প্লট বরাদ্দে কোটা প্রথা বাতিলের আহ্বান জানিয়েছেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান।
সোমবার (৭ অক্টোবর) রাজউক অডিটরিয়ামে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় আয়োজিত বিশ্ব বসতি দিবসের আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, এই কোটা, সেই কোটার নামে অনেক ফ্যাসিটিলিজ ধরে রাখা হয়েছে। কোটার কারণে আমরা এতগুলো প্লট নিব। সব কোটা উঠিয়ে দেন। জনগণের জন্য উন্মুক্ত করে দেন না কেন? সব কোটা উঠিয়ে কেন লটারির মাধ্যমে ঢাকা শহরে জমি দেওয়া হয় না? এই ফ্যাসিলিটিজগুলো বন্ধ করে দিতে হবে। তরুণদের এগিয়ে নিয়ে আসার পথ করে দিতে হবে। আমরা তো দরজাটা বন্ধ করে রাখি, যেন তারা আসতে না পারে। এই দরজাগুলো খুলে দিতে হবে বাংলাদেশের মানুষের জন্য, তরুণদের জন্য।
আদিলুর রহমান খান বলেন, যেদিকে তাকাবেন, দেখবেন শহরটা নোংরা হয়ে আছে। ঢাকা শহরে নিঃশ্বাস নেওয়ার জন্য গাছ নেই। প্রায় সব গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। ঢাকা শহর কংক্রিটের শহর হয়ে গেছে। এখানে গরিবের আবাসনের ব্যবস্থাটাও নাই। এই শহরটাকে আমরা বদলে দিতে পারব কিনা, এটা আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জ। তবে আমরা এই ঢাকা শহরটাকে বদলে দিতে চাই।
গৃহায়ন ও গণপূর্ত উপদেষ্টা বলেন, আমরা যদি তরুণদের সম্পৃক্ত করে নগর উন্নয়নের ক্ষেত্রে পরিকল্পনা নিতে চাই, তাহলে এটা এখনই শুরু করা দরকার। কারণ পরে করতে গেলে অনেক দেরি হয়ে যাবে। ব্যাপক সংস্কারের কথা বলা হচ্ছে। আমরা আমাদের যেটুকু সময় পাব, আমরা সংস্কারটা শুরু করে দিয়ে যাব। এটাই আমাদের উদ্দেশ্য এবং সেখানে ব্যাপক পরিবর্তন লাগবে মাইন্ডসেটের, মন্ত্রণালয় এবং রাজউকসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ঢাকাকে বাসযোগ্য করতে নির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা দরকার। ঢাকার জন্য একটি নগর দর্শন তৈরি করা জরুরি। শুধু মেগা প্রজেক্ট করলেই হবে না, সবুজায়ন বাড়াতে হবে। উন্মুক্ত জায়গা, বসার স্থান এবং তরুণদের খেলাধুলার সুযোগ থাকতে হবে।
ইউএন রেসিডেন্ট কো-অর্ডিনেটর ইন বাংলাদেশ মিজ গোয়েন লুইস বলেন, টেকসই ও নিরাপদ নগরের জন্য তরুণদের সম্পৃক্ততা জরুরি। এবারের বিশ্ব বসতি দিবসের প্রতিপাদ্য বাংলাদেশের জন্য খুবই মানানসই।
সভাপতির বক্তব্যে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. হামিদুর রহমান খান বলেন, ঢাকাকে বাসযোগ্য করার জন্য মন্ত্রণালয় ও রাজউক কাজ করছে। পুরান ঢাকাকে নিয়ে অনেক পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। হাজারীবাগের রিলোকেশন ও রিজেনারশনের জন্য প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। পুরান ঢাকায় ক্লাস্টারভিত্তিক ডেভেলপমেন্টের জন্য কাজ শুরু করেছি। এগুলো বাস্তবায়িত হলে ঢাকার পরিবেশের অনেক পরিবর্তন হবে।
গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. হামিদুর রহমান খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, ইউএন রেসিডেন্ট কো-অর্ডিনেটর ইন বাংলাদেশ মিজ গোয়েন লুইস, রাজউক চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সিদ্দিকুর রহমান সরকার প্রমুখ বক্তব্য দেন।
মন্তব্য করুন