ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর ভারতে পালিয়ে যায় আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা ও সাবেক মন্ত্রী। সম্প্রতি কয়েকজন মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের নেতাকে ভারতে ঘুরতে দেখা গেছে।
নেতা-মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে যেহেতু মামলা হয়েছে, তাদের ফেরত আনার কোনো উদ্যোগ নিয়েছেন কি না এমন প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন জানিয়েছেন, আদালত চাইলে ভারতে পালিয়ে যাওয়া আওয়ামী লীগের নেতা ও সাবেক মন্ত্রীদের ফেরত আনার উদ্যোগ নেওয়া হবে।
মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) দুপুরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
একইসঙ্গে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের মন্ত্রী ও নেতারা ভারতে ঘুরছে সেটি আপনারা পত্র-পত্রিকায় দেখেছেন বা জেনেছেন আমিও ঠিক ততটুকুই দেখেছি বা জেনেছি। এরচেয়ে বেশি কিছু আমি এ মুহূর্তে জানি না। যেহেতু তাদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হচ্ছে বা হয়েছে। আদালত থেকে যদি নির্দেশনা দেওয়া হয় তাদের হাজির করতে হবে অবশ্যই অন্তর্বর্তী সরকার তাদের ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করব।
ভারতে আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি-মন্ত্রীদের অবস্থান দেখা যাচ্ছে। তারা ট্রাভেল পাস ইস্যু করে অন্য দেশে চলে যাওয়ার চেষ্টা করছে। তাদের ট্রাভেল পাস ইস্যু করা হবে কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশের মিশন ট্রাভেল পাস ইস্যু করতে পারে শুধু দেশে ফেরার জন্য। অন্যকোনো দেশে যাওয়ার জন্য নয়। সেটার জন্য পাসপোর্ট লাগে, পাসপোর্ট তো ন্যাচারালি ইস্যু করা হবে না। তারা যদি বাংলাদেশে ফিরতে চায় তাহলে অবশ্যই তাদের ট্রাভেল পাস ইস্যু করা যেতে পারে এবং তারা দেশে ফিরে আসতে পারে। ট্রাভেল পাস শুধু ওয়ান ওয়ে টু বাংলাদেশ।
সম্প্রতি ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের একটি বক্তব্যের বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে প্রতিবাদ নোট দেওয়া হয়েছিল। ভারতের প্রধানমন্ত্রীও বর্তমান বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেছেন, যে বক্তব্যগুলো আপাত দৃষ্টিতে শোভন নয় দেশের জন্য। সে বিষয়ে দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নীরব কেন? এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আমার মনে হয় এ ধরনের বক্তব্যের প্রতিবাদে যে বক্তব্য দিয়েছি সেটাই আপাতত যথেষ্ট। দেখা যাক পরিস্থিতি কী দাঁড়ায়। তাদের তো সামনে নির্বাচন আছে।
সরকার পতনের পর বাংলাদেশের রাজনীতিকসহ কারা দেশ ছেড়েছে, এমন কোনো তালিকা আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার কাছে এমন কোনো তালিকা নেই। তবে যদি মনে হয় এ ধরনের তালিকা করা প্রয়োজন আমাদের, তাহলে আমরা চাইতে পারি।
সম্প্রতি ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মাধ্যমে প্রচার হয়, শেখ হাসিনা ভারত থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতে (ইউএই) চলে গেছেন। এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, ভারত ও ইউএই দুই দেশেই সরকারিভাবে শেখ হাসিনার অবস্থানের বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
মন্তব্য করুন