৭ মার্চের ভাষণ দল-মত-নির্বিশেষে এদেশের স্বাধীনতাকামী মানুষকে উজ্জীবিত করেছে। আপামর জনগণ দেশকে স্বাধীন করতে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। এই ভাষণ ইউনেস্কোর স্বীকৃতি পেয়েছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের তরুণ উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামের বক্তব্যে গভীর উদ্বেগ ও বিস্ময় প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ।
বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, পূর্ব ঘোষিত জাতীয় দিবসের ছুটি বাতিল করা প্রসঙ্গে আমরা গণমাধ্যমে প্রচারিত বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের একজন তরুণ উপদেষ্টার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিষয়ে মন্তব্য শুনলাম। এই তরুণ উপদেষ্টা তার বক্তব্যের মাধ্যমে জাতির মুক্তিযুদ্ধের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসকে অস্বীকার করেছেন যা গ্রহণযোগ্য নয়। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ এ দেশের প্রতিটি নাগরিকের অহংকার। এ দেশের স্বাধীনতা অর্জনে বঙ্গবন্ধুর অবিসংবাদিত ভূমিকা ঐতিহাসিকভাবে স্বীকৃত। ইতিহাস না জানা বা ইতিহাসকে অস্বীকার করা যে কোনো জাতির জন্য অগৌরবের এবং অবিবেচনাপ্রসূত। তার এই বক্তব্য কোনোভাবে গ্রহণযোগ্য নয়।
এর আগে গত বুধবার (১৬ অক্টোবর) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে নাহিদ ইসলাম বলেন, আওয়ামী লীগ দল হিসেবে ফ্যাসিস্টভাবে ক্ষমতায় ছিল। মানুষের ভোটাধিকার হরণ ও গুম-খুন করে এবং গণহত্যা করে তারা ক্ষমতায় ছিল। কাজেই তারা কাকে জাতির পিতা বলল, তারা কোনো দিবসকে জাতীয় দিবস ঘোষণা করল, নতুন বাংলাদেশে সেটার ধারাবাহিকতা থাকবে না। আমরা বাংলাদেশকে নতুনভাবে গঠন করতে চাচ্ছি। ফলে ইতিহাসের প্রতি আমাদের নতুন দৃষ্টিভঙ্গি আনতে হবে। আমাদের এই ভূখণ্ডের লড়াইয়ের ইতিহাসে বহু মানুষের অবদান রয়েছে। আমাদের ইতিহাস কেবল বায়ান্নতেই শুরু হয়নি। আমাদের ব্রিটিশবিরোধী লড়াই আছে, ’৪৭ ও ’৭১-এর লড়াই আছে, ’৯০ ও ’২৪ আছে। আমাদের অনেক ফাউন্ডিং ফাদারস রয়েছেন। তাদের লড়াইয়ের ফলে আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি। শেখ মুজিবুর রহমান অবশ্যই জাতির জনক না। এই ভূখণ্ডে অনেকেরই ভূমিকা রয়েছে, লড়াই রয়েছে। ইতিহাসের বহুমুখিতা রয়েছে। আওয়ামী লীগ মওলানা ভাসানীর অবদানকে অস্বীকার করেছে। তাই এখন সময় এসেছে সবার ভূমিকা স্মরণ করার।
জাতীয় দিবসের তালিকা থেকে ৭ মার্চকে বাদ দেওয়া প্রসঙ্গে নাহিদ ইসলাম বলেন, ৭ মার্চ গুরুত্বপূর্ণ, তবে জাতীয় দিবস হওয়ার মতো না। আওয়ামী লীগ অনেক দিবসকে নষ্ট করে ফেলেছে।
তিনি আরও বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানের গুরুত্ব হিসেবে কোনো কোনো দিবস প্রতিষ্ঠিত করা হতে পারে। আপাতত ৫ আগস্টকে প্রাধান্য দিয়ে একটি জাতীয় দিবস প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে।
মন্তব্য করুন