বর্ষা মৌসুমের প্রায় শেষের দিকে সারাদেশে বৃষ্টিপাত হচ্ছে। বিরতিহীন এ বৃষ্টিপাত ছাড়াও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল দেশের অনেক জায়গা পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এতে আকস্মিক বন্যার আশঙ্কাও করা হচ্ছে। কিন্তু এর পেছনের কারণ কী? কী বলছে আবহাওয়া অফিস?
এ বিষয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, দেশে মৌসুমি বায়ু সক্রিয় আছে। সেই সঙ্গে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপ সৃষ্টিরও আভাস রয়েছে। এর প্রভাবে কয়েক দিন ধরে রাজধানীসহ সারাদেশে থেমে থেমে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর আরও জানায়, বৃষ্টির এ ধারা ১১ অক্টোবর পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে পাশাপাশি ভারতের মেঘালয় রাজ্য থেকে নেমে আসা বৃষ্টির পানি দেশের ময়মনসিংহ বিভাগের জেলাগুলোতে বন্যা পরিস্থিতি অবনতির আশঙ্কা করা হচ্ছে।
শুক্রবার (৪ অক্টোবর) আবহাওয়া অধিদপ্তরের এ পূর্বাভাসে এ তথ্য জানানো হয়।
বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে আবহাওয়াবিদ ও কানাডার সাসকাচোয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডি গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ বলেন, ময়মনসিংহ বিভাগের শেরপুর ও নেত্রকোনার ভারতীয় সীমান্তবর্তী উপজেলাগুলোতে ভারি বৃষ্টির আশঙ্কা করা যাচ্ছে।
তিনি বলেন, পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয় যে এলাকাটিতে সেটি কিন্তু আমাদের পাশের দেশ ভারতের মেঘালয় রাজ্যে। মেঘালয় পর্বতের মধ্যে সবচেয়ে উঁচু পর্বতগুলোর মধ্যে একটি ‘চোখপট’ নামক স্থান। সম্প্রতি এই স্থানেই সবচেয়ে ভারি বৃষ্টি হচ্ছে। এই স্থানটি শেরপুর জেলার বিপরীতে। ফলে এখানে যে ভারি বৃষ্টি হচ্ছে, তা দ্রুত নেমে আসছে শেরপুরের নদীগুলোতে পাহাড়ি ঢল আকারে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ শাহিনুল ইসলাম বলেন, মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশ থেকে বিদায় নিচ্ছে। এ সময়ে এটি শক্তিশালী আচরণ করে এবং প্রচুর বৃষ্টি ঝরায়।
এদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, মৌসুমি বায়ুর অক্ষ বিহার, পশ্চিমবঙ্গ হয়ে বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চল পেরিয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত এবং এর একটি অংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত প্রসারিত হয়েছে। মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরের ওপর প্রবল অবস্থায় রয়েছে।
আবহাওয়া অফিস জানায়, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বাংলাদেশ ও উত্তর বঙ্গোপসাগরে একটি লঘুচাপের সৃষ্টি হতে পারে। লঘুচাপ ও স্বাভাবিকের চেয়ে উঁচু জোয়ারের আশঙ্কায় দেশের সব সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। গভীর সাগরে অবস্থানরত নৌযানগুলোকে উপকূলের কাছাকাছি নিরাপদ স্থানে থাকতে বলা হয়েছে।
মন্তব্য করুন