বাংলাদেশ-ভারতের পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ে বৈঠক হয়েছে। রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় শুরু হওয়া বৈঠকে ভারতের পক্ষে নেতৃত্ব দেন দেশটির পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি। বাংলাদেশের নেতৃত্ব দেন পররাষ্ট্রসচিব মো. জসীম উদ্দিন।
সোমবার (৯ ডিসেম্বর) সকাল ১০টার দিকে ভারতের পররাষ্ট্রসচিবের গাড়িবহর পদ্মায় প্রবেশ করে।
এর আগে সকালে বিক্রম মিশ্রি ভারতীয় বিমানবাহিনীর একটি বিশেষ ফ্লাইটে ঢাকা আসেন।
এদিন বিকেল সাড়ে ৪টায় যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করবেন বিক্রম মিশ্রি।
গত বছরের নভেম্বরে দিল্লিতে সর্বশেষ পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ে বৈঠক হয়। প্রতিবছর ভারতের সঙ্গে ফরেন অফিস কনসালটেশন (এফওসি) হলেও এবারের বৈঠককে গুরুত্বপূর্ণভাবেই দেখছে দুই দেশ।
কারণ হিসেবে বিশ্লেষকরা বলছেন, আজকের এই বৈঠক এমন এক সময়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে, যখন বেশকিছু ইস্যু নিয়ে দুদেশের কূটনৈতিক সম্পর্কে বড় ধরনের ফাটল ধরেছে। আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে শেখ হাসিনা দিল্লিতে আশ্রয় নেওয়ার পর থেকেই ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি হতে শুরু করে। আর সম্মিলিত সনাতন জাগরণী মঞ্চের মুখপাত্র ও সাবেক ইসকন নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেপ্তার যেন সেই আগুনে ঘি ঢেলে দিয়েছে। তাই দুই পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের আলোচনায় সাম্প্রতিক নানা ইস্যু উঠে আসার পাশাপাশি তা সমাধানের পথ নিয়ে আলোচনা হতে পারে বলে এরই মধ্যে নিশ্চিত করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র। তবে সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোর ঘটনাপ্রবাহ দুই দেশের মধ্যে যে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে, তাতে এই বৈঠকে কী আলোচনা হয় এবং এখান থেকে নতুন কোনো দিকে পরিস্থিতি মোড় নেয় কি না, তা নিয়ে আগ্রহ আছে মানুষের।
সফরে দুদেশের দ্বিপক্ষীয় বিষয়গুলো পর্যালোচনার পাশাপাশি, রাজনৈতিক বোঝাপড়া, ভারতীয় গণমাধ্যমের বাংলাদেশ বিরোধী অপপ্রচার, ভারতে বসে শেখ হাসিনার বক্তব্য, ভিসার জট খোলা, সীমান্ত হত্যা, অভিন্ন নদীর পানিবণ্টন, ভারত থেকে নিত্যপণ্য আমদানি এবং বাংলাদেশ থেকে দেশটিতে রপ্তানির নানা বাধা সরানোসহ বিভিন্ন বিষয় আলোচনা হতে পারে। বিশ্লেষকদের অনেকে মনে করেন, পররাষ্ট্র সচিবদের বৈঠক থেকে বড় কিছু অর্জনের সুযোগ না থাকলেও, বিদ্যমান পরিস্থিতিতে দুই দেশ বৈঠক বা আলোচনায় বসেছে—এটাই হবে একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি।
সোমবার রাতেই দিল্লি ফিরে যাওয়ার কথা রয়েছে ভারতের পররাষ্ট্র সচিবের।
মন্তব্য করুন