বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের গৌরবময় ইতিহাসের চেতনা সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে চলচ্চিত্র নির্মাণে অনেক অখ্যাত অভিনেতাদের সুযোগ দেওয়া হয়েছে। এসব অভিনেতাকে দিয়ে নির্মিত চলচ্চিত্রের পেছনে মন্ত্রণালয়ের খরচ হয়েছে প্রায় ২৪ কোটি টাকা।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মাণ প্রকল্পের মাধ্যমে এসব অর্থ খরচ করেছে। এই প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছিল ২৩ কোটি ৪৯ লাখ টাকা।
তথ্য বলছে, ইতোমধ্যে এই চলচ্চিত্র নির্মাণকাজ শেষের দিকে। কিন্তু বিপুল পরিমাণ টাকা ব্যয়ে তৈরি এই চলচ্চিত্র কোনো সাড়া জাগাতে পারেনি।
মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, চলচ্চিত্র নির্মাণে বিপুল ব্যয় দেখানো হলেও আদতে এই চলচ্চিত্র সম্পর্কে জানেই না সাধারণ মানুষ। কারণ চলচ্চিত্রের পরিচালক থেকে শুরু করে যেসব অভিনেতা-অভিনেত্রীকে চিত্রায়নে নেওয়া হয়েছে, তারা কেউই শীর্ষ চলচ্চিত্র তারকা নয়। এ ছাড়া প্রকল্প হাতে নেওয়ার পর থেকেই একের পর এক দুর্নীতির তথ্য সামনে এসেছে। এমন অভিযোগ তুলেছিলেন শীর্ষ চলচ্চিত্র সমালোচকরাও।
তথ্য বলছে, অপারেশন জ্যাকপট নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাণে প্রথম উদ্যোগ নিয়েছিল নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়। প্রায় আড়াই বছর ধরে নির্মাতা গিয়াসউদ্দিন সেলিম চিত্রনাট্য তৈরি করেন। পরে এই চলচ্চিত্রটির নির্মাণের দায়িত্ব পড়ে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ওপর। তখন সিনেমাটি নির্মাণের কাজটি পায় কিবরিয়া ফিল্মস। বাদ পড়েন গিয়াসউদ্দিন সেলিম প্রমুখ।
এদিকে গত সাত বছরে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় অন্তত ১০টি প্রকল্প হাতে নিয়েছে, যা টাকার অঙ্কে ছাড়িয়েছে ৫ হাজার কোটি টাকারও বেশি। তবে এর মধ্যে গত তিন বছরে নানা প্রকল্প দেখিয়ে ১৭৯ কোটি টাকা সরাসরি খরচ করা হয়েছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নের নামে। শুধু সভা-সেমিনার, স্কুল-কলেজ পরিদর্শন, টিভিসি, চলচ্চিত্র নির্মাণ, পত্রিকা-টেলিভিশনের বিজ্ঞাপন বাবদ ব্যয় করা হয়েছে এসব টাকা।
তবে তথ্য বলছে, নামকাওয়াস্তে এসব প্রকল্প বাস্তবায়ন দেখিয়ে অর্থ আত্মসাৎ করেছেন সংশ্লিষ্টরা। এই টাকা ব্যয়েও নেওয়া হয়েছে চতুরতার আশ্রয়। সাধারণত ৫০ কোটি টাকা পর্যন্ত যে কোনো প্রকল্প মন্ত্রণালয় নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় নিতে পারে। সে সুযোগ নিয়েই চারটি প্রকল্পে ভাগ করে এসব টাকা খরচ করা হয়েছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নের নামে।
মন্তব্য করুন