যাত্রাপালাকে কেন্দ্র করে উৎসবমুখর হয়ে উঠেছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান। প্রতিদিনই নানা শ্রেণিপেশার মানুষের সমাগম ঘটছে মুক্তমঞ্চে।
মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৬টায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির নাট্যকলা ও চলচ্চিত্র বিভাগের ব্যবস্থাপনায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মুক্ত মঞ্চে পরিবেশিত হয়েছে যাত্রাপালা ‘আপন দুলাল’। যাত্রাদল বন্ধু অপেরা’র এ পালায় নির্দেশনা দিয়েছেন মনির হোসেন এবং পালাকার ছিলেন শামসুল হক।
যাত্রাপালা ‘আপন দুলাল যাত্রার কাহিনী গড়ে উঠেছে ধর্মপুরের মহারাজ ধনপতি রায় এর দুই ছেলে আপন এবং দুলালকে ঘিরে। হাঁসি-খুশি ও সুখ-শান্তির মধ্য দিয়ে বেশ ভালোভাবেই চলছে রাজ্য। হঠাৎ একদিন মহারানি অসুস্থ হয়ে পড়েন। তিনি ৩টি প্রতিজ্ঞায় আবদ্ধ করলেন সেনাপতি এবং মহারাজকে। তিনটি প্রতিজ্ঞার মূল কথা রানির মৃত্যুর পর মহারাজ কখনো বিয়ে করতে পারবেন না। একথা বলে মহারানি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুর পূর্বে আপন ও দুলালকে তুলে দেন সেনাপতির হাতে। সেনাপতি ছিলেন মুসলিম এবং মন্ত্রী জংবাহাদুর হিন্দু। তার হাতে কেন দিলেন না, সেই প্রতিহিংসার আগুনে জ্বলছে মন্ত্রী মহাশয়। সেনাপতি মহারানির কথা রাখতে গিয়ে আপন ও দুলালকে লেখাপড়ার উদ্দেশ্যে শিক্ষাগুরুর বাড়িতে রেখে আসেন। কিন্তু দিন অতিবাহিত না হতেই চক্রান্ত করে মহারাজকে দ্বিতীয় বিয়ে করান। প্রাসাদে এলেন ‘সৎ মা’। একদিন মহারাজ বললেন, গুরুদেবের বাড়ি হতে আপন এবং দুলালকে প্রাসাদে নিয়ে আসতে।
মহারাজ হঠাৎ শিকারে বের হবেন। কারণ ছোট রানি হরিণের মাংস খেতে চেয়েছিলেন। আপন ও দুলাল শিকারে গেল। ফেরার পথে দুলালের জল পিপাসা পেল। আপন মায়ের কাছে জল আনতে গেলে রানি ক্ষুদ্ধ হয়ে যান। মন্ত্রীকে ডেকে পরামর্শ করে আপন ও দুলালকে মিথ্যে অপরাধ দিয়ে ঘাতকের হাতে তুলে দেন। মহারাজ পুত্র শোকে তখন উন্মাদ। সেনাপতি ও মাস্টার আপন এবং দুলালকে অন্য রাজ্যে পাঠিয়ে দেয়। তারপর পথে যেতে যেতে দুই ভাই দুই দিকে হারিয়ে যায়। অনেক দিন পরে সোনাপুর নামে এক রাজ্যে আপন ও দুলাল একত্রিত হয়। ধনপতি মিরকাসেম এবং মাস্টার সবাই একসঙ্গে রাজ্যে ফিরে এসে তাহাদের রাজ্য উদ্ধার করেন।
মন্তব্য করুন