বায়ুদূষণ বিশ্ববাসীর জন্য এক বড় সমস্যা। দীর্ঘদিন ধরে বিশ্বের বিভিন্ন শহরগুলোর বায়ুদূষণের মাত্রা ক্রমেই বাড়ছে জলবায়ু পরিবর্তনসহ বিভিন্ন মানবসৃষ্ট কারণে। অস্বাভাবিকভাবে বায়ুদূষণ বৃদ্ধিতে মানুষসহ বিভিন্ন প্রাণীর মৃত্যুঝুঁকি বেড়েই চলেছে। মাঝে বর্ষাকালে কিছুদিন ঢাকার বাতাসের মানের উন্নতি হলেও আবারও বায়ুদূষণ বাড়ছে।
বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) সকাল ১০টার দিকে আন্তর্জাতিক বায়ুমান প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ার বায়ুদূষণের তালিকা প্রকাশ করে।
তালিকা অনুযায়ী বায়ুদূষণের শীর্ষে অবস্থান করছে পাকিস্তানের ‘লাহোর’। শহরটির বাতাসের মানের স্কোর ৫৯৩। বাতাসের এই মান নাগরিকদের জন্য ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ হিসেবে ধরা হয়। এদিকে বায়ুদূষণে ৩২৭ স্কোর নিয়ে তালিকার দুই নম্বরে আছে প্রতিবেশী দেশ ভারতের দিল্লি।
১৭২ স্কোর নিয়ে রাজধানী ঢাকা অবস্থান ৫ম। নাগরিকদের জন্য বাতাসের এই মানও ‘অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এই অবস্থায় নগরবাসীকে জানালা বন্ধ রাখার পাশাপাশি ঘরের বাইরে বের হলে মাস্ক ব্যবহারের পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, আইকিউএয়ার সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বায়ুর মান পর্যবেক্ষণকারী প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান। যারা নিয়মিত বিশ্বের দূষিত বাতাসের শহরের তালিকা প্রকাশ করে থাকে। প্রতিষ্ঠানটি বাতাসের মান নিয়ে তৈরি করে এই একিউআই সূচক, যা একটি নির্দিষ্ট শহরের বাতাস কতটা নির্মল বা দূষিত, সে সম্পর্কে মানুষকে তথ্য দেয় এবং সতর্ক করে।
একিউআই স্কোর শূন্য থেকে ৫০ ভালো হিসেবে বিবেচিত হয়। ৫১ থেকে ১০০ মাঝারি হিসেবে গণ্য করা হয়, আর সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর বিবেচিত হয় ১০১ থেকে ১৫০ স্কোর। স্কোর ১৫১ থেকে ২০০ হলে তাকে ‘অস্বাস্থ্যকর’ বায়ু বলে মনে করা হয়। ২০১ থেকে ৩০০-এর মধ্যে থাকা একিউআই স্কোরকে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ বলা হয়। এ অবস্থায় শিশু, প্রবীণ এবং অসুস্থ রোগীদের বাড়ির ভেতরে এবং অন্যদের বাড়ির বাইরের কার্যক্রম সীমাবদ্ধ রাখার পরামর্শ দেয়া হয়ে থাকে। এ ছাড়া ৩০১ থেকে ৪০০-এর মধ্যে থাকা একিউআই ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ বলে বিবেচিত হয়, যা নগরের বাসিন্দাদের জন্য গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে। সাধারণত একিউআই নির্ধারণ করা হয় দূষণের পাঁচটি ধরনকে ভিত্তি করে। যেমন -বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), এনও২, সিও, এসও২ ও ওজোন (ও৩)। বায়ুদূষণ গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে থাকে। এটা সব বয়সী মানুষের জন্য ক্ষতিকর। তবে শিশু, অসুস্থ ব্যক্তি, প্রবীণ ও অন্তঃসত্ত্বাদের জন্য বায়ুদূষণ খুবই ক্ষতিকর।
মন্তব্য করুন