স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় এবং ভূমি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ বলেছেন, ছাত্র-জনতা আন্দোলনের মাধ্যমে বৈষম্যহীন সমাজ গঠনের যে সুযোগ দিয়েছে তা বাস্তবায়ন করতে হবে। এটিকে কোনোভাবেই ব্যর্থ হতে দেওয়া যাবে না।
শুক্রবার (১ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে শারদীয় দুর্গোৎসব পরবর্তী বিজয়া সম্মিলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি। মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির উদ্যোগে এই অনুষ্ঠান হয়।
হাসান আরিফ বলেন, প্রকৃতি নয়, বিদ্যমান বৈষম্য মানুষই তৈরি করেছে। মানুষের তৈরি এই বৈষম্য দূর করা প্রতিটি মানুষের কাম্য। বিগত সময়ে আমরা দেখেছি, সেই বৈষম্য উত্তরোত্তর বেড়েছে। ছাত্র-শ্রমিক-জনতার গণঅভ্যুত্থানে হাজারেরও বেশি মানুষ শহীদ হয়েছেন, তাদের স্মরণ করি। যারা অসুস্থতা নিয়ে এখনো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে, তাদেরও স্মরণ করি। ৫ জুলাইয়ের পরবর্তী থেকে যে নৃশংসতা-বর্বরতা আমরা দেখেছি, সেটার নিদর্শন তারা এখনো বয়ে বেড়াচ্ছে। গণঅভ্যুত্থানের প্রত্যাশা, একটি বৈষম্যহীন সমাজ।
তিনি আরও বলেন, এই সরকার ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের প্রতিনিধি, তাদের ট্রাস্টি। তাদের প্রত্যাশাকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে, সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। যে ব্যবস্থাগুলি থাকার কারণে সমাজে বৈষম্য সৃষ্টি হয়েছে সেটাকে দূর করতে হবে। তাহলেই আমরা বৈষম্যহীন সমাজ গড়তে পারব।
এ ছাড়া উপদেষ্টা বলেন, একটি বৈষম্যহীন সমাজ গড়ে তুলতেই অন্তর্বর্তী সরকার কাজ করছে। সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া। এটি কোনো শপিংমলে বা দোকানে প্যাকেট আকারে কিনতে পাওয়া যায় না। সংস্কারের প্রধান উপকরণ হলো একটি কলুষমুক্ত চিত্ত। মানুষের কলুষিত চিত্ত দিয়ে কখনো বৈষম্যহীন সমাজ গঠন করা যায় না। সুতরাং প্রথম দরকার কলুষমুক্ত চিত্ত।
তিনি বলেন, বৈষম্যহীন সমাজে মানুষের পরিচয় ধর্মের ভিত্তিতে হবে না কিংবা গায়ের রঙ বা বর্ণের ভিত্তিতেও হবে না। এসব বিভাজন মানুষের সৃষ্টি। মানবসৃষ্ট এসব বৈষম্য নিরসন করতেই ছাত্র-জনতা বুকে বুলেট ধারণ করেছে। বর্তমান সরকার ছাত্র-জনতার প্রত্যাশা পূরণে ট্রাস্টি হিসেবে কাজ করছে।
হাসান আরিফ বলেন, সংস্কারের মাধ্যমে বৈষম্য দূর করা হবে। আগামীতে যারা সরকার গঠন করবে তারাও যাতে এই ধারা অব্যাহত রাখে, সেই প্রত্যাশা করি। আমার বিশ্বাস, তারা এর থেকে ব্যতিক্রম হবে না।
মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির সভাপতি জয়ন্ত দেবের সভাপতিত্বে এবং সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক সুভাশীষ বিশ্বাস সাধনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বাসুদেব ধর, সাধারণ সম্পাদক সন্তোষ শর্মা, মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির সাধারণ সম্পাদক তাপস চন্দ্র পাল, ফাদার এলবার্ট রোজারিও, ঢাকার রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের অধ্যক্ষ স্বামী পূর্ণাত্মানন্দজী মহারাজ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
মন্তব্য করুন