দৈনিক কালবেলার অনলাইন ভার্সনে ‘বিএনপি-ছাত্রদল নেতার সহযোগিতায় ৫০ কোটি টাকার সম্পত্তি দখলের অভিযোগ’ শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ করেছেন প্রশিকা মানবিক উন্নয়ন কেন্দ্র।
ঢাকা জজ কোর্টের অ্যাডভোকেট মো. সোলায়মান (লিগ্যাল এডভাইজার প্রশিকা) সই করা পাঠানো এক প্রতিবাদপত্রে বলা হয়, ‘কালবেলা পত্রিকায় গত ১৪ নভেম্বর ‘বিএনপি-ছাত্রদল নেতার সহযোগিতায় ৫০ কোটি টাকার সম্পত্তি দখলের অভিযোগ’ শিরোনামে প্রকাশিত খবরের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। প্রশিকা মানবিক উন্নয়ন কেন্দ্র একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা সারা দেশে ৪৮০টি শাখা অফিসের মাধ্যমে দরিদ্র, হতদরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষের আর্থসামাজিক উন্নয়নে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে আসছে। খুলনার কয়রা, শিরোমনি, ফুলতলাসহ সারা দেশে প্রশিকার আইনগত বৈধ কর্তৃপক্ষ পূর্ণোদ্দমে সার্বিক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। সাবেক গভর্নিং বডির চেয়ারম্যান কাজী ফারুক আহম্মদ রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের দায়ের করা এনআই অ্যাক্টের মামলায় ৫ বছর কারাদণ্ডপ্রাপ্ত হয়ে ফেরারি আসামি হিসেবে বিভিন্ন স্থানে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। তার কোনো অফিস নেই এবং তিনি আইনিভাবে অবৈধ মর্মে প্রশিকার কোনো কার্যক্রম পরিচালনা করেন না। প্রশিকা গভর্নিং বডির মাধ্যমে পরিচালিত হয়।
প্রতিবাদপত্রে আরও বলা হয়, ‘২০০৯ সালের ২৪ মে নানা অনিয়মের কারণে গভর্নিং বডি সদস্যদের সর্বসম্মতিক্রমে তখনকার গভর্নিং বডির চেয়ারম্যান কাজী ফারুক আহম্মদকে ১০৫তম সভার রেজুলেশনের মাধ্যমে গভর্নিং বডির চেয়ারম্যানের পদ থেকে অপসারণ করলে কাজী ফারুক তার অপসারণকে চ্যালেঞ্জ করে ঢাকা সহকারী জজ আদালতে ৩০২/২০০৯ নং ঘোষণামূলক মামলা করেন। ওই মামলায় কাজী ফারুক নিম্ন আদালত থেকে সর্বোচ্চ আদালত পর্যন্ত হেরে যান এবং হাইকোর্ট ২৩২৩/২০০৯ নং রিভিশন মামলায় কাজী ফারুক আহম্মদকে প্রশিকার গভর্নিং বডির সাবেক চেয়ারম্যান হিসেবে রায় দেন। রায়ে কাজী ফারুক সংক্ষুব্ধ হয়ে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে ১৬৯৭/২০০৯ লিভ টু আপিল করলে উভয় পক্ষের শুনানি শেষে বিচারপতিরা হাইকোর্টের রায় বহাল রাখেন। পরে কাজী ফারুক আহম্মদ আওয়ামী লীগের খুলনার নেতা মুন্নুজান সুফিয়ান ও খানজাহান আলী থানার আওয়ামী লীগ সভাপতি আবিদ হোসেনের মাধ্যমে খুলনার ‘শিরোমনি চিংড়ি হ্যাচারি’টি জোরপূর্বক ও অবৈধভাবে দখলে রেখে খুলনার আওয়ামী সন্ত্রাসী অজয়, বাকের, সোবাহান ও কামালকে দিয়ে প্রশিকার চিংড়ি হ্যাচারির ৫ একর ৬৭ শতাংশ জমি থেকে সকল প্রকার আয় ভোগ করার ব্যবস্থা করে অবৈধভাবে হ্যাচারির দখল নেয়।
প্রতিবাদে তিনি বলেন, ‘শিরোমনি চিংড়ি হ্যাচারিটি কারও ব্যক্তিগত সম্পত্তি নয়, এটা লিগ্যাল পার্সন হিসেবে প্রশিকার সম্পত্তি এবং প্রশিকার বৈধ কর্তৃপক্ষই এটা পরিচালনা করার আইনি অধিকারী রাখে। বিএনপি-ছাত্রদল নেতাদের আমরা চিনি না। তাদের সঙ্গে প্রশিকার কোনো সম্পর্ক নেই। আওয়ামী সরকারের পতন হলে সর্বোচ্চ আদালতের রায় ও আদেশমতে বৈধ কর্তৃপক্ষ সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাধ্যমে উক্ত চিংড়ি হ্যাচারির অবৈধ দখলমুক্ত করে সুষ্ঠুভাবে প্রশিকার সব কার্যক্রম পরিচালনা করছে। তাই গত ১৪ নভেম্বর কালবেলা পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদটি সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট ও তঞ্চকতাপূর্ণ। কালবেলার উচিত ছিল উভয় পক্ষের কাছ থেকে আদালতের রায় ও আদেশের সার্টিফাই কপি সংগ্রহ করে যাচাই-বাছাই করে সংবাদ প্রচার করা। প্রশিকার বৈধ কর্তৃপক্ষ এ ধরনের মিথ্যা, বানোয়াট ও তঞ্চকতাপূর্ণ সংবাদে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য খুলনা ও শিরোমনির জনগণকে বিশেষভাবে অবহিত করছে।’
প্রতিবেদকের বক্তব্য গত ১৪ নভেম্বর কালবেলায় ‘বিএনপি-ছাত্রদল নেতার সহযোগিতায় ৫০ কোটি টাকার সম্পত্তি দখলের অভিযোগ’ শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদের সপক্ষে সব তথ্য-প্রমাণ প্রতিবেদকের কাছে সংরক্ষিত আছে এবং প্রকাশিত সংবাদে সব পক্ষের অভিযোগ ও বক্তব্য আছে।
মন্তব্য করুন