চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে শান্তিপূর্ণ মানবন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন কোভিডে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগপ্রাপ্ত সহস্রাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী।
রোববার (১৭ নভেম্বর) সকাল ১০টার দিকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সামনে অবস্থান নিয়ে এ অবস্থান কর্মসূচি পালন কোভিডের সময়ে আউটসোর্সিংয়ে নিয়োগ পাওয়া এসব কর্মীরা।
আন্দোলনরত আউটসোর্সিং কর্মীদের দাবি, কোভিডের সময় জীবনঝুঁকি নিয়ে কাজ করলেও বর্তমানে অবহেলা-বঞ্চনায় দিনাতিপাত করছেন তারা। একদিকে চাকরি হারানোর ভয়, অন্যদিকে চাকরির বয়সসীমা শেষ হওয়ায় নতুন কোনো চাকরিতে যোগদানের সুযোগও নেই। এই অবস্থায় শর্তহীনভাবে চাকরি স্থায়ীকরণের দাবি করছেন এসব কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
তারা বলেন, ভয়াবহ কোভিডের সময় কোভিডে মারা যাওয়া মায়ের লাশ যখন সন্তান এসে নিতে চায়নি, সেই সময়ে আমরা নিজের জীবন বিপন্ন করে রাষ্ট্র ও জনগণকে সেবা দিয়েছি। এখন আমাদের স্ত্রী-সন্তান নিয়ে পথে বসার উপক্রম। আমাদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, আগামী ৩১ ডিসেম্বর আমাদের কোভিড-১৯ ইমার্জেন্সি রেসপন্স অ্যান্ড প্যানডামিক প্রিপেয়ার্ডনেস প্রকল্পের আউটসোর্সিং প্রক্রিয়ায় নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, কর্মচারীদের চাকরি শেষ। তখন আমরা কী করব, কোথায় যাব আর আমাদের পরিবারই বা কীভাবে চলবে? এরকম হাজারও প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে তাদের মাথায়।
মাহমুদ হাসান নামে এক আউটসোর্সিং কর্মী বলেন, আমাদের মহামারির সময় তিন মাসের জন্য চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। যদি তিন মাস পর আমাদের চাকরি চলে যেত, তাহলে আজ আমরা এখানে আসতাম না। আমরা অন্য কোনো জায়গায় কাজ খুঁজে নিতাম। কিন্তু রাষ্ট্রের প্রয়োজনে আমাদের ছয় মাস করে করে মেয়াদ বাড়িয়ে আজ এই অবস্থায় নিয়ে আসা হয়েছে।
তিনি বলেন, এখন আমাদের কারও চাকরির বয়স নাই। এই অবস্থায় হঠাৎ করেই ১০০৪ জন জনবল বেকার হয়ে যাব। আমাদের পরিবার নিয়ে অনাহারে জীবনযাপন করতে হবে। তাই আমরা যারা দক্ষ জনবল রয়েছি তাদের চাকরির নিশ্চয়তা দিতে হবে।
নাহিদ হোসেন ইভান নামে আরেক কর্মী বলেন, কোভিড-১৯ মহামারির সময় আমাদের মধ্যে থেকে ২০৩ জনকে রাষ্ট্রপতির বিশেষ ক্ষমতাবলে তাদের রাজস্ব খাতে নিয়োগ দিয়েছিল। পরে আমাদের রাজস্ব খাতে নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিল, কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয় নাই প্রকল্প অফিস থেকে। এই অবস্থায় আমাদের এক দফা এক দাবি। যতক্ষণ না দাবি আদায় হবে, আমরা ঘরে ফিরে যাব না।
আউটসোর্সিংয়ে কর্মরত এসব চাকরিজীবীদের দাবিগুলো হলো-
১. কোভিড-১৯ মহামারি যোদ্ধাদের ৩১ ডিসেম্বরের পর চাকরি বহাল চাই।
২. স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের আওতায় জুলাই ২০২৪ হতে জুন ২০২৯ মেয়াদে বাস্তবায়নের জন্য প্রস্তাবিত ৫ম সেক্টর কর্মসূচিভুক্ত ওপিসমূহ অতি দ্রুত ১০০৪ জনবলকে বহাল রেখে বাস্তবায়ন করতে হবে।
৩. কোভিড-১৯ যোদ্ধাদের বয়স শিথিল রেখে যথাযথ নিয়ম মেনে রাজস্বখাতে স্থানান্তরিত করতে হবে।
এসময় মানববন্ধন কর্মসূচিতে অন্যদের মধ্যে আরও বক্তব্য রাখেন জাহিদ হাসান, শিহাব হাওলাদার, হিমেল মিয়া, আব্দুর রহমান, আবরার বিন হান্নান প্রমুখ।
মন্তব্য করুন