দেশের সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজার পুণ্যলগ্নের শুরু হলো মহালয়া উদযাপনের মাধ্যমে। বুধবার (২ অক্টোবর) গুলশান বনানী সার্বজনীন পূজা ফাউন্ডেশন উৎসব মুখর পরিবেশে মহালয়া উদযাপনের মাধ্যমে শারদীয় দুর্গোৎসবের আনুষ্ঠানিক সূচনা করে।
পুরাণ মতে, এদিন দেবী দুর্গার আবির্ভাব ঘটে। এদিন থেকেই দুর্গাপূজার দিন গণনা শুরু হয়। মহালয়া মানেই আর ৬ দিনের প্রতীক্ষা মায়ের পূজার। আর এই দিনেই দেবীর চক্ষুদান করা হয়।
আগামী ৯ অক্টোবর থেকে শুরু হবে এ বছরের দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা, ওই দিন মহাষষ্ঠী। পরদিন মহাসপ্তমী। ১৩ অক্টোবর দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মাধ্যমে শেষ হবে দুর্গোৎসব।
হিন্দু বিশ্বাস অনুযায়ী, এবারে দেবী দুর্গা মর্ত্যে আসছেন দোলায় চেপে, ফিরবেন গজের পিঠে চড়ে। শাস্ত্র বলছে, ‘রবৌ সোমে গজরূঢ়া, ঘোটকে শনি ভৌময়ৌঃ। দোলায়ঞ্চ গুরৌ শুক্রে, নৌকায়ং বুধবাসরে।’ অর্থাৎ দুর্গার গমনাগমন যদি রবি বা সোমবার হয়, তাহলে তার বাহন হয় গজ বা হাতি। আবার শনি বা মঙ্গলবার হলে তিনি চড়েন ঘোটকে বা ঘোড়ায়। কিন্তু বৃহস্পতি বা শুক্রবার যদি দুর্গার গমনাগমন ঘটে, তাহলে তিনি দোলায় বা পালকিতে যাতায়াত করেন। আর সেটা বুধবার হলে তার বাহন হয় নৌকা। সপ্তমী এবার বৃহস্পতিবার পড়ায় দুর্গা আসবেন পালকিতে চড়ে, আর রোববার দশমীতে তিনি কৈলাসে দেবালয়ে ফিরবেন হাতির পিঠে চেপে।
হিন্দু বিশ্বাস অনুযায়ী, জীবিত ব্যক্তির পূর্বের তিন পুরুষ পর্যন্ত পিতৃলোক বা যমলোকে বাস করেন। আর এই পিতৃলোকের অবস্থান স্বর্গ ও মর্ত্যের মাঝামাঝি স্থানে। পিতৃলোকের শাসক মৃত্যু দেবতা যম। তিনি সদ্য মৃত ব্যক্তির আত্মাকে মর্ত্য থেকে পিতৃলোকে নিয়ে যান। এরপর পরের প্রজন্মের একজনের মৃত্যু হলে আগের প্রজন্মের একজন পিতৃলোক ছেড়ে স্বর্গে গমন করেন। একই সঙ্গে পরমাত্মায় বা ঈশ্বরে বিলীন হন। এ কারণে মহালয়ায় হিন্দুরা তাদের পূর্বে মারা যাওয়া তিন প্রজন্মের ব্যক্তিদের স্মরণ বা তর্পণ করে থাকেন। এ দিন শ্রদ্ধানুষ্ঠানের মাধ্যমে তাদের আত্মার শান্তি কামনা করে অঞ্জলি দেন। তর্পণের মাধ্যমে পিতৃপক্ষের অবসান ঘটে, শুরু হয় দেবীপক্ষের। ঘট স্থাপনের পর নানা স্তব-স্তুতিতে দেবীকে মর্তে আহ্বান জানানো হয়।
মন্তব্য করুন