উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ বলেন, নারী ও কন্যাশিশুর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে গণমাধ্যম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ নারী ও শিশু নির্যাতন মুক্ত হবে। যা বৈষম্যহীন নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে সহায়ক হবে।
বুধবার (২৭ নভেম্বর) মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের উইন্ডি টাউন হলে লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতার বিরুদ্ধে ১৬ দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষের এবারের প্রতিপাদ্য ‘নারী-কন্যার সুরক্ষা করি, সহিংসতা মুক্ত বিশ্ব গড়ি।’
অুনষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক গউইন লুইস এবং বাংলাদেশে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিদলের রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মমতাজ আহমেদ এনডিসি।
বিশেষ অতিথি মাইকেল মিলার, বাংলাদেশে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধি দলের রাষ্ট্রদূত, আইনি কাঠামো উন্নয়নের ওপর জোর দিয়ে বলেন, আমরা ২০০৯ সালের উচ্চ আদালতের নির্দেশনাকে স্বীকার করি। তবে বর্তমান সরকারের কাছে আমাদের প্রত্যাশা আছে- খসড়া যৌন হয়রানি প্রতিরোধ আইনটি গৃহীত ও বাস্তবায়ন করা। পাশাপাশি, ২০১০ সালের পারিবারিক সহিংসতা প্রতিরোধ ও সুরক্ষা আইনকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করা জরুরি।
বিশেষ অতিথি, জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক গুইন লুইস বলেন, লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা প্রতিরোধে ১৬ দিনের এই কর্মসূচির এই সময়টিকে দীর্ঘমেয়াদি পরিবর্তনের প্রভাবক হিসেবে ব্যবহার করতে আহ্বান জানাই। যে পদক্ষেপগুলোর কার্যকারিতা আমরা জানি সেগুলোর প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হোন, আইন বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ করুন, সহিংসতা প্রতিরোধ করুন এবং ক্ষতিগ্রস্তদের সুরক্ষা নিশ্চিত করুন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তাসলিমা ইয়াসমিন একটি প্রেজেন্টেশন তুলে ধরেন। তিনি পারিবারিক সহিংসতা প্রতিরোধ ও সুরক্ষা আইন, ২০১০ সংশোধন এবং খসড়া কর্মস্থল ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যৌন হয়রানি প্রতিরোধ আইন প্রণয়নের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন।
এ ছাড়া বাংলাদেশ শিশু একাডেমি মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মমতাজ আহমেদ এনডিসি, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কেয়া খান, বাংলাদেশ শিশু একাডেমির মহাপরিচালক তানিয়া খান, যুগ্ম সচিব ড. প্রকাশ কান্তি চৌধুরী এবং মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বেতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ বলেন, জুলাই বিপ্লব পরবর্তী বর্তমান প্রেক্ষাপট বিবেচনাপূর্বক এবারই প্রথম ব্যাপকভাবে তৃণমূল পর্যন্ত নারী ও কন্যাশিশু নির্যাতন, বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে নজরদারির মধ্যে আনতে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়, বিভাগ, দপ্তর, সংস্থা, বেসরকারি সংস্থা, ডেভেলপমেন্ট পার্টনার, সিভিল সোসাইটি অর্গানাইজেশন, স্যোসাল ওয়ার্কার, যুব ফোরাম, বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত উদীয়মান ইনফ্লুয়েন্সার, শিক্ষার্থী ও সমাজের সকল শ্রেণি পেশার মানুষকে সম্পৃক্ত করে দেশব্যাপী বিভিন্ন প্রচার-প্রচারণমূলক কার্যক্রমসহ বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
মন্তব্য করুন