পুরান ঢাকার সূত্রাপুর, গেন্ডারিয়া, ওয়ারী, শ্যামপুর, কোতোয়ালি ও এর আশপাশ থানাধীন এলাকার ৩০ লক্ষাধিক মানুষের বাড়ি-ঘর, জায়গা-জমি ও পৈতৃক সম্পত্তির নামজারি করতে পারছেন না। অথচ তাদের এসএ, সিএস, আরএস এবং সর্বশেষ সিটি জরিপের পর্চায় তাদের নিজের অথবা বাবা, দাদা বা পৈতৃকদের নামে রেকর্ডও রয়েছে। সরকার এসব এলাকার খাজনা না নেওয়ায় বিগত ১৩ বছর ধরে তারা মহাবিপদে ও ভোগান্তির মধ্যে রয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী জনগোষ্ঠী।
মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে পুরান ঢাকার নাগরিক কমিটির উদ্যোগে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব ভোগান্তির কথা তুলে ধরেন এলাকাবাসী। সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন ঢাকা নাগরিক কমিটির সভাপতি শেখ ফজলুর রহমান বকুল, উপস্থিত ছিলেন সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউদ্দিন চৌধুরী, মজিবুর রহমান খান, সাংবাদিক মোহাম্মদ মহসীন ও জনাব রেজাউল করিম বাবু প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, ভূমি মন্ত্রণালয়ের কিছু সংখ্যক কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তাদের হীন উদ্দেশ্য চরিতার্থ করতে ২০১১ সালে ৭০-৮০ বছর পর পুরান ঢাকার সূত্রাপুর মৌজার মানুষের স্ব স্ব বাড়ি-ঘর, জায়গা-জমি ও সম্পত্তিকে অবৈধভাবে খাসমহল ও লিজের নামে মিথ্যা ঘোষণার মাধ্যমে নামজারি ও খাজনা নেওয়া বন্ধ করে রেখেছেন। ফলে পুরান ঢাকার ৩০ লক্ষাধিক মানুষ তাদের বাড়ি ও জমি এবং পৈতৃক সম্পত্তিসমূহের নামজারি করতে পারছেন না। সরকার খাজনাও জমা নিচ্ছেন না। জমি হস্তান্তর, জমি কেনা-বেচা ও রেজিস্ট্রি করতে পারছেন না। এমনকি পিতা-মাতার মৃত্যুর পর ওয়ারিশরা বাড়ি ঘরের ভাগাভাগি বা বণ্টননামা, হেবা রেজিস্ট্রিও করতে পারছেন না। এ ছাড়া রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) কর্তৃক প্লান পাসও হচ্ছে না।
অভিযোগ করে তারা বলেন, এর ফলে ভুক্তভোগীরা নিজ জমিতে ভবণ নির্মাণ করতে পারছেন না এবং ব্যাংক থেকে ঋণও নিতে পারছেন না। ফলে পুরান ঢাকায় ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসারও হচ্ছে না। এতে উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড চরমভাবে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। ভূমির নামজারি না করা এবং ভূমি উন্নয়ন কর না নেওয়ার কারণে সরকার নিজেও প্রতি বছর শত শত কোটি টাকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। ২০১১ সালের পর হতে ডেভেলপার কোম্পানিগুলো ঋণ নিয়ে এসব এলাকাতে ফ্ল্যাট বাড়ি তৈরি করেছেন এখন তারা ঋণের বোঝায় জর্জরিত।
তারা আরও বলেন, পুরান ঢাকার ৩০ লক্ষাধিক মানুষ তাদের ভূমির খাজনা যুগ যুগ ধরে পরিশোধ করে আসছেন। ২০১১ সালে ভূমি মন্ত্রণালয়ের অধিশাখা-৮ এক পরিপত্র দ্বারা পুরান ঢাকার সূত্রাপুর মৌজার খাজনা বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেন। যা ছিল একবারে অবৈধ এবং অমানবিক।
অবিলম্বে সূত্রাপুর মৌজার ভূমি অবমুক্তি করা এবং স্বৈরাচার সরকার কর্তৃক ভূমি মন্ত্রণালয়ের ২০১১ সালের জারিকৃত অবৈধ পরিপত্রটি অবিলম্বে প্রত্যাহার করার মাধ্যমে পুনরায় খাজনা বা ভূমি উন্নয়ন কর নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়।
মন্তব্য করুন