দেশে দ্রুত শান্তি-শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে সচেষ্ট ভূমিকা পালন করার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আহ্বান জানিয়েছেন পুণ্ড্র ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির উপাচার্য প্রফেসর ড. চিত্তরঞ্জন মিশ্র।
বৃহস্পতিবার (০৫ নভেম্বর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ আহ্বান জানান তিনি।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, আমি বাংলাদেশের একজন সচেতন নাগরিক। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এ দেশে ধর্ম, বর্ণ, গোত্র, জাতি নির্বিশেষে দেশের সার্বিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় পুণ্ড্র বিশ্ববিদ্যালয়ের অসংখ্য ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শুভানুধ্যায়ীদের অভিমত দৃষ্টে আমি মনে করি যে, এ দেশ মুসলমান, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান সব ধর্মের মানুষের রক্তের বিনিময়ে পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে মুক্ত একটি স্বাধীন ভূখণ্ড। এটিই আমাদের মাতৃভূমি। বিশ্বের একটি বৃহৎ গণতান্ত্রিক দেশ ভারত, যার সক্রিয় সহযোগিতায় ১৯৭১ সালে ৯ মাসে বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করে।
তিনি আরও বলেন, এ দেশে বিগত সরকারের আমলে এক শ্রেণির দলীয় নেতাকর্মী, সংসদ সদস্য, মন্ত্রী, সরকারি আমলা ও তাদের দোসরদের সৃষ্ট ব্যাপক দুর্নীতি, অর্থ আত্মসাৎ ও বিদেশে এ দেশের সম্পদ পাচারসহ নানা ধরনের অন্যায় ও উন্নয়নবিরোধী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত থাকার ঘটনা খুবই দুঃখজনক।
ড. চিত্তরঞ্জন মিশ্র বলেন, বর্তমান সরকারের প্রতি আমাদের উদাত্ত আহ্বান, সব ধরনের দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় এনে দেশে সুশাসন ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করুন। বিগত শাসন আমলে সরকারের অনেক ক্ষেত্রে সুশাসনের অভাবে দেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের ফলে ব্যাপক পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। দেশে দ্রুত শান্তি-শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে সচেষ্ট ভূমিকা পালন করার জন্য আমরা বর্তমান সরকারের কাছে আহ্বান জানাই।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ একটি উদার ও অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক দেশ। এখানে আবহমানকাল থেকে ধর্মীয় ক্ষেত্রে উদারতা নিয়ে সব ধর্মের মানুষ তাদের ধর্ম চর্চা করে অত্যন্ত সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতির সঙ্গে বসবাস করে আসছে। বর্তমান সরকার সে ধারাবাহিকতা বজায় রাখার ক্ষেত্রে সচেষ্ট হবে বলে আমরা আশাবাদী। এর আগে দেশে বিভিন্ন সরকারের শাসন আমলে এক শ্রেণির মানুষ এ দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের অপপ্রয়াসে লিপ্ত ছিল, যা খুবই দুঃখজনক।
ড. চিত্তরঞ্জন মিশ্র আরও বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে আমাদের পাশের গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশন কার্যালয়ে সে দেশের কিছু হামলাকারী বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা অবমাননা করেছে, যা মোটেও কাম্য নয়। এ ঘটনার বিষয়ে ঢাকার ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা বাংলাদেশ সরকারকে তার সরকারের অবস্থান অবহিত করেছেন। আমরা এসব বিষয়ের প্রকৃত অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে আমাদের বন্ধু প্রতীম ভারত সরকারকে পূর্বের ন্যায় বাংলাদেশের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখার জন্য উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।
মন্তব্য করুন