সম্প্রতি সংখ্যালঘুদের ওপর কথিত হামলার দাবি তুলে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যকার সম্পর্কে টানাপোড়ন দেখা দিয়েছে। উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে সীমান্ত এলাকায়। এমন পরিস্থিতিতে ভারতের কিছু সংবাদ মাধ্যমে বেশ কিছু রিপোর্ট দেখানো হচ্ছে। যা উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
সংবাদ মাধ্যম ছাড়াও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে বিভিন্ন ভিডিও প্রকাশ হচ্ছে। যা ভিত্তিহীন বলে জানা যাচ্ছে। এবার একটি ভিডিও প্রচার করে দাবি করা হচ্ছে, সম্প্রতি বাংলাদেশে একাধিক হিন্দু নারী ও শিশুকে মুসলিমরা ধর্ষণের পর হত্যা করেছে। তবে এটি ভিন্ন ঘটনার ভিডিও বলে জানিয়েছে ফ্যাক্ট চেক বা তথ্য যাচাই সংস্থা রিউমর স্ক্যানার।
শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে বিষয়টি নিশ্চিত করে সংস্থাটি বলছে, প্রচারিত ভিডিওটি মুসলিম কর্তৃক হিন্দু নারী ও শিশুদের ধর্ষর্ণের পর হত্যার ঘটনার নয়। এমনকি দৃশ্যটি বাংলাদেশেরও নয় বরং, গত জুলাইয়ে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ধর্মীয় উৎসবে পদদলিত হয়ে শতাধিক নারী ও শিশু নিহতের ঘটনার ভিডিও এটি।
অনুসন্ধানে অভিনন্দন কুমার নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে গত ৩ জুলাই প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর দৃশ্যের সাথে আলোচিত ভিডিওর মিল রয়েছে।
হিন্দি ভাষায় লেখা ভিডিওটির ক্যাপশন ভাষান্তর করে জানা যায়, উত্তর প্রদেশে হাতরাসে যাওয়ার সময় পদদলিত হয়ে ১২২ জন নিহত হয়েছেন। এদের মধ্যে অধিকাংশই নারী ও শিশু।
আরও অনুসন্ধানে চন্দ্রশেখর নামের একটি ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট থেকে গত ৫ জুলাই প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথেও আলোচিত ভিডিওর মিল রয়েছে।
উক্ত অ্যাকাউন্টটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এটি একজন ভারতীয় ব্যবহারকারীর অ্যাকাউন্ট।
পরবর্তী অনুসন্ধানে ভারতীয় গণমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে এর ওয়েবসাইটে ৫ জুলাই “Hathras stampede | A litany of lapses” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ২ জুলাই উত্তর প্রদেশের ফুলরাই গ্রামে হাতরাস অনুষ্ঠানে পদদলিত হয়ে অন্তত ১২৩ জন নিহত হয়েছেন। এরমধ্যে প্রায় সকলেই নারী ও শিশু।
একই তথ্যে সে সময় সংবাদ প্রকাশ করে ভারতীয় গণমাধ্যম নিউজ১৮ ও হিন্দুস্তান টাইমস।
সুতরাং ভারতে পদদলিত হয়ে নারী ও শিশু নিহতের দৃশ্যকে বাংলাদেশে মুসলিম কর্তৃক হিন্দু নারী ও শিশুকে ধর্ষর্ণের পর হত্যা করার দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।
মন্তব্য করুন