বেশ কিছুদিন ধরে শেখ হাসিনার মতো কণ্ঠে কল রেকর্ড ফাঁস করা হচ্ছে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। যেখানে নেতাকর্মীদের রাস্তায় বিক্ষোভ করতে নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে। সেই নির্দেশনা মানতে গিয়ে সহিংসতার জন্ম দিচ্ছে আওয়ামী লীগ কর্মী সমর্থদের কেউ কেউ। সর্বশেষ ফাঁস হওয়া কল রেকর্ডে সদ্য নির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ছবি নিয়ে রাস্তায় নামার নির্দেশনা দেওয়া হয়।
আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ছবি নিয়ে মিছিল করায় রাজনীতিবিদরা ব্যাপক সমালোচনা করেছেন। কেউ কেউ বলছেন, আওয়ামী লীগের রাজনৈতি দৈন্যতা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে এখন ট্যাম্পে ছবি নিয়ে মিছিল করা লাগে। তারা যে রাজনৈতিকভাবে ধ্বংস হয়ে গেছে, এটাই প্রমাণ করে। তবে ঘটনা এখানেই শেষ নয়। আত্মগোপনে থাকা আওয়ামী লীগ গেল শনিবার (৯ নভেম্বর) তাদের ভেরিফাইড ফেসবুক পেইজে নূর হোসেন দিবসে কর্মসূচি পালনে দলীয় নেতাকর্মীদের অংশ নেওয়ার আহ্বান জানায়। এরপরই তা প্রতিহত করার ঘোষণা দেয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনসহ আওয়ামী লীগ-বিরোধী বিভিন্ন সংগঠন।
গেল শনিবার রাত থেকে জিরো পয়েন্টের নূর হোসেন চত্বরে অবস্থান নেওয়ার পর রোববার (১০ নভেস্বর) জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে সংগঠনটি গণজমায়েত কর্মসূচি পালন করে। কর্মসূচি পালনকালে জিরো পয়েন্টে আওয়ামী লীগের কর্মী সমর্থক সন্দেহে কিছু ব্যক্তিকে আটক ও উত্তম-মাধ্যম দেওয়ার ঘটনা ঘটে।
এদিকে গেল রোববার জিরো পয়েন্টে আওয়ামী লীগের অংশ ভেবে কিছু ব্যক্তির ওপর হামলার ঘটনায় বিবৃতি দিয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। বিবৃতিতে ওই হামলার ঘটনায় বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষকে অবশ্যই দ্রুত ও নিরপেক্ষভাবে তদন্তের আহবান জানিয়োছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।
তারা বলেছে, দায়ীদের জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে। গতকাল মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক কার্যালয়ের এক্সে (সাবেক টুইটার) প্রকাশ করা হয়েছে।
অ্যামনেস্টির বিবৃতিতে বলা হয়, রাজনৈতিক বিশ্বাসের কারণে মানুষের ওপর আক্রমণ করাটা তাদের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও সভা-সমিতি-সংগঠন করার অধিকারের লঙ্ঘন। কর্তৃপক্ষকে অবশ্যই রাজনৈতিক-সংশ্লিষ্টতা নির্বিশেষে সব মানুষের এই অধিকারগুলো রক্ষা ও প্রতিপালনে পদক্ষেপ নিতে হবে।
অন্যদিকে শহীদ নূর হোসেন দিবসে আওয়ামী লীগের কর্মসূচি ঘিরে ইন্টারনেটে অপতথ্য ছড়ানোর প্রমাণ পেয়েছে ফ্যাক্টচেকিং বা তথ্য যাচাইকারী প্রতিষ্ঠান রিউমার স্ক্যানার। এ-সংক্রান্ত ১৬টি দাবি যাচাই করে ১৫টি ফ্যাক্টচেক প্রকাশ করেছে তারা। এতে দেখা গেছে, পুরোনো ছবি ও ভিডিওর পাশাপাশি সেনাবাহিনীকে জড়িয়েও ভুয়া তথ্য প্রচার করা হয়েছে।
মঙ্গলবার এ-সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমার স্ক্যানার। তারা যে ১৫টি ফ্যাক্টচেক প্রকাশ করেছে, তার মধ্যে তথ্যকেন্দ্রিক দাবি ছিল দুটি, ভুয়া প্রেস বিজ্ঞপ্তি ছিল দুটি, পুরোনো ছবিকে সাম্প্রতিক দাবিতে প্রচার করা হয়েছে একটি, পুরোনো ভিডিওকে সাম্প্রতিক দাবিতে প্রচার করা হয়েছে ৯টি এবং কর্মসূচির দিনের ভিডিওকে বিভ্রান্তিকর দাবিতে প্রচার করা হয়েছে একটি।
মন্তব্য করুন