চট্টগ্রামে আদালত চত্বরে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যার ঘটনায় উদ্ভূত পরিস্থিতে সরকারের কী পদক্ষেপ তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট।
বুধবার (২৭ নভেম্বর) একাধিক গণমাধ্যমের প্রতিবেদন উপস্থান করে ইসকন নিষিদ্ধ ও ইমার্জেন্সি ঘোষণার প্রার্থনা পেশ করে উচ্চ আদালতের স্বপ্রণোদিত আদেশ চান এক আইনজীবী। বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ এ বিষয়ে এটর্নি জেনারেলের বক্তব্য শোনেন।
এটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বিষয়টি নিয়ে আদালতে বক্তব্য দেন। ওই বিষয়ে আগামীকাল সরকারের নেওয়া পদক্ষেপ জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট। রাষ্ট্রপক্ষ এ বিষয়ে আগামীকাল অগ্রগতি জানাবে।
এটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান সাংবাদিকদের জানান, আজ একজন আইনজীবী পত্রিকা নিয়ে আদালতের দৃষ্টিতে আনেন। সুয়োমোটো রুল ইস্যু করার জন্য। তার প্রার্থনার মূল প্রতিপাদ্য ছিল, ইসকনকে যেন নিষিদ্ধ করা হয় এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপরে যাতে নির্দেশ দেওয়া হয় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে এই ঘটনাটি তদন্ত করে দোষীদের আইনের আওতায় আনা এবং ইমার্জেন্সি ঘোষণা করানো। আগামী অন্তত দুই সপ্তাহ। এই পরিস্থিতে আদালত আমাকে ডেকে পাঠান। আমি আদালতের সামনে গিয়ে বলি ইসকনের ইস্যুটা দুর্ভাগ্যজনক। যে আইনজীবী এটা এনেছেন তার হৃদয়ে যে রক্তক্ষরণ হচ্ছে, এই রক্তক্ষরণ বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষের হৃদয়ের। এটা অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। এই ঘটনা ফৌজদারি অপরাধ। সরকার গুরুত্ব সহকারে ঘটনাটিকে দেখছে, এটার যথযাথ আইনি পদক্ষেপ নেবে।
এটর্নি জেনারেল বলেন, এই সংগঠন রেজিস্ট্রার্ড কি না, এই সংগঠন নিষিদ্ধ হবে কি না, কী কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে- এই সবগুলো সরকারের পলিসি ডিসিশন। সরকার এটার খোঁজখবর নিয়ে যথাযথ আইনিভাবে এটা দেখবে। সব কিছু আদালতের সামনে এসে সুয়োমোটো নিষিদ্ধ করতে হবে- এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে আপনাদের (আদালতের) জুডিশিয়াল রিভিউ’র অ্যাকশন যাওয়া উচিত না বলে আমি মনে করি। এটা সাংবিধানিক আইনের সঙ্গে কতটুকু যাবে, এটা আমাদের বিবেচনা করতে হবে। এ কারণে এটা প্রয়োজন মনে করছি না। এটা প্রিম্যাচিউর। দেখেন, সরকার কী করছে। সরকার কীভাবে হ্যান্ডেল করছে। সব পর্যালোচনা করে তারপর যদি হয় তখন প্রোপার ওয়েতে আসলে দেখা যেতে পারে। আপাতত দৃষ্টিতে মনে হয়েছে, আদালত আমাদের বক্তব্যে সন্তুষ্ট। আদালত বললেন- কতটুকু প্রগ্রেস আছে কাল সকালে জানাতে। আমি জানাব।
প্রসঙ্গত, চট্টগ্রামে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও আইনজীবীদের সঙ্গে বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর অনুসারীদের সঙ্গে সংঘর্ষের সময় নির্মম ও বর্বরোচিত খুনের শিকার হন এই আইনজীবী। গতকাল বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে আদালতের অদূরে রঙ্গম কমিউনিটি সেন্টারের সামনে এ ঘটনা ঘটে। নিহত আইনজীবী সাইফুল ইসলাম ওরফে আলিফ সহকারী সরকারি কৌঁসুলি (এপিপি)। তিনি লোহাগাড়া উপজেলার চুনতি গ্রামের জামাল উদ্দিনের ছেলে এবং চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য। পাশাপাশি হাইকোর্টের আইনজীবীও ছিলেন তিনি।
মন্তব্য করুন