রাত পোহালেই মহান বিজয় দিবস। জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের শ্রদ্ধা নিবেদনে প্রস্তুত সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধ। রঙ-তুলিতে সাজিয়ে তোলা হয়েছে পুরো এলাকা। আল্পনায় উঠে এসেছে বিজয়ের আনন্দচিত্র। বিজয় দিবসকে কেন্দ্র করে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
বিজয় দিবসের প্রথম প্রহরে বীর সন্তানদের শহীদ বেদিতে শ্রদ্ধা জানাবেন রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টাসহ দেশের বিশিষ্টজন। সাধারণ মানুষের জন্য উন্মুক্ত করা হবে স্মৃতিসৌধ। নামবে সাধারণ মানুষের ঢল। আয়োজনকে কেন্দ্র করে অনেকটাই প্রস্তুত সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধ। রঙ-তুলির শেষ আঁচড়ে স্পষ্ট হচ্ছে সৌন্দর্য বর্ধনের কাজ। প্রধান ফটক থেকে বেদি পর্যন্ত সাজিয়ে তোলা হয়েছে নানা বর্ণের বর্ণিলতায়।
গেল এক মাস ধরে স্মৃতিসৌধের সৌন্দর্য বর্ধনে কাজ করছে গণপূর্ত অধিদপ্তর। সড়কের পাশে স্থাপন করা হয়েছে রঙিন গাছ। ছোট-বড় গাছ ও ফুলের গাছগুলো কেটেছেটে করা হয়েছে পরিপাটি।
গণপূর্ত অধিদপ্তর বলছে, বিজয় দিবসের আনুষ্ঠানিকতার জন্য প্রস্তুত জাতীয় স্মৃতিসৌধ। নিরাপত্তার বিষয়টিও সর্বোচ্চ পর্যায়ে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে বলে জানায় পুলিশ।
মহান বিজয় দিবসের সকালে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে শুরু হবে শ্রদ্ধা নিবেদনের আনুষ্ঠানিকতা। এরপর সর্বসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হবে সৌধের ফটক।
গতকাল স্মৃতিসৌধে গিয়ে দেখা যায়, স্মৃতিসৌধ চত্বরের বিভিন্ন সড়ক পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলা হয়েছে। বিভিন্ন স্থানে নতুন ফুলের চারা রোপণ করা হয়েছে। সড়কবাতিগুলোর লোহার পাইপে নতুন করে রঙের আঁচড় পড়েছে। স্মৃতিসৌধের ফটকে স্মৃতিসৌধ দেখতে ভিড় করেছেন অনেকে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের কাছ থেকে নিরাপত্তার স্বার্থে জনসাধারণের প্রবেশ ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত বন্ধ থাকার বিষয়টি জানার পর ফটকের খানিকটা দূরে দাঁড়িয়ে স্মৃতিসৌধ দেখছেন তারা।
এদিকে স্মৃতিসৌধ সংলগ্ন ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে নতুন সড়কবাতি লাগানো, সড়ক বিভাজকে নতুন করে রঙ দেওয়া ও সড়কে জমে থাকা ধুলোবালি সরিয়ে নিতে দেখা গেছে।
গণপূর্ত অধিদপ্তর জানায়, ১৫ দিন আগে স্মৃতিসৌধে সর্বসাধারণের প্রবেশ বন্ধ করা হয়। এরপর থেকেই দিন-রাত শুরু হয় সংস্কার কাজ। এরই মধ্যে প্রস্তুত জাতীয় স্মৃতিসৌধ।
জাতীয় স্মৃতিসৌধের ইনচার্জ ও সাভার গণপূর্ত বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বলেন, ১৬ ডিসেম্বর স্মৃতিসৌধে মানুষের ঢল নামবে। রাষ্ট্রপতি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টাসহ দেশ-বিদেশের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা এদিন শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন। আমরা গণপূর্ত অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে পুরো স্মৃতিসৌধ চত্বর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করাসহ নানাভাবে সাজিয়েছি।
স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণ পরিদর্শন শেষে ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি একেএম আওলাদ হোসেন বলেন, সুন্দর ও সুশৃঙ্খলভাবে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের প্রতি সবাই যেন শ্রদ্ধা জানাতে পারেন সে লক্ষ্যে পাঁচ স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। আশপাশের যেসব জেলা রয়েছে এগুলোও আমাদের নিরাপত্তা বলয়ের মধ্যে চলে আসবে। সারা দেশের মানুষ আনন্দঘন পরিবেশে বিজয় দিবস উদযাপন করবেন তাই এখন পর্যন্ত কোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার শঙ্কা নেই।
মন্তব্য করুন