বাংলাদেশের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পরিবর্তন করায় সন্তোষ জানিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধি গোয়েন লুইস। তবে প্রস্তাবিত নতুন আইন সম্পর্কে এখনও বিস্তারিত কিছু জানতে পারেননি বলেও জানান তিনি। মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) সচিবালয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের সঙ্গে বৈঠক শেষে এ কথা জানান তিনি।
আরও পড়ুন : সাইবার নিরাপত্তা আইন জনগণের সঙ্গে প্রতারণা : মির্জা ফখরুল
জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধি গোয়েন লুইস বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, যা এখন সাইবার নিরাপত্তা আইন- এতে কী কী পরিবর্তন আনা হয়েছে এ বিষয়ে আমরা আলোচনা করেছি। যে ধরনের পরিবর্তন আনা হয়েছে বলে শুনেছি তাতে আমি সন্তুষ্ট। তবে আমি এখনও সাইবার নিরাপত্তা আইনটি সম্পূর্ণভাবে দেখিনি। তাই এ বিষয়ে বিস্তারিত মন্তব্য করতে পারছি না।
বৈঠকের পর আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, 'ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে যেসব টেকনিক্যাল ধারাগুলো ছিল সাইবার নিরাপত্তা আইনের মধ্যেও সেই ধারাগুলো আছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনটি সংশোধনও করা হয়নি, রহিতও করে হয়নি; এটি পরিবর্তন করা হয়েছে। আইনটিতে এত বেশি পরিবর্তন হয়েছে যে, যদি নাম পরিবর্তন না করা হতো তাহলে বলতে হতো 'ডিজিটাল নিরাপত্তা সংশোধনী আইন'। এটা বিভ্রান্তিকর হতো। সেজন্য এটাকে সম্পূর্ণ পাল্টিয়ে নতুন নাম দেওয়া হয়েছে। আইনের ব্যাপ্তী বাড়ানোর জন্য নামটি রাখা হয়েছে সাইবার নিরাপত্তা আইন।'
আরও পড়ুন : সাইবার নিরাপত্তা আইনটি না পড়েই সমালোচনা করা হচ্ছে : আইনমন্ত্রী আইনমন্ত্রী বলেন, গত সোমবার এই আইন সম্পর্কে যা বলা হয়েছে, গোয়েনের সঙ্গে আলোচনায়ও সাইবার নিরাপত্তা আইন সম্পর্কে একই কথা বলা হয়েছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন যখন সাইবার নিরাপত্তা আইনের একটি দফার মধ্যে আছে, সে কারণে এটিকে রহিত করা হয়েছে।
এক প্রশ্নের জবাবে আনিসুল হক বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে যাদের মামলা রয়েছে, সেগুলো চলমান আইনেই বিচার হবে। তবে বর্তমান আইনে যেহেতু সাজা কমানো হয়েছে, তাই আগের মামলাগুলো নতুন আইনে নেওয়া যায় কিনা তা ভাবছে সরকার। অনেকেই প্রস্তাবিত সাইবার নিরাপত্তা আইনেরও সমালোচনা করছেন। যারা সমালোচনা করছেন, তারা আইনটি না পড়ে এসব বলছেন বলে জানান তিনি।
গতকাল সোমবার মন্ত্রিসভা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সংস্কার করে নতুন একটি আইন করার প্রস্তাব অনুমোদন দেয়। সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন’ নামটি পরিবর্তন করে তার বদলে নতুন নাম হবে ‘সাইবার নিরাপত্তা আইন’। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অধিকাংশ ধারা নতুন আইনেও থাকবে। তবে বিতর্কিত বিভিন্ন ধারায় পরিবর্তন আনা হচ্ছে। যেসব ধারা নিয়ে বেশি বিতর্ক ছিল, কয়েকটি ক্ষেত্রে সেগুলোর সাজা কমিয়ে আনা হবে। যেমন- ‘জামিন অযোগ্য’ কয়েকটি ধারাকে করা হয়েছে ‘জামিন যোগ্য’। এ ছাড়া মানহানি মামলায় কারাদণ্ডের বিধান বাদ দিয়ে রাখা হবে শুধু জরিমানার বিধান। ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে কমানো হবে সাজা।
মন্তব্য করুন