কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ১৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৩৩ এএম
আপডেট : ১৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০২ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

স্বাধীনতা ও বিজয় দিবসে ৩১ বার তোপধ্বনি কেন ?

তোপধ্বনির মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের প্রতি গান স্যালুট প্রদর্শন করা হয়। ছবি : সংগৃহীত
তোপধ্বনির মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের প্রতি গান স্যালুট প্রদর্শন করা হয়। ছবি : সংগৃহীত

বিশেষ দিবসে তোপধ্বনির মাধ্যমে সম্মান জানানোর প্রচলন রয়েছে অনেক আগে থেকেই। ঐতিহাসিকভাবে সামরিক বাহিনীর এই তোপধ্বনির মাধ্যমে সম্মান জানানোর রেওয়াজও রয়েছে। এ প্রথাটি আন্তর্জাতিকভাবেও প্রচলিত ছিল।

সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে নিহত বীর শহীদদের প্রতি গান স্যালুট প্রদর্শন করেছে।

বাংলাদেশে স্বাধীনতা ও বিজয় দিবসে তোপধ্বনির মাধ্যমে শ্রদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধাদের সামরিক অভিবাদন জানানো হয়ে থাকে। এ দুই দিবসেই ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে সম্মান জানানো হয়। আবার বাংলাদেশে অন্য কোনো দেশের রাষ্ট্র বা সরকারপ্রধান বা আন্তর্জাতিক বিশিষ্ট কোনো ব্যক্তিকে শ্রদ্ধা জানাতে ২১ বার তোপধ্বনি দেওয়া হয়।

কখনো ভেবে দেখেছেন কেন স্বাধীনতা ও বিজয় দিবসে ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে সম্মান জানানো হয়?

ইতিহাস বলে, এই তোপধ্বনির রীতিটা শুরুটা হয়েছিল চতুর্দশ শতকে। সে সময় নৌবিদ্যায় পারদর্শীরাই পুরো বিশ্বে রাজত্ব করত। যার ফলে অধিকাংশ যুদ্ধই হতো নৌপথে। কোনো যুদ্ধজাহাজে গোলাবারুদ শেষ হয়ে গেলে রিলোর্ড করা পর্যন্ত সেটি অসহায় অবস্থায় পড়ে থাকত। সে অবস্থায় জাহাজটি স্থলভাগের সৈনিকদের কামানের গোলার মাধ্যমে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ইঙ্গিত দিত। তাই বিদেশের বন্দরে যখন কোনো যুদ্ধজাহাজ প্রবেশ করে তখন এভাবে তোপধ্বনি দিয়ে তারা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে সম্মান প্রদর্শন করে।

আবার ওই সময় কোনো জাহাজ যখন যুদ্ধের জন্য বন্দর ছেড়ে যেত তখন স্থলভাগ ও জাহাজের ভেতর দুই স্থান মিলিয়ে মোট ২১ বার তোপধ্বনি দেওয়া হতো। পরবর্তীতে এই ২১ বারের তোপধ্বনির বিষয়টি একটি চুক্তির মাধ্যমে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি পায়। এটি বর্তমানে সারা বিশ্বে প্রচলিত রয়েছে।

তাহলে ৩১ বার তোপধ্বনির কেন দেওয়া হয়-

বিশ্বের অন্যান্য দেশে ২১ বার তোপধ্বনি দেওয়ার প্রচলন থাকলেও ব্রিটিশ উপনিবেশিক দেশগুলো এই নিয়মে কিছুটা পরিবর্তন এনে ৩১ বার নির্ধারণ করে। বিষয়টি এমন যে, যখন কোনো যুদ্ধজাহাজ বন্দর বা ঘাঁটি ছেড়ে বের হয় তখন সেই জাহাজ থেকে ৭ বার তোপধ্বনি দেওয়া হয়। ঘাঁটিতে বা বন্দরে অর্থাৎ মাটিতে সৈনিকদের যে দল বা ব্যাটারি থাকে তারাও সেই তোপধ্বনির জবাবে ২১ বার তোপধ্বনি দিয়ে সম্মান প্রদর্শন করে। জাহাজ থেকে ৭ বার, মাটি থেকে ২১ বার মোট ২৮ বার তোপধ্বনি করার পর জাহাজ থেকে আরও তিনবার তোপধ্বনি করা হয়। সেই অতিরিক্ত তিনটি তোপধ্বনির একটা করা হয় ব্রিটিশ রাজা বা রানির সম্মানে, অন্যটা জাহাজের ক্যাপ্টেনের জন্য এবং শেষটা হচ্ছে ব্রিটিশ বাহিনীর রাজকীয় প্রতিনিধির জন্য।

এদিকে জাহাজ ছেড়ে যাওয়ার প্রেক্ষাপট ছাড়াও ব্রিটিশ ক্রাউন ভারতীয় উপমহাদেশে বিভিন্ন অঞ্চলের রাজা বা তার প্রতিনিধিদের শ্রদ্ধা জানাতে তোপধ্বনি প্রথা চালু হয়েছিল।

তবে, বাংলাদেশে ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে দেশের সূর্যসন্তানদের সম্মান জানানো হয়। তবে, এই সম্মানের সঙ্গে তোপধ্বনির সংখ্যার সেই অর্থে কোনো সম্পর্ক নেই। কোথাও ৭ বার, কোথাও ২১ বার আবার ৩১ বারও এই তোপধ্বনি হয়।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

১৫ বছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামি গ্রেপ্তার

জানা গেল আনুশকার ‘ঘাঁটি’ মুক্তির তারিখ 

বিকল্প কৃষি বাজার চালু করবে সরকার

আজ ১২ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না যেসব এলাকায়  

আবারও আরব-ইসরায়েল যুদ্ধের শঙ্কা!

মির্জা ফখরুলের সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে যা জানা যাচ্ছে

গাজীপুরে মহান বিজয় দিবসের আনুষ্ঠানিকতা শুরু

তাহিরপুর উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতিসহ আটক ৪

রাজারবাগ পুলিশ স্মৃতিসৌধে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ও আইজিপির শ্রদ্ধা

স্মৃতিসৌধে অসুস্থ হয়ে লুটিয়ে পড়লেন মির্জা ফখরুল

১০

প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে ‘জাতীয় ঐক্যমত গঠন কমিশন’

১১

কিশোরগঞ্জে পিকআপভ্যান-অটোরিকশার সংঘর্ষে নিহত ৫

১২

নির্বাচন করতে সরকারকে সহযোগিতা করবে ইইউ : প্রধান উপদেষ্টা

১৩

বিজয় দিবসে দেওয়া হয় না শ্রদ্ধাঞ্জলি, অযত্নে মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিস্তম্ভ

১৪

স্বাধীনতা ও বিজয় দিবসে ৩১ বার তোপধ্বনি কেন ?

১৫

দিনাজপুরে তাপমাত্রা নামল ১০ ডিগ্রিতে

১৬

৩ ঘণ্টা পর দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ফেরি চলাচল শুরু

১৭

নির্বাচন কবে হতে পারে জানালেন প্রধান উপদেষ্টা

১৮

প্রধান উপদেষ্টার ভাষণ শুরু

১৯

ফ্রান্সের মায়োটে ভয়াবহ সাইক্লোন, শত শত মানুষের মৃত্যুর শঙ্কা

২০
X