কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৫ অক্টোবর ২০২৪, ০৮:১৩ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

অন্তর্বর্তী সরকারের ‘সুশীলতা’ দেখতে আমরা প্রস্তুত নই : সারজিস

সমন্বয়ক সারজিস আলম ও হাসনাত আব্দুল্লাহ। ছবি : কালবেলা
সমন্বয়ক সারজিস আলম ও হাসনাত আব্দুল্লাহ। ছবি : কালবেলা

আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন বিগত সরকারের সময় নানা অপকর্মে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষেত্রে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার ‘সুশীলতা’ দেখাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির সমন্বয়ক সারজিস আলম।

শনিবার (৫ অক্টোবর) সকালে রাজধানীর মহাখালী ডিওএইচএস এলাকার রাওয়া ক্লাব অডিটোরিয়ামের ঈগল হলে আয়োজিত ‘বৈষম্যমুক্ত সশস্ত্র বাহিনী-বাংলাদেশ ২.০ বিনির্মাণ প্রয়োজনীয় রূপরেখা’- শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘আপনারা আজ অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা কিংবা উপদেষ্টা হয়েছেন হাজার হাজার জীবনের রক্তের ওপর দিয়ে; অর্ধলক্ষ ভাইবোন রক্ত দিয়েছেন। অনেকে হাসপাতালে কাতরাচ্ছেন। রক্তের দাগ এখনো শুকায় নাই। আপনারা যদি ওই গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলোতে বসে এই সুশীলতা দেখান, সেটা দেখতে আমরা প্রস্তুত নই।

সারজিস আলম বলেন, আমাদের জায়গা থেকে স্পষ্ট বার্তা, এই পুরো সিস্টেমটিকে আবার পচন ধরানোর জন্য ওই অল্প কিছু পচা মানুষই যথেষ্ট। আমরা পুরো পচা শরীরকে রেখে মাথা যদি ভালো একজনকে দিয়ে প্রতিস্থাপন করি। এরকম কোনো সিস্টেম নেই, ভালো মাথা দিয়ে বাকিটুকু ভালো হয়ে যাবে। বরং ওই পঁচা শরীর দিয়ে মাথাটুকু পচার সম্ভাবনাই সবচেয়ে বেশি। সেই জায়গা থেকে যাদের বিরুদ্ধে প্রত্যক্ষ প্রমাণগুলো রয়েছে, ডকুমেন্ট রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নিতে হবে।

ফ্যাসিস্টের দোসররা হুকুম দিয়ে ছাত্রলীগ-যুবলীগ-আওয়ামী লীগকে অবৈধ অস্ত্র সাপ্লাই দিয়ে মানুষকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে জানিয়ে তিনি বলেন, সেই দোসররা এখনো হয় দেশের ভেতরে আছে, নয়তো দেশের বাইরে পালিয়ে যাচ্ছে। তারা যে পালাতে পারছে, তাদের সে ইনফরমেশনটিতো অবশ্যই গোয়েন্দা সংস্থাসদস্যরা সরকারের কাছে পৌঁছে দেওয়ার কথা ছিল।

তিনি বলেন, এখানে দুটো জিনিস হতে পারে হয় তারা তথ্য দিচ্ছে না, তারমানে ওই দোসরদের রক্ত তার ধমনীতে প্রবাহিত হচ্ছে। তাহলে তাদের ছাঁটাই করতে হবে, ব্যবস্থা নিতে হবে। আরেকটা সিনারিও হতে পারে, তারা তথ্য দিচ্ছে, আপনারা কাজ করতে পারছেন না। তাহলে আপনারা অযোগ্য, আপনারা দায়িত্ব ছেড়ে দেন।

সারজিস বলেন, আপনারা ওই গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলোতে বসে দেশের ছাত্র-জনতার ত্যাগের সঙ্গে বর্তমানে যে সুশীলতা দেখানো হচ্ছে, নিউট্রাল ভূমিকা দেখানো হচ্ছে এটা আপনারা আমাদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করছেন।

যারা ক্ষমতায় আছে তাদের আর বিশ্বাস করতে চাইনা বলে মন্তব্য করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আরেক সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ। তিনি বলেন, আমরা ট্রমার মধ্যে রয়েছি, যারা ক্ষমতায় আছে এবং যারা ক্ষমতার কাছাকাছি আছে আমরা কাউকে আর বিশ্বাস করতে চাইনা। আমরা যেহেতু ইতিহাসের প্রতিটি স্তরে স্তরে প্রতারিত হয়েছি। এ কারণে ক্ষমতায় যারা রয়েছে তাদের থেকেও আমরা আশা হারিয়ে পেলি। এ কারণে অন্তর্বর্তী সরকারে যারা রয়েছে আমরা তাদেরকে আহ্বান জানাবো এটা যে একটা বিপ্লবী সরকার এটার চেতনা আপনারা ধারন করুন।

