অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুলের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন।
বুধবার (৪ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব মুহাম্মদ মাহবুবুর রহমান স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ প্রতিবাদ জানানো হয়।
গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার রক্তের বিনিময়ে দ্বিতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামের মাধ্যমে ফ্যাসিস্ট সরকারকে উৎখাত করে আমরা একটি পরিবর্তিত বাংলাদেশ পেয়েছি যা বিনির্মাণে কাজ করে যাচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার। জুলাই ৩৬ বিপ্লবী অভ্যুত্থান ও বিগত ১৫ বছরের ফ্যাসিস্ট সরকারের দুঃশাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলনকারী ছাত্র-জনতার সম্মুখসারিতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যুদ্ধ করা অন্যতম অগ্রসৈনিক ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বনামধন্য শিক্ষক ড. আসিফ নজরুল। ছাত্র-জনতার অকুতোভয় প্রতিনিধি হিসেবে এবং বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল মহোদয় যখন দিনরাত দেশ পুনর্গঠনের কাজে অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন তখন একটি বিভ্রান্ত ও হঠকারী গোষ্ঠী অন্তর্বর্তী সরকারের এই বিপ্লবী উপদেষ্টাকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়াসহ অন্যান্যভাবে অপতথ্য ছড়িয়ে জনমনে বিভ্রান্তি তৈরি করার অপপ্রয়াসে লিপ্ত হয়েছেন মর্মে আমরা লক্ষ্য করছি যা সত্যিই দুর্ভাগ্যজনক।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, বিগত সরকারের আমলে যে গুটিকয়েক মানুষ স্বৈরাচারের দুঃশাসন ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিবাদ করে গেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল তাদের মধ্যে অন্যতম। বিগত ১৫ বছরে সরকারের সমালোচনা করার কারণে সন্ত্রাসী সংগঠন ছাত্রলীগ ক্লাসরুম এবং ক্লাসরুমের বাইরে তাকে ক্রমাগত অপদস্ত এবং মানসিক নির্যাতন করেছে যা আমরা সবাই জানি। প্রগতিশীল চিন্তা চেতনার অধিকারী সত্যভাষী ও নীতিতে অবিচল থেকে তিনি নিপীড়িত এবং গণমানুষের পক্ষে নিরপেক্ষ থেকে সব সময় নৈতিক অবস্থান নিয়ে কথা বলে গেছেন। জুলাই ২৪ এর মাঝামাঝিতে যখন স্বৈরাচারী সরকারের ও প্ররোচনায় নির্বিচার গণহত্যা শুরু হয়েছে তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অল্পকিছু শিক্ষক সর্বপ্রথম শিক্ষার্থীদের পক্ষে রাজপথে নেমে এসেছিলেন। তাদের মধ্যে সকল ঝুঁকি নিয়ে অন্যতম ভূমিকা পালন করেন ড. আসিফ নজরুল স্যার। স্বৈরাচারের আজ্ঞাবাহী পুলিশের একটি অংশ যখন অন্যায়ভাবে ক্যাম্পাস থেকে ছাত্রদের আটক করে থানায় আটকে রেখেছিল তখন তিনিসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবেকবান শিক্ষকেরা ছাত্রছাত্রীদের থানা থেকে ছাড়িয়ে আনেন। ৩ আগস্ট যখন পুরো দেশ অগ্নিগর্ভ, যখন রাজপথের প্রতিটি পদক্ষেপ মৃত্যুর সঙ্গে সন্ধির অপেক্ষায় ছিল, তখন আমাদের বিপ্লবী ছাত্র-জনতার সাথে রাজপথের সামনের সারিতে যেভাবে নেতৃত্ব দিয়েছেন ড. আসিফ নজরুল সেটিও আমাদের অজানা নয়। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, কোনো তথ্য-প্রমাণ ও নির্ভরযোগ্য সূত্র ছাড়াই ৩ এবং ৪ আগস্ট ড. আসিফ নজরুলের ক্যান্টনমেন্টে অবস্থান করা এবং প্রতিবেশী দেশের আজ্ঞাবাহীদের নিয়ে সরকার গঠনের চক্রান্ত করার যে অভিযোগ একটি মহল তুলেছে তা সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং অন্তর্বর্তী সরকারকে বেকায়দায় ফেলার একটি চক্রান্ত বলে আমরা মনে করি। মাননীয় উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুলকে বিগত ৭ নভেম্বর জেনেভায় বিমানবন্দরে স্বৈরাচারের সমর্থক কিছু দুষ্কৃতকারী হেনস্তা করা এবং পরবর্তীতে ধারাবাহিকভাবে তাঁর নামে ভিত্তিহীন তথ্য ছড়ানো এই চক্রান্তেরই অংশ বলে প্রতীয়মান হচ্ছে।
আমরা বিশ্বাস করি তথ্য-প্রমাণ এবং যথাযথ অনুসন্ধানী প্রক্রিয়া ব্যতিরেকে বানোয়াট তথ্য উপস্থাপনার মাধ্যমে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার কাজে লিপ্ত হয়ে এবং অন্তর্বর্তী সরকারকে প্রশ্নবিদ্ধ করার অপপ্রয়াসের মাধ্যমে জনমনে এবং জনপ্রশাসনে বিরূপ প্রভাব তৈরি না করার জন্য বাংলাদেশ এডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষে তীব্র নিন্দা জ্ঞাপনসহ এরূপ অপপ্রচার হতে বিরত থাকার জন্য সকল মহলের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।
মন্তব্য করুন