মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, আমাদের বড় সমস্যা হলো মৎস্য আহরণ বন্ধকালীন ভারতীয় জেলেরা অনুপ্রবেশ করে মাছ ধরছে। অনুপ্রবেশ ঠেকানোর জন্য আমরা ভারত সরকারকে আগেই এ বিষয়ে জানাতে হবে।
মৎস্য আহরণ বন্ধে সময় নির্ধারণে তিনি মৎস্য অধিদপ্তর, বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট, কোস্টগার্ড, নৌ পুলিশ, নৌবাহিনীসহ সংশ্লিষ্টদের দ্রুত কমিটি গঠনের প্রস্তাব দেন।
সোমবার (২৫ নভেম্বর) সকালে মৎস্য অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে ‘বঙ্গোপসাগরে মৎস্য আহরণ বন্ধকালীন সময় পুনর্নির্ধারণ বিষয়ক কর্মশালায়’ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেছেন।
ফরিদা আখতার প্রজননের সঠিক সময় ও মৎস্য আহরণ বন্ধে বৈজ্ঞানিকভাবে নির্ধারণ করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটকে আরও গবেষণা করে তার ফলাফল জনগণকে জানানোর পরামর্শ প্রদান করেন তিনি।
উপদেষ্টা বলেন, ইলিশ আমাদের প্রাকৃতিক সম্পদ, আল্লাহর দান। ইলিশ ডিম ছাড়ার পর বড় হওয়ার জন্য সুযোগ দিতে হবে। এক্ষেত্রে আমাদের সবার দায়িত্ব রয়েছে। মৎস্যজীবীরা আমাদের আমিষের জোগান দিয়ে যাচ্ছে। একদিকে জেলেদের সুবিধা, অন্যদিকে মাছ রক্ষা করা আমাদের কর্তব্য। বাজারে মাছের সরবরাহ বাড়লেও এমনকি পর্যাপ্ত ইলিশ পাওয়া গেলেও দাম কমছে না। এক্ষেত্রে ইলিশ আহরণ, সরবারহ, বিপণন, সংরক্ষণ প্রভৃতি জড়িত। আমরা জনগণকে খাওয়াতে পারছি কিনা সেখানে আমাদের দায়বদ্ধতা রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বঙ্গোপসাগরে মৎস্য আহরণ বন্ধে যতই নির্ধারণ করি না কেন, যদি আমরা মাছ ধরার জাল নিয়ন্ত্রণ না করি কোনো পদক্ষেপেই কাজ হবে না। জাল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে অভিযান শুরু হয়েছে। মুন্সীগঞ্জের বিভিন্ন ফ্যাক্টরিতে অভিযান ও জরিমানা অব্যাহত রয়েছে। শিল্প মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করব, তারা যেন জাল উৎপাদনের সঙ্গে জড়িত কারখানাগুলোকে কোনো লাইসেন্স না দেয়। সমুদ্রে ট্রলার দিয়ে যারা মাছ ধরেন তাদের আরও সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে। তাদের সমুদ্র সার্বভৌমত্ব রক্ষা করে মাছ এবং সমুদ্র রক্ষার আহ্বান জানান তিনি।
এ সময় বক্তারা বলেন, সামুদ্রিক মৎস্য সম্পদ সংরক্ষণ ও নির্বিঘ্ন প্রজননের নিমিত্ত নির্দিষ্ট সময়ের জন্য মৎস্য আহরণ নিষিদ্ধ কার্যক্রম একটি আন্তর্জাতিক স্বীকৃত পদ্ধতি। মা ইলিশের নিরাপদ প্রজনন ও জাটকা সংরক্ষণের ন্যায় সমুদ্রে মৎস্য প্রজাতির সফল প্রজনন ও প্রজনোত্তর সংরক্ষণ করা হলে সামুদ্রিক মৎস্যসম্পদের আহরণ উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাবে বলে গবেষকরা সুপারিশ করেন।
মৎস্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক ড. মো. আবদুর রউফের সভাপতিত্বে এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন- মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এটিএম মোস্তফা কামাল, বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশনের চেয়ারম্যান সুরাইয়া আখতার জাহান, বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. অনুরাধা ভদ্র, বিশেষঙ্গ বিজ্ঞানী এবং বিভিন্ন স্টেকহোল্ডাররা।
মন্তব্য করুন