শেখ হাসিনার পতন হয়েছে তিন মাস পার হয়ে গেছে। কিন্তু এখনো আওয়ামী দোসরদের নানাভাবে পুনর্বাসন করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অধিকাংশ সমন্বয়করা। যার প্রতিবাদে আবারও প্রোফাইলের ছবি লাল করার হিড়িক পড়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে।
ফেসবুক জুড়ে একের পর এক প্রোফাইল ছবি লাল করছেন সমন্বয়কসহ সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাক্টিভিস্টরা। একই সঙ্গে তারা বলছেন ‘যুদ্ধ এখনো শেষ হয়নি’।
রোববার (১০ নভেম্বর) অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে নতুন করে আরও তিনজনকে উপদেষ্টা করা হয়, যাদের মধ্যে রয়েছেন আকিজ গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সেখ বশির উদ্দিন ও চলচ্চিত্র নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। এরপরই শুরু হয় সমালোচনার ঝড়।
এরপরই শুরু হয় প্রোফাইল লাল করার হিড়িক। এরই প্রেক্ষিতে নিজের ফেসবুক প্রোফাইলের ছবি লাল করেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ। সোমবার (১১ নভেম্বর) রাতে প্রোফাইল পিকচার পরিবর্তন করে তিনি ক্যাপশনে লিখেন, ‘সাঈদ ওয়াসিম মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ। ১৩৪ শে জুলাই, ২০২৪।’
এর আগে আরেকটি পোস্টে হাসনাত লিখেন ‘বশির-ফারুকীকে উপদেষ্টা করার প্রতিবাদ সভা থেকে গ্রেপ্তার করার ঘটনা চরম ফাইজলামি। এগুলা ভণ্ডামি। আপনেরা হাসিনা হয়ে ওঠার চেষ্টা কইরেন না। হাসিনারেই থোরাই কেয়ার করছি, উৎখাত করছি। আপনেরা কোন হনু হইছেন?’
আরিফুল ইসলাম নামক এক শিক্ষার্থী লিখেন, ‘সবার ভেতরে থাকা লাল, আবার টগবগ করুক। চিরচেনা সেই উষ্ণতা, আবার ফিরে আসুক। হাজার হাজার প্রোফাইল লাল হওয়ার পরও যদি উপদেষ্টা পরিষদের টনক না নড়ে, তাহলে রাজপথ লাল হতে দেরি নাই।’
প্রতিবাদস্বরূপ ফেসবুক প্রোফাইল লাল করেছেন কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার অনুসন্ধানী সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়েরও। সেইসঙ্গে উপদেষ্টা নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে ১১টি প্রশ্নের উত্তরও চেয়েছেন তিনি। সেগুলো হলো— উপদেষ্টাদের কিসের ভিত্তিতে নির্বাচন করা হয় এবং কারা নির্বাচিত করেন? উপদেষ্টারা কি কোন বিশেষ ব্যক্তির নিয়োগ সুপারিশ করতে পারেন, কিসের ভিত্তিতে সুপারিশ করা হয়? ছাত্র-জনতার আন্দোলনের তিনজন সমন্বয়ক ছাত্রকে কোন যোগ্যতায় উপদেষ্টা নির্বাচিত করা হয়েছে? এই আন্দোলনে জনতার পক্ষের যারা স্টেক হোল্ডার তাদের একজনও কেন উপদেষ্টা মণ্ডলীতে নেই?
তিনি বলেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ছাত্র এই আন্দোলনে শহীদ হয়েছেন। কিন্তু সরকারে তাদের কোনো প্রতিনিধিত্ব নেই কেন? উল্লেখযোগ্য সংখ্যক রিকশাচালক এই আন্দোলনে নিহত হয়েছেন, তাদের কোনো প্রতিনিধিত্ব নেই কেন? আওয়ামী লীগের পদলেহনকারী সেনা কর্মকতারা এখনো কীভাবে বহাল তবিয়তে চাকরি করছেন, তাদের কেন বরখাস্ত করা হচ্ছে না? ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গ্রামীণ ব্যাংকের অবদান কি? গ্রামীণ ব্যাংক সংশ্লিষ্ট উপদেষ্টাদের কিসের ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে? আলী ইমাম মজুমদারের মতো একটা আওয়ামী ভৃত্য কেন সরকারের অংশ? পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা তৌহিদকে কার পরামর্শে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে এবং কেন?
মন্তব্য করুন