ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেছেন, এ দেশ আমাদের সকলের। দেশের ভাবমূর্তি রক্ষা ও উজ্জ্বল করার দায়িত্বও সকল ধর্মের মানুষের।
বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) বিকেলে শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে রাজধানীর বনানী পূজামণ্ডপ পরিদর্শন শেষে সমবেত ভক্ত ও পূজারিদের উদ্দেশে শুভেচ্ছা বক্তৃতায় উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।
ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, আমরা একটি পরিবারের মতো। আমাদের সকলের সাংবিধানিক অধিকার সমান। দেশের ভাবমূর্তি যাতে নষ্ট না হয় সেবিষয়ে আমাদেরকে সতর্ক ও দায়িত্বশীল হতে হবে।
ধর্ম উপদেষ্টা আরও বলেন, শারদীয় দুর্গোৎসব নির্বিঘ্ন করতে সকল ধরনের নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। পূজামণ্ডপের নিরাপত্তায় পুলিশ, আনসার-ভিডিপি, সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া, ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ চালু করা হয়েছে। কোনো দুর্বৃত্ত পূজামণ্ডপে হামলা কিংবা প্রতিমা ভাঙচুর করতে আসলে তাদেরকে আটক করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে সোপর্দ করতে হবে। সরকার প্রচলিত আইনে এই দুর্বৃত্তদেরকে সর্বোচ্চ শাস্তির বিধান করবে।
উপদেষ্টা আরও বলেন, আমাদের অন্তর সংকীর্ণ। আমরা সকলেই প্রচণ্ড রকম আত্মকেন্দ্রীক। আমরা অন্যদেরকে আমাদের অন্তরে স্থান দিতে পারি না। আমাদের অন্তরকে বড় এবং দৃষ্টিভঙ্গিকে প্রসারিত করতে হবে। আমাদের পারস্পরিক সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতি বাড়াতে হবে।
ড. খালিদ বলেন, আগের সরকারগুলো দুর্গাপূজাতে পূজামণ্ডপগুলোতে সহযোগিতা করার জন্য সাধারণত দুই কোটি টাকা বরাদ্দ দিত। কিন্তু বর্তমান সরকার এ বছর চার কোটি বরাদ্দ দিয়েছে। সনাতন ধর্মাবলম্বীরা যাতে ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য ও উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্যেদিয়ে শারদীয় দুর্গোৎসব উদযাপন করতে পারে সেবিষয়ে সরকার সম্ভাব্য সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।
ড. খালিদ আরও বলেন, বাংলাদেশ বহু ধর্ম ও গোত্রের মানুষের সমন্বয়ে একটি বৈচিত্র্যময় দেশ। একটি বাগানে নানা প্রজাতির ফুল থাকলে বাগানটি যেমন দৃষ্টিনন্দন ও বৈচিত্র্যময় হয়ে উঠে, বাংলাদেশও ঠিক মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান, জৈন ও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সম্মিলনে বৈচিত্র্যময়। আমরা এই সৌন্দর্যকে লালন করতে চাই। আমরা পারস্পরিক সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতিকে দৃঢ় করতে চাই।
উপদেষ্টা বলেন, সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি। আমাদের সকলের অধিকার সমান। ধর্মচর্চা, ধর্ম পালন ও ধর্ম অনুশীলন আমাদের সাংবিধানিক অধিকার। এই অধিকার সমুন্নত রাখতে সরকার বদ্ধপরিকর।
এ সময় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন, ধর্মসচিব মু. আ. হামিদ জমাদ্দার, গুলশান বনানী পূজা ফাউন্ডেশনে সাধারণ সম্পাদক অসীম কুমার জোয়ার্দারসহ পূজা উদযাপন কমিটির নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন