সাংবাদিকদের বেতন পরিশোধে তালবাহানা ও চাকরিচ্যুতিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে)’র নির্বাহী পরিষদ। একইসঙ্গে বেশ কয়েকটি গণমাধ্যমে বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের তল্পিবাহকদের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে পদোন্নতি দিয়ে জাতীয়তাবাদী ও ইসলামী মূল্যবোধে বিশ্বাসী সাংবাদিকদের চাকরিচ্যুতিসহ কোনো কোনো ক্ষেত্রে পদাবনতির প্রতিবাদ জানিয়েছে সংগঠনটি।
বুধবার (১১ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে অনুষ্ঠিত ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে)’র নির্বাহী পরিষদের সভায় শিগগিরই বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সাংবাদিকদের বকেয়া বেতনভাতা পরিশোধ করার দাবি জানানো হয়। বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) রাতে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) নির্বাহী সদস্য এম. মোশাররফ হোসাইন প্রেরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।
ডিইউজে সভাপতি মো. শহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক খুরশীদ আলমের পরিচালনায় সভায় নির্বাহী পরিষদের কর্মকর্তা ও ইউনিট প্রধানগণ বক্তব্য রাখেন।
সভায় বলা হয়, নানা অজুহাতে প্রতিদিনের বাংলাদেশসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মালিকপক্ষ দীর্ঘদিন ধরে সাংবাদিকদের বেতন-ভাতা ও ন্যায্য পাওনা পরিশোধে গড়িমসি করছে। ফলে এসব প্রতিষ্ঠানে কর্মরত সাংবাদিকরা তাদের পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। পতিত ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসররা আগের মতোই এখনো সরকারের সকল সুযোগ-সুবিধা নিলেও সাংবাদিকদের বেতনভাতা পরিশোধে নানা ছল-চাতুরির আশ্রয় নিচ্ছে। ডিইউজের নির্বাহী পরিষদ নিয়মিত বেতন পরিশোধসহ অবিলম্বে সকল পাওনা পরিশোধের দাবি জানায়।
সভায় আরও বলা হয়, সম্প্রতি দৈনিক ইনকিলাবে জনৈক নুরুল ইসলামের মালিকানাধীন নোমান গ্রুপ শিল্প পরিবারের বিরোধপূর্ণ সম্পত্তি বন্ধক রেখে ঋণের নামে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট, বাংলাদেশ ব্যাংকের বন্ধকি সম্পত্তি বন্ধক রেখে ঋণগ্রহণ, বিদেশে অর্থপাচারসহ নানা বিষয়ে একাধিক অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ নুরুল ইসলাম তার ভাড়াটে সন্ত্রাসীদের দিয়ে প্রতিবেদক সাঈদ আহমেদ খানকে হত্যার হুমকি, পত্রিকার সম্পাদকসহ তার বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে নানাভাবে হয়রানি করছে। এ ব্যাপারে গত ৪ ডিসেম্বর ডিএমপির ওয়ারি থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে, যার নম্বর ১৯৭। ডিইউজে নির্বাহী পরিষদ অবিলম্বে তদন্তপূর্বক যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানায়।
সভায় বিগত সরকারের সময় বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থায় (বাসস) নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্তদের বিষয়ে তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা না নিয়ে তাদের কারো কারো পদোন্নতির ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। সভায় অবিলম্বে বিগত সরকারের আমলে বাসসে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা লোপাটের ঘটনা তদন্তের মাধ্যমে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হয়।
সভায় বক্তব্য রাখেন ডিইউজের সহসভাপতি রাশেদুল হক, যুগ্ম সম্পাদক দিদারুল আলম দিদার, কোষাধ্যক্ষ খন্দকার আলমগীর হোসাইন, প্রচার সম্পাদক আবুল কালাম, ক্রীড়া ও সংস্কৃতি সম্পাদক কবি রফিক লিটন, জনকল্যাণ সম্পাদক সালাহ উদ্দিন রাজ্জাক, দপ্তর সম্পাদক ইকবাল মজুমদার তৌহিদ, নির্বাহী সদস্য নিজাম উদ্দিন দরবেশ, রাজু আহমেদ, এম মোশাররফ হোসেন, তালুকদা রুমি, আনোয়ারুল হক, আবদুল্লাহ মজুমদার, ফখরুল ইসলাম, দৈনিক আমার দেশ ইউনিট প্রধান বাছির জামাল, বাসস-এর ইউনিট প্রধান ফজলুল হক, দিনকালের ইউনিট প্রধান মিজানুর রহমান, নয়াদিগন্তের হামীম উল কবীর, দিগন্ত টিভির আবু বকর, দৈনিক সমাচারের ইউনিট প্রধান আবু হানিফ, মুক্ত খবরের ডেপুটি ইউনিট প্রধান আবদুর রহিম প্রমুখ।
মন্তব্য করুন