ারিতে।
১৯৯১ সালের ওই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় বিচারপতি শাহাবুদ্দীন আহমেদের নেতৃত্বে একটি নির্দলীয় অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে। এটি ছিল ৫ম জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি ক্ষমতায় আসে।
এরপর বিএনপি শাসনাধীন অবস্থায় ১৯৯৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে ৬ষ্ঠ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। তবে আওয়ামী লীগ, জামায়াত ইসলামী বাংলাদেশ, জাতীয় পার্টি এবং অন্যান্য বিরোধী দলগুলো এই নির্বাচন বয়কট করে। এর ফলে, নির্বাচিত সংসদ খুব কম সময় টিকে থাকার পর একটি সাংবিধানিক সংশোধনীর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়।
১৯৯৬ সালের জুনে ৭ম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় এবং এর মাধ্যমে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে। ২০০১ সালের অক্টোবর মাসে ৮ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে বিএনপি আবারও ক্ষমতায় আসে।
একইভাবে, ৯ম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ২০০৮ সালের ডিসেম্বর মাসে। এর মাধ্যমে আওয়ামী লীগ দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসে। পরে ২০১৪ সালের জানুয়ারিতে ১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচন, ২০১৮ সালের ডিসেম্বর ১১তম এবং ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে ১২তম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
বাংলাদেশের নির্বাচনী ইতিহাস থেকে স্পষ্ট একটা ধারণা পাওয়া যায়, নির্বাচনগুলো মূলত শীতকালে অর্থাৎ ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে অনুষ্ঠিত হয়। পূর্ববর্তী নির্বাচন কমিশনগুলো শীতকালীন সময়কে নির্বাচনের জন্য বেছে নিয়েছিল, কারণ এই সময়ে ভোটার উপস্থিতি সাধারণত গ্রীষ্ম ও বর্ষাকালের তুলনায় বেশি হয়।
মন্তব্য করুন