মেগা মানডে ঘোষণা দিয়ে গণভবন স্টাইলে সব লুট করে নিয়ে যাওয়া হয় ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজ থেকে। যে যেভাবে পেরেছে, কম্পিউটার, চেয়ার, ফ্যান, টেলিফোন, রাউটার, এমনকি ট্রফি পর্যন্ত নিয়ে গেছে। গোটা যাত্রাবাড়ী-ডেমরা এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয় এদিন। ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া আর সংঘাত-সহিংসতা চলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা। আগাম ঘোষণা থাকলেও সংঘাতময় পরিস্থিতি এড়ানো যায়নি। এ নিয়ে সমালোচনাও শুরু হয়েছে।
দিনভর এই সহিংসতার মধ্যে খবর আসে রোববার (২৪ নভেম্বর) মধ্যরাত থেকেই ঢাকায় ঢুকতে শুরু করেছে একের পর এক বাস। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে রাজধানীর শাহবাগে লোক জড়ো করা হচ্ছে। অন্তত ১০ লাখ মানুষের সমাগত ঘটাতে চায় তারা। কেন এই পরিকল্পনা, তারা কি করতে চায় তার কিছুই জানত না প্রশাসন।
পরে জানা যায়, বিনাসুদে লাখ লাখ টাকা ঋণের প্রলোভন দেখিয়ে তাদের ঢাকায় আনা হয়। কিন্তু হঠাৎ করে গতকাল সোমবারই (২৫ নভেম্বর) কেন এত মানুষকে ঢাকায় আনা হচ্ছিল, তার সঠিক তথ্য পাওয়া যায়নি। বলা হচ্ছে, অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে নতুন কোনো ষড়যন্ত্র করতেই সাধারণ মানুষকে টোপ হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।
মেগা মানডের উত্তেজনা এখানেই শেষ নয়, সন্ধ্যায় যেন নতুন করে উত্তাপ ছড়ায়। বাংলাদেশের ইসকন নেতা চিন্ময় কৃষ্ণদাস ব্রহ্মচারীকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় উত্তপ্ত হয়ে ওঠে রাজধানী। রাস্তায় নেমে আসে তার শত শত অনুসারী। সে প্রতিবাদ বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়। সংঘাতময় পরিস্থিতি এড়াতে বাড়ানো হয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
একদিনে এতসব ঘটনা মোটেও হালকাভাবে নিতে চায় না ৫ আগস্টের সফল অভ্যুত্থানের নায়ক বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা। তাইতো মধ্যরাতে ডেকে বসে সংবাদ সম্মেলন। সেখানে জড়ো হয় সমন্বয়ক, ছাত্রদল, ছাত্রশিবিরসহ ফ্যাসিবাদবিরোধী সব ছাত্র সংগঠনের নেতারা। দেশে চলমান অস্থিরতার প্রতিবাদে তাদের সমন্বয়ে ‘জাতীয় ছাত্র সংহতি সপ্তাহ’ পালনের ঘোষণা দেওয়া হয়।
বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরেই রাজধানী ঢাকা যেন আন্দোলনের সূতিকাগার হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। আনসার বাহিনীর সহিংস আন্দোলনের পর থেকে বিক্ষোভ, সংঘাত আর সহিংসতা লেগেই আছে। ঢাকা কলেজ-সিটি কলেজের সহিংসতা, তিতুমীর শিক্ষার্থীদের আন্দোলন, অটোরিকশাচালকদের বিক্ষোভ, আর সবশেষ কলেজ শিক্ষার্থীদের হামলা ঘিরে ভয় আর আতঙ্ক বাড়ছে শুধু।
মন্তব্য করুন