তিনি বলেন, সিদ্ধান্তগুলো যেন দ্রুত হয়, সিদ্ধান্তগুলো যদি আপনারা সংবিধান আর নিয়মের বেড়াজালে রেখে দেন আমরা আশাহত হবো। সেজন্য আমরা আপনাদের কাছে প্রত্যাশা করবো বিভিন্ন কমিশন গঠন করে দিয়ে যারা বঞ্চিত ছিল তাদেরকে কীভাবে পুনর্বাসন করবেন।

আলোচনায় হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, গত ৫ অগস্টের পরে এ সরকারের উচিৎ ছিল কিছু স্টেপ নেওয়া যেগুলো আমাদের কনফিডেন্স বোস্ট করবে। এ সরকার হয়তো ভুলে গিয়েছে, এটা সরকার বিপ্লবী সরকার। আমরা তাদের পদক্ষেপের মধ্যে এখনও এই জিনিসটি বুঝতেই পারি না বা তারা নিজেরাই বুঝতে পারেনা, তারা একটি বিপ্লবী সরকার।

তিনি বলেন, এ সরকারে যারা রয়েছেন তাদেরকে অনুধাবন করতে হবে এ সরকার কোনো সংবিধান-নিয়ম মেনে আসেনি। সুতরাং ফ্যাসিবাদ ব্যবস্থা বিলোপ করার জন্য সংবিধানের কোনো নিয়মের দোহাই দিলে তারা পুরো জাতিকে আবার হতাশ করবে। এই দুই মাসে আমরা প্রত্যাশিত কোনো ধরনের স্টেপ দেখিনি, যার মধ্য দিয়ে প্রমাণ হয় এই সরকার বিপ্লবী সরকার।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

বেসিস ডিজিটাল মার্কেটিং স্ট্যান্ডিং কমিটির দ্বিতীয় সভা অনুষ্ঠিত

নেতাদের বাঁচার উপায় বাতলে দিলেন তারেক রহমান

গল্পে গল্পে পাপনকে খোঁচা ফারুকের

পাকিস্তানে কাল আরেক অভ্যুত্থান হবে?

ছাত্র আন্দোলনে ‘২৮ রাউন্ড গুলি’ করা সেই তৌহিদ গ্রেপ্তার  

‘অনন্যা সাহিত্য পুরস্কার ১৪৩১’ পেলেন নূরে জান্নাত ও নুসরাত নুসিন

আড়াই কোটি টাকা আত্মসাৎসহ নানা অভিযোগে সেই অধ্যক্ষ বরখাস্ত

ঢাকাবাসীকে যে কোনো উপায়ে নিরাপদ রাখতে হবে : ডিএমপি কমিশনার

অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে ডাক্তার দেখাতে গিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীর হাতে পিটুনি

মানসিক ট্রমায় ইসরায়েলি সেনাদের আত্মহত্যা

১০

৪৯ দিনে হাফেজ হওয়া সেই হাবিবুরের ইচ্ছাপূরণ করলেন আহমাদুল্লাহ

১১

কপ২৯ জলবায়ু সম্মেলন : প্রতিশ্রুতি বনাম বাস্তবতা

১২

দাদনের টাকা দিতে না পারায় গরু নিয়ে গেলেন শ্রমিক নেতা

১৩

‘আ.লীগ সাধারণ মানুষের পেটে লাথি মেরে নিজেদের ভাগ্য গড়েছে’

১৪

পরিচালক শাহ আলম মণ্ডল আর নেই

১৫

ডায়াবেটিসের রোগীরা কি কুমড়া খেতে পারবেন? 

১৬

পিকনিকের বাস বিদ্যুতায়িত হয়ে ৩ শিক্ষার্থী নিহত, শিবিরের শোক

১৭

পর্যটন শিল্পের বিকাশে অবিলম্বে কমিশন গঠন করুন : এবি পার্টি 

১৮

এবতেদায়ি মাদ্রাসার শিক্ষকদের যৌক্তিক দাবির সঙ্গে ধর্ম উপদেষ্টা একমত

১৯

ডেঙ্গুতে একদিনে আরও ১০ জনের মৃত্যু

২০
X