জনস্বাস্থ্য সুরক্ষা ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে নিরাপদ রাখার লক্ষ্যে ই-সিগারেট বা ইলেকট্রনিক নিকোটিন ডেলিভারি সিস্টেম (ইএনডিএস) সংশ্লিষ্ট সব পণ্যের আমদানি নিষিদ্ধ করার বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ। জনস্বাস্থ্যের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে সরকারের গৃহীত এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছে বাংলাদেশ তামাকবিরোধী জোট।
শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ তামাকবিরোধী জোটের দপ্তর সম্পাদক সৈয়দা অনন্যা রহমানের পাঠানো এক বিবৃতিতে এ স্বাগত জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, তরুণ প্রজন্মকে নেশায় আসক্ত করতে ইমার্জিং টোব্যাকো প্রোডাক্টসের (ভ্যাপিং, ই-সিগারেট) প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছে তামাক কোম্পানি। এটিকে তামাকের বিকল্প বা তামাক ছাড়ার উপায় হিসেবে প্রচার করা হলেও বাস্তবে ই-সিগারেট নতুন ধরনের নেশা তৈরির মাধ্যম। স্কুল কলেজের কিশোর ও তরুণদের মধ্যে এই ক্ষতিকর পণ্যটির ব্যবহার উদ্বেগজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
এতে আরও বলা হয়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা হিট-নট-বার্ন বা ই-সিগারেট যে নামেই অবহিত করা হোক না কেন এ ধরনের পণ্যকে শরীরের জন্য ক্ষতিকর হিসেবে চিহ্নিত করেছে। ইউএস সার্জন জেনারেল রিপোর্ট অনুযায়ী, ই-সিগারেট ব্যবহারে হার্ট এট্যার্ক, স্ট্রোক ও ফুসফুসের ক্ষতি হয়। ই-সিগারেট ব্যবহারের ভয়াবহতা উপলব্ধি করে ইতোমধ্যেই ৪২টি দেশ তাদের ই-সিগারেটকে সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ করেছে এবং আরও ৫৬টি দেশ ই-সিগারেট ক্রয়-বিক্রয়ের ওপর বাধ্যবাধকতা আরোপ করেছে।
সরকারের পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, ইতোমধ্যেই স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার পল্লি উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়, রেল মন্ত্রণালয় তামাক নিয়ন্ত্রণে নানাবিধ ইতিবাচক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে যা সারা বিশ্বে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। এরই ধারাবাহিকতায় সংবিধান ও মহামান্য হাইকোর্ট এর নিদের্শনা বাস্তবায়নে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আমদানি নীতি আদেশে ‘আমদানি নিষিদ্ধ পণ্য’ তালিকায় ই-সিগারেট বা ইলেকট্রনিক নিকোটিন ডেলিভারি সিস্টেম অন্তর্ভুক্ত করায় বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট এর পক্ষ থেকে অভিনন্দন।
বাংলাদেশ তামাকবিরোধী জোট মনে করে তরুণদের সুরক্ষায় এ ধরনের পদক্ষেপ বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থানকে আরও সুদৃঢ় করবে। তামাকবিরোধী জোট আরও মনে করে শুধু একক কোনো মন্ত্রণালয়ের প্রচেষ্টায় তামাক নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। তামাক চাষ নিয়ন্ত্রণ, কর বৃদ্ধি, আইন বাস্তবায়ন প্রভৃতি বিষয়গুলোর সঙ্গে কৃষি, অর্থ, স্বরাষ্ট্র ইত্যাদি মন্ত্রণালয়ের সম্পৃক্ততা রয়েছে। কাজেই তামাক নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজন সংশ্লিষ্ট সকল মন্ত্রণালয়ের সমন্বিত পরিকল্পনা এবং তার সুষ্ঠু বাস্তবায়ন।
মন্তব্য করুন