চাকরি ফিরিয়ে দেওয়াসহ ৩ দফা দাবিতে বেসরকারি খাতের সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের চাকরিচ্যুত কর্মীরা মানববন্ধন করেছে।
রোববার (০৩ নভেম্বর) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ৪ শতাধিক কর্মী এই মানববন্ধনে অংশ নেন।
এ সময় তারা যোগ্যতার ভিত্তিতেই নিয়োগ পেয়েছেন বলে দাবি করেছেন। চাকরি ফিরিয়ে না দিলে কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দেন। একই সঙ্গে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের কথাও জানান তারা।
গত বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামভিত্তিক বিতর্কিত শিল্পগোষ্ঠী এস আলমের প্রভাবে নিয়োগ করা ৬৭২ কর্মকর্তাকে ছাঁটাই করেছে বেসরকারি খাতের সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক। ওইদিন এসব কর্মকর্তাকে ইমেইলের মাধ্যমে চাকরিচ্যুতির বিষয়টি জানানো হয়। পরে ব্যাংকে উপস্থিত হওয়া কর্মীদের চাকরিচ্যুতিপত্র ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করা কর্মীরা।
তারা বলেন, কোনো নোটিশ ছাড়াই গত বৃহস্পতিবার আমাদের চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। ব্যাংকের পক্ষ থেকে আমাদের জানানো হয়েছে প্রভিশন পিরিয়ড শেষ না হওয়ায় আমাদের চাকরিচ্যুত করতে নোটিশ দেওয়া হয়নি। তাদের এক নোটিশে আমাদের ৬৭২টি পরিবার অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে। এ জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক ও সরকারের কাছে আবেদন আমাদের চাকরি ফিরিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করুন।
অ্যাসিস্ট্যান্ট অফিসার বোরহান উদ্দিন বলেন, গত তিন মাস সংকট থাকাকালে আমরা ব্যাংকে অমানবিক কষ্ট করেছি, যাতে ব্যাংক ঘুরে দাঁড়ায়। আমরা সকাল থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত কাজ করেছি। অথচ, ১ নোটিশে আমাদের চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। আমরা সবাই অন্যান্য চাকরি থেকে ভালো ভবিষ্যতের আশায় চাকরি ছেড়ে এসেছি। এখন আমাদের অনিশ্চয়তার মধ্যে ফেলে দেওয়া হয়েছে। অনেকেই প্রচার করছেন আমাদের নিয়োগ নাকি অবৈধ। অথচ, আমরা ব্যাংকের সব নিয়মকানুন মেনেই চাকরিতে জয়েন করেছি। সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া পর লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ৩০ হাজার আবেদনকারীর মধ্যে আমরা উত্তীর্ণ হয়েছি। আমরা আমাদের চাকরি ফেরত চাই। না হলে আমরা আরো কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হব।
এ সময় তারা ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের নিকট ৩টি দাবি তুলে ধরেন। দাবিগুলো হলো :
১. চাকরিচ্যুত কর্মীদের অবিলম্বে পুনর্বহাল করতে হবে।
২. সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের পরিচালনা পরিষদকে এই ঘটনার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে।
৩. ভবিষ্যতে এ ধরনের অন্যায় পুনরাবৃত্তি বন্ধ করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংককে একটি স্বচ্ছ এবং জবাবদিহিমূলক প্রক্রিয়া প্রবর্তন করতে হবে।
এর আগে গতকাল গণমাধ্যমে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে মতিঝিলের সিটি সেন্টারের সামনে মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন কথা জানায় চাকরিচ্যুত কর্মীরা। কিন্তু সকালে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের সিটি সেন্টারের সামনে অবস্থান করতে দেয়নি। পরে তারা জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে।
মন্তব্য করুন