গণঅভ্যুত্থান বিষয়ে বহির্বিশ্বে অপপ্রচার রোধ এবং গণহত্যাকারীদের বিচার প্রক্রিয়া সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সহযোগিতা কামনা করেছেন তথ্য ও সম্প্রচার এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম।
রোববার (২৭ অক্টোবর) ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের অফিস কক্ষে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) দূতাবাসের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে এসব কথা বলেন উপদেষ্টা।
বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার অন্তর্বর্তী সরকারকে সমর্থন জানিয়ে বলেন, মানুষের মৌলিক অধিকার, ডিজিটালাইজেশন, গণমাধ্যম সংস্কার এবং নির্বাচন প্রক্রিয়া নিয়ে তিনি কথা বলতে এসেছেন। অন্তর্বর্তী সরকার সব সংস্কার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করবেন বলেও তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
উপদেষ্টা বলেন, আমরা রাজনৈতিক সংস্কারের বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করছি কারণ সংস্কার যদি সঠিকভাবে না হয় তাহলে নির্বাচন ফলপ্রসূ হবে না। আমরা দ্রুততম সময়ের মধ্যে ডেমোক্রেটিক ট্রানজেশন চাচ্ছি। তার আগে বেসিক কিছু সংস্কার করতে চাই। আমাদের এখন মূল চ্যালেঞ্জ হচ্ছে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা আনয়ন করা এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা।
নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার সাথে চলমান প্রকল্পগুলো অব্যাহত থাকবে তবে কিছু প্রকল্প পুনর্মূল্যায়ন করা হচ্ছে। বিদেশি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে বিনিয়োগে আগ্রহী করতে পরিবেশ তৈরি করা হচ্ছে, যার মাধ্যমে দেশে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।
ইইউ রাষ্ট্রদূত বলেন, সাইবার সিকিউরিটি, ই-গভর্নেন্স, ডিজিটাল ইনফ্রাস্ট্রাকচার, ডেটা প্রটেকশন, আইটি সেটআপ নিয়ে তারা বাংলাদেশের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করতে আগ্রহী । তা ছাড়া যে কোনো কারিগরি বিষয়ে তারা পরামর্শ দিতে প্রস্তুত বলে মন্তব্য করেন তিনি। আইসিটি বিভাগের সঙ্গে ১০ মিলিয়ন ইউরোর ই-ইফেক্টিভ গভর্নেন্স বিষয়ক প্রকল্পের চুক্তি স্বাক্ষরের কথাও তিনি উল্লেখ করেন। পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচার রোধে কাজ করার আগ্রহ ব্যক্ত করেন। উপদেষ্টা অনলাইনে অপপ্রচার রোধে ইইউর সহযোগিতা কামনা করেন।
উপদেষ্টা বলেন, মিডিয়ার গুণগত মান ও পেশাদারিত্ব কীভাবে বাড়ানো যায় সে কথা ভাবা হচ্ছে। শুধু সরকার বা আইন দিয়ে মিডিয়ার গুণগত মান পরিবর্তন করা সম্ভব নয়। মিডিয়ায় পেশাদারিত্বের চর্চা দরকার সেজন্য প্রশিক্ষণ প্রয়োজন। তরুণ মেধাবীরা যেন মিডিয়ায় কাজ করতে আগ্রহী হয় সেজন্য তাদের সিকিউরিটি এবং বেতন কাঠামো নিয়ে ভাবা হচ্ছে।
গণমাধ্যমের স্বাধীনতা এবং সংস্কার কে অন্যতম প্রধান লক্ষ্য ধরে কাজ করছে অন্তর্বর্তী সরকার। ইতোমধ্যে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়েছে। কয়েক দিনের মধ্যে গ্যাজেট প্রকাশিত হবে। স্টেক হোল্ডারদের কাছ থেকে প্রস্তাবনা নিয়ে ঐক্যমতের ভিত্তিতে সংস্কারের রূপরেখা তৈরি করা হবে বলেও মন্তব্য করুন উপদেষ্টা।
পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনার মধ্যে দিয়ে সাক্ষাৎকার শেষ হয়।
সাক্ষাৎকালে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব ড. মো. মুশফিকুর রহমান, তথ্য ও প্রযুক্তি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী, দূতাবাসের প্রোগ্রাম ম্যানেজার ফানি ফারমাকিসহ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